নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মুজিববর্ষ ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ফুটবল সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়ে নেপালের বিপক্ষে মধুর প্রতিশোধ তুলে নিলো বাংলাদেশ। শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দুই প্রীতি ম্যাচের প্রথমটিতে বাংলাদেশ ২-০ গোলে নেপালকে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল। বিজয়ী দলের পক্ষে ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবন ও মাহবুবুর রহমান সুফিল একটি করে গোল করেন।
এই জয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে দীর্ঘ ৫ বছর পর নেপালের বিপক্ষে সফলতা পেল বাংলাদেশ। নেপালীদের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বশেষ জয়টি ছিল ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায়। সেটিও ছিল ফিফা প্রীতি ম্যাচ। তবে এর আগে ২০১৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপাল ২-০ গোলে হারিয়েছিল লাল-সবুজদের। ২০১৮ সালের সাফেও নেপালের বিপক্ষে একই ব্যবধানের হার ছিল বাংলাদেশের। এছাড়া গত বছর নেপাল সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসেও স্বাগতিক দলের কাছে ১-০ ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ অলিম্পিক দল। এবার ঘরের মাঠে কয়েক বছরের হারের প্রতিশোধই নিল জামাল ভূঁইয়া বাহিনী। করোনাকালে ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে’র শিষ্যরা হতাশ করেনি দেশের কোটি ফুটবলপ্রেমীকে। তারা নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেই জয় তুলে নিয়ে মাঠ ছাড়ে। ম্যাচ শুরু আগে মাঠে গা ঘেষে নয়, করোনাকালে জাতীয় সঙ্গীতের সময় ফুটবলাররা দাঁড়িয়েছিলেন তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে। ম্যাচ সম্প্রচারের জন্য মাঠে ড্রোন ব্যবহার করা হয়। করোনাকাল হলেও আন্তর্জাতিক এই ম্যাচের আবহ ছিল অনেকটাই ভিন্ন।
বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের ফিটনেস নিয়ে আগেই গ্যারান্টি দিয়েছিলেন ফিটনেস কোচ ইভান রাজলভ। নেপালের বিপক্ষে জয় তুলে নিতে প্রস্তুত বলে আগেই জানিয়েছিলেন প্রধান কোচ জেমি ডে। নিজেদের ফিটনেস লেভেল কতটা তা বুঝিয়ে দিলেন জামাল ভূঁইয়ারা। শিষ্যদের জয়ে স্বভাবতই খুশী গুরু জেমি ডে। ম্যাচ শেষে নিজের মুঠোফোনে তুলে নিচ্ছিলেন শিষ্যদের হাসিমাখা মুখ আর নেপালের ফুটবলারদের হতাশার ভিডিও চিত্র। প্রীতি ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে তারুণ্যেই আস্থা ছিল বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে’র। এ ম্যাচে তিনি দলের তরুণদের পরখ করে নিলেন। ফলে সেরা একাদশে জায়গা দেয়া হয় তরুণ ফুটবলারদেরই। নেপাল ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ফুটবল অভিষেক হয় গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো ও স্ট্রাইকার সুমন রেজার।
নেপালীদের আক্রমণ রুখতে স্বাগতিক দলের রক্ষণদূর্গ সামলাতে দেখা গেছে বিশ্বনাথ ঘোষ, রহমত মিয়া, তপু বর্মন ও রিয়াদুল হাসানকে। উইংয়ে ছিলেন মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও সাদ উদ্দিন। প্লেমেকার হিসেবে খেলেছেন ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবন। খেলায় কোচ জেমির নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন ফুটবলাররা।
শুক্রবার ম্যাচের শুরু থেকেই অতিথি দলকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিয়ে ম্যাচকে উপভোগ্য করে তোলে স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের মিডফিল্ডার ইব্রাহিম ও ফরোয়ার্ড সাদ উদ্দিনের আক্রমন রুখতেই ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় নেপালী ফুটবলারদের। প্রথমার্ধে তাদের একের পর এক আক্রমণে অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়ে হিমালয় কণ্যার দেশটি। ধারাবাহিক আক্রমণের মুখে ম্যাচের ১০ মিনিটে দর্শকদের উচ্ছ্বাসে ভাসান বাংলাদেশ দলের তারকা ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবন। এসময় ডানপ্রান্ত দিয়ে সাস উদ্দিন বাঁ পায়ে ক্রস নিলে জটলা থেকে বক্সে দাঁড়ানো নাবীব নেওয়াজ জীবন টোকা দিয়ে বল জালে পাঠান (১-০)। সন্ধ্যার নিরবতা মূহূর্তেই যেন ভেঙ্গে পড়ে দর্শকদের গগনবিদারী চিৎকারে। পিছিয়ে পড়ে কিছুটা ভরকে যায় নেপাল দল। ফলে আক্রমণের ধারা অব্যহত রাখে বাংলাদেশ। ম্যাচের ২১ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে জীবন ক্রস করলে নেপালের গোলরক্ষক ও অধিনায়ক কিরণ কুমার লিম্বু পাঞ্চ করে বল ফিরিয়ে দেন। ফিরতি বলে ইব্রাহিম হেড নিলে লিম্বু তা রক্ষা করেন কর্ণারের বিনিময়ে। ৫৮ মিনিটে জীবনকে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পড়িয়ে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশ দলপতি জামাল ভূঁইয়া। কিছুক্ষণ পর মাঠ ছেড়ে যান অভিষিক্ত স্ট্রাইকার সুমন রেজা। তার বদলী হিসেবে নামেন মাহবুবুর রহমান সুফিল। মাঠে নেমেই বাজিমাত করেন এই ফরোয়ার্ড। ৮০ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে একই বল নিয়ে বাঁ বায়ের দুর্দান্ত এক শটে পরাস্ত করেন নেপালী গোলরক্ষক কিরণ কুমার লিম্বুকে (২-০)। উল্লাসে ফেটে পড়ে গোটা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। আনন্দে ভাসে বাংলাদেশ শিবির। ম্যাচের বাকি সময় আর কোন অঘটন না ঘটায় শেষ পর্যন্ত দুই গোলের জয় পেয়ে মধুর প্রতিশোধ তৃুলে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। আগামী মঙ্গলবার একই সময় ও ভেন্যুতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।