Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাত-পা বেঁধে ৯ বছরের শিশুকে নির্যাতন

মোবাইল চুরির অভিযোগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

মোবাইল চুরির অভিযোগে বরিশালের বাকেরগঞ্জে মোবাইল চুরির অভিযোগে জুঁই আক্তার (৯) নামে এক শিশুর হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া চুরির স্বীকারোক্তি আদায়ে নাক-মুখে পানি ঢালা হয়।

জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার শিশু জুঁই ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বশির হাওলাদারের মেয়ে। বশির হাওলাদার শ্রমিকের কাজ করেন। সংসারের অভাবে জুঁই তার নানা বাড়ি বাকেরগঞ্জ উপজেলার নীলগঞ্জে থেকে পড়ালেখা করে। সে নীলগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয়রা জানান, মোবাইল চুরির অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শিশু জুঁইয়ের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার সন্ধ্যায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
গতকাল বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে জুঁই। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন। চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ। ভয়ে ক্ষণে ক্ষণে শিউরে উঠছে সে।
জুঁই জানায়, নানা বাড়ির পাশের বাড়ির ওমর আলী সাঈদ তার মোবাইল খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরে ওমর আলী সাঈদ তাকে ডেকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে উপস্থিত হন সাঈদের চাচা হেলাল চৌকিদার, আলতাফ চৌকিদার, জাকির মীর ও শাহাবুদ্দিন সাগর। তারা আমার হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। যতবার ‘জানি না’ বলেছি, ততবার জোরে জোরে লাঠির আঘাত করা হয়। একপর্যায়ে তারা বাথরুমে নিয়ে আমার নাক-মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে পানি ঢালা শুরু করেন। আমি দম নিতে পারছিলাম না। আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল।
একপর্যায়ে তারা পানি ঢালা বন্ধ করেন। দম নিতে শুরু করলে কিছুক্ষণ পর আবার পানি ঢালা শুরু করেন। তারা বলেন, মোবাইল চুরির কথা স্বীকার না করলে আরও কঠোর শাস্তি দেবে। এভাবে অনেকক্ষণ চলতে থাকে। আমি তাদের বার বার বলেছি মোবাইল আমি দেখিনি। আমাকে ছেড়ে দেন। তবে তারা মারধর করেই গেছেন। পরে চিৎকার শুনে আমার খালা এসে উদ্ধার করেন।
জুঁইয়ের বাবা বশির হাওলাদার বলেন জুঁই নানা বাড়িতে থাকে। বৃহস্পতিবার রাতে জানতে পারি ওমর আলী সাঈদ ও তার স্বজনরা মেয়েকে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে হাত-পা বেঁধে পিটিয়েছে। শুনেছি হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনের দাম আড়াই হাজার টাকা। আমরা গরিব মানুষ। তারপর তারা বললে ধারদেনা করে টাকা দিতাম।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবুল কালাম জানান, এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে মামলা হয়েছে। আসামি ওমর আলী সাঈদ, সাঈদের চাচা হেলাল চৌকিদার ও শাহাবুদ্দিন সাগরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দুই আসামিকে গ্রেফতারে শনিবার দুপুরেও বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু তাদের পাওয়া যায়নি। তাদের ধরার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মোবাইল-চুরি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ