Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আগের মতো দেখা মেলে না অপরূপ কাশফুলের

প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আল আমিন মন্ডল, গাবতলী (বগুড়া) থেকে
গ্রাম-বাংলার প্রকৃতির অপরূপ শোভা ও সৌন্দর্যের অধিকারী কাশবন এখন আর চোখে পড়ে না। কালের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে কাশফুল। যুগ যুগ পেড়িয়ে গেলেও গ্রাম-বাংলার নদ-নদীর ধার, ঝোপ-ঝাড়, জঙ্গল, পুকুর, খাল-বিল, ঈদগাঁ মাঠ ও ফাঁকা জায়গায় পথচারীদের দৃষ্টি কাড়তে কাশফুলের হালকা বাতাস জেন দোলা দেয় সবার হৃদয়কে। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যেত কাশফুলের সৌন্দর্যে। মনটা বেশ খুশিতে থাকত। খোলা আকাশে উড়ে যেত নানা প্রজাতির পাখি। বহুযুগ থেকে বগুড়ার গাবতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় রহরহ কাশফুল ফুটলেও এখন আর চোখে পড়ে না চিরচেনা কাশফুলের এমন দৃশ্যে। ফলে অনেকে কাশফুলকে ভুলতে বসেছে। তবে উপজেলার রামেশ্বরপুর, কাগইল, সোনারায়, নেপালতলী, নাড়–য়ামালা এলাকায় কাশফুল ফুটলেও গত বছরে নেপালতলী ও সোনারায় এলাকায় কাশফুলের দৃশ্য চোখে পড়েছে। সে সময়ে একটি ঈদগাঁ মাঠে কাশফুল ফুটতে দেখে সাংবাদিক আল আমিন ম-লের মনটা নাড়া দেয়। সে তৎক্ষণিক ক্যামেরাবন্দি করেন কাশফুলের এমন দৃশ্যেকে। অন্যদিকে এবছর বিভিন্ন এলাকায় কাশফুল ফুটেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে রাস্তায় চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই রোধে রাস্তার দু’পার্শ্বে কাশফুল কেটে পরিষ্কার করা রয়েছে এমনটা জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল। তারা আরো জানান, কাশফুলসহ রাস্তার দু’পার্শ্বে জঙ্গল ও আগাছা পরিষ্কার থাকলে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও সড়ক দুর্ঘটনা কমে যাবে। এছাড়াও গ্রাম-বাংলার কাশফুল গাছ শুকিয়ে ঘরের বেড়া ও ছাউনি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। অল্পসংখ্যক কাশফুল চোখে পড়লেও চাহিদা রয়েছে কয়েকগুণ। এ গাছটির এতগুণ থাকার পরেও গাছ বা বাগান করাসহ সংরক্ষণ ও রক্ষায় কোনো উদ্যোগ নেই। কাগইল এলাকার কাশফুল বাগান মালিক মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, আমি কাশফুল থেকে যে পরিমাণ গাছ পাই সে গাছ পরিবারের কাজে ব্যবহারের পরও বাকি কাশফুলের গাছ শুকিয়ে বাজারে বিক্রি করে প্রতি বছর বেশ লাভবান হতে পেরেছি। প্রতিদিন কাশফুল বাগানে  বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখা যেত। পাখি ও ফুল দেখে মনটা ভালো থাকে। তবে এবছরে জায়গা না থাকায় কাশফুলের বাগান নেই। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি, নদ-নদী ভরাট, পতিত স্থান ও উঁচু জমি  হ্রাস পাওয়ায় কাশফুল কমে যাচ্ছে। ফলে প্রকৃতির অপরূপ শোভা দানকারী ও সৌন্দর্যের প্রতীক কাশবন (ফুল) এখন বিলুপ্তির পথে। গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহা. আহসান হাবিব জানান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষায় কাশফুলের অবদান রয়েছে। কাশফুল সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে ফলে সবার মন খুশি থাকে। এমনকি কাশফুল একটি গুরুত্বপূর্ণ গাছ বা বাগান। এ বিষয়ে গাবতলী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আ.জা.মু. আহসান শহীদ সরকার জানান, কাশফুল গ্রাম-বাংলার শোভাদানকারী প্রিয় ফুল। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দাবিদার কাশফুল। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সোহরাব হোসেন জানান, কাশফুল ফাঁকা স্থানে জন্ম নেয়। কাশফুলের গাছগুলো মানুষের জন্য খুব উপকারী। গাবতলী উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী হায়দার জানান, ব্যক্তি পর্যায়ে কাশবন বা কাশফুলের গাছ সংরক্ষণে কৃষকদের মাঝে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এমনকি কাশফুল বা বাগান ব্যক্তি, সংগঠন, সরকারি দফতরের বনবিভাগ ও বেসরকারি পর্যায়ে সংরক্ষণ করতে জোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আগের মতো দেখা মেলে না অপরূপ কাশফুলের
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ