Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মালয়েশিয়া থেকে আসছে ‘আইস’ মূলহোতাসহ গ্রেফতার ৬

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

একটি অভিজাত মাদকের নাম ‘আইস’। এই মাদকদ্রব্যটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। মাত্র ১০ গ্রাম আইসের দাম প্রায় এক লাখ টাকা। প্রতিবার দুই-তিন কণা সমপরিমাণ মাদক নিতে খরচ হয় প্রায় ১২ হাজার টাকা। এ কারণে আইসকে অভিজাতদের মাদক বলছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর ওই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন রাজধানীর গেন্ডারিয়া এলাকার বাসিন্দা স্বর্ণ ব্যবসায়ী চন্দন রায়। তিনি মালয়েশিয়া থেকে ‘আইস’ এনে বাংলাদেশে বাজার তৈরির চেষ্টা করছিলেন।

গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি জানান, গত বুধবার রাতে গেন্ডারিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে চন্দন রায়কে (২৭) গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যানুযায়ী গুলশান, বনানী ও ভাটারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৬০০ গ্রাম আইস উদ্ধার করা হয়, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৬০ লাখ টাকা।
গ্রেফতারকৃত বাকিরা হলেন- সিরাজ (৫২), অভি (৪৮), জুয়েল (৫০), রুবায়েত (৩০) ও ক্যানি (৩৬)। তারা নতুন এই মাদক বিক্রয়, সেবন ও পরিবহনের সঙ্গে জড়িত।
হাফিজ আক্তার জানান, আইস বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একেবারেই নতুন মাদক। যা সেবু, ক্রিস্টাল ম্যাথ, ডি-ম্যাথসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত। এটি ক্ষুদ্র দানাদার জাতীয় মাদক, যা ক্রিস্টাল আকারে দেশে আনা হয়। আইসের কেমিক্যাল নাম মেথান ফিটামিন, যার উৎপত্তিস্থল অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও চীন।
তিনি আরো জানান, নতুন এই মাদক ইয়াবার চেয়েও ৫০-১০০ গুণ বেশি উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এটি মূলত স্নায়ু উত্তেজক মাদক, যা গ্রহনের ফলে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় হরমনের উত্তেজনা এক হাজার গুণ বেড়ে যায়। ফলে ব্রেন স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটির তীব্র রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ধীরে ধীরে দাঁতও ক্ষয়ে যায়। এছাড়া এটি গ্রহণে স্থায়ী হ্যালুসিনেশন সৃষ্টি হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিডির ওই কর্মকর্তা জানান, আইস ধূমপান আকারে, ইনজেক্ট করে এবং ট্যাবলেট হিসেবে তিনটি ফরমেশনে নেয়া যায়। তবে বাংলাদেশে ধূমপান আকারে ব্যবহারের বিষয়টি দেখা গেছে। এক্ষেত্রে কাঁচের পাইপের দিয়ে তৈরি বিশেষ পাত্র ‘বং’ ব্যবহার করা হয়। এই চক্রের মূলহোতা চন্দন রায় উল্লেখ করে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, তার প্রবাসী আত্মীয় শংকর বিশ্বাসের মাধ্যমে মালয়েশিয়া থেকে আইস ব্যাগেজে করে বিমানযোগে দেশে আনতেন। আইস মূলত সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণির মাদক। মাত্র দুই-তিন কণার এই মাদক একবার নিতে প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। উচ্চবিত্তদের বিভিন্ন পার্টি বা ধনাঢ্য ব্যক্তির সন্তানদের টার্গেট করে আইসের বাজার সৃষ্টির চেষ্টা করছিল এই চক্রটি।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, চন্দন রায় পেশায় একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তবে তিনি নতুন এই মাদক আমদানি করে অভিজাত শ্রেণির মধ্যে পরিচিত করাচ্ছিলেন। আমরা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছি। মাদকের উৎস, আনার প্রক্রিয়া, অর্থায়ন এবং দেশের অন্যান্য চক্রের বিষয়গুলো তদন্তে উঠে আসবে। স্বর্ণ ব্যবসায়ী চন্দন রায়ের বিষয়েও তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রেফতার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ