পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রায়হান হত্যা মামলায় আদালতে এখনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়নি গ্রেফতারকৃত ৪ পুলিশ সদস্য। এ নিয়ে শঙ্কা জানিয়ে রায়হানের মা সালমা বেগম বলেছেন, আমার নিরপরাধ ছেলেকে কে বা কারা, কি জন্য মেরেছে তা এখনও বেরিয়ে আসেনি। এ ঘটনা তদন্তে কোনো অবহেলা থাকলে কাউকে সিলেটবাসী ক্ষমা করবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। গতকাল (শনিবার) দুপুর ১২টার দিকে নগরের আখালিয়ার নেহারিপাড়াস্থ রায়হানের বাড়িতে পূর্ব নির্ধারিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এদিকে, আকবরকে পালাতে সহায়তাকারী সন্দেহে সিলেট জেলা পরিষদের এক সদস্য তামান্না আক্তার হেনাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। সে আকবার সহযোগী কথিত সাংবাদিক নোমানের ঘনিষ্ট বান্ধবী।
পরিবারের সংবাদ সম্মেলন : বৃহত্তর আখালিয়া (বারো হামছায়া) সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সালমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার দিন ঘর থেকে তার ছেলে বের হয়েছিল টি-শার্ট ও নীল রঙের প্যান্ট পরে। কিন্তু হাসপাতালে দেখা গেছে তার পরনে লাল রংয়ের একটি টি-শার্ট। বদলানো হয়েছে প্যান্টও। যেটা তার শরীরের চেয়েও ছিল অনেক ছোট। এটা কারা করেছে, তা জানেন না তিনি।
এছাড়া আমার ছেলের মোবাইলও ফোন ও মানিব্যাগ এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। মূলত তাকে নির্যাতনের সময় মূল আলামত পরনের কাপড় নষ্ট করা হয়েছে। এটা কারা করলো, প্রশ্ন রেখে সকল অপরাধীদের গ্রেফতার দাবি করেছেন তিনি। পাশাপাশি আকবরকে পালিয়ে যেতে সহায়তাকারী উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদেরও শনাক্ত করে গ্রেফতার দাবি জানিয়ে বলেন, আমি চাই, আমার ছেলের হত্যার সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক। তারা ৪ ঘণ্টার মধ্যেই মেরে ফেলেছে আমার ছেলেকে।
সালমা বেগম আরো বলেন, মামলার তদন্ত নিয়ে সন্দেহ পোষণ করি না। কেননা পুলিশের তৎপরতার কারণেই হত্যার মূল অভিযুক্ত পলাতক থাকা এসআই আকবর গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু আমার নিরপরাধ ছেলেকে কারা, কি জন্য মেরেছে এ বিষয়টি বেরিয়ে আসেনি এখনও। এএসআই আশেক এলাহিসহ অন্য পুলিশ সদস্যরাও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দেওয়ায় মামলার সঠিক বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত রায়হানের মা সালমা বেগম। তবে মূল আসামি আকবরকে গ্রেফতার করতে পারায় পুলিশকে ধন্যবাদ জানান তিনি। সেই সঙ্গে খাসিয়া সসম্প্রদায়সহ সীমান্ত এলাকার লোকজনের প্রতিও জ্ঞাপন করেন কৃতজ্ঞতা। একই সঙ্গে, সাংবাদিক ও এলাকাবাসীসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষ রায়হানের পরিবারের পক্ষে থাকায় তাদের প্রতিও জানান কৃতজ্ঞতা।
রায়হান হত্যার পর থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া বৃহত্তর আখালিয়া (বারো হামছায়া) সংগ্রাম পরিষদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান পরিষদের আহ্বায়ক সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রায়হান হত্যার ন্যায় বিচার প্রত্যাশী আমরা। এই মুহুর্তে আমাদের প্রত্যাশা সুষ্ঠু বিচার। যাতে অপরাধীরা পার না পায়। তাই হত্যাকান্ডের তদন্তে কোনো অবহেলা থাকলে সিলেটবাসী কাউকে ক্ষমা করবে না। রায়হান হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বে না এলাকাবাসী। সেই সময় পর্যন্ত সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, রায়হান হত্যার ঘটনায় আসামিরা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি না দিলেও আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী তিন পুলিশ সদস্য। সে কারণে এটার মূল গ্রাউন্ড মৃত্যুদন্ড, সাজা হবে, এমনটাই আমরা আশা করি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের উপস্থিত ছিলেন রায়হান হত্যা মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী প্যানেল ব্যারিস্টার ফয়েজ আহমদ, অ্যাডভোকেট তাজ উদ্দিন আহমদ, অ্যাডভোকেট ফয়েজ উদ্দিন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইলিয়াসুর রহমান ইলিয়াস, ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জগদীশ দাস ও রায়হানের মামাতো ভাই শওকত আলী প্রমুখ।
নজরদারিতে জেলা পরিষদ সদস্য তামান্না : কোম্পানীগঞ্জের মাজরগাঁয়ে হেনার বাড়ি হয়েই ১৪ অক্টোবর পাশ্ববর্তী দেশে পাড়ি জমাতে সমর্থ হন এস আই আকবর। এসময় আকবরকে সহযোগিতা করেন, হেনার স্বামী হেলাল ও স্থানীয় বরমসিদ্ধিপুর পাড়ার মাদক ব্যবসায়ী অপর হক হেলাল। ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর অন্যতম সহযোগী নোমান আত্মগোপন চলে যায়। তবে মাদক ব্যবসায়ী হেলাল আটক হন পুলিশের হাতে। এছাড়া সিলেট জেলা পরিষদ সদস্য তামান্না আক্তার হেনাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। এঘটনায় হেনা, হেনার স্বামী হেলাল ও তাদের ভাগ্না শাহীন এ ৩ জনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদও করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।