বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রূপগঞ্জের নোয়াপাড়া এলাকার জামদানির সুনাম দেশের বাইরেও রয়েছে। জামদানি বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জামদানি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকার কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। রূপগঞ্জ অঞ্চলের জমির দাম কাঠাপ্রতি অনেক বেশি হলেও সরকার তাঁতিদের ভর্তুকি দিয়ে জমি কমমূল্যে প্রদান করে। কিন্তু বাঙালির এ ঐতিহ্যবাহী জামদানি শিল্প ক্রমেই ধ্বংসের দিকে ছুটে চলছে। স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি ও দালালদের দৌরাত্ম্যের কারণে তাঁতিদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি প্লট ক্রমেই চলে যাচ্ছে যাদের তাঁতশিল্পের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই এমন লোকজনের হাতে। নোয়াপাড়া বিসিক শিল্প নগরীতে নিরীহ তাঁতিদের প্লট নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির হিড়িক পড়েছে।
নোয়াপাড়া বিসিক শিল্প নগরী অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জামদানি পল্লীকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকার ১৯৯৯ সালে রূপগঞ্জ উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকায় ২০ একর জমিতে ৪১৬টি প্লট করে তাঁতিদের পুনর্বাসন করে। ২০০১ সালে এককালীন ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা ও কিস্তিতে নিলে সর্বনিম্ন ৪০ হাজার টাকা ডাউন পেমেন্টের মাধ্যমে প্রকৃত তাঁতিদের কাছে হস্তান্তর করা হয় ৪০৭টি প্লট। পাঁচ বছরের মধ্যে ১০ কিস্তিতে প্লটগুলোর কিস্তি পরিশোধ করতে বলা হয়। বাকি ৯টি প্লট সংরক্ষিত রাখা হয় পল্লীবিদ্যুৎ ও পাম্প হাউজের জন্য। কিন্তু প্লট বরাদ্দের পর থেকে প্রকৃত তাঁতিদের সরলতার সুযোগ নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি ও দালালরা প্রভাব খাটিয়ে স্বল্প টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে প্লট ক্রয়-বিক্রয় করছে। এতে করে যাদের সঙ্গে জামদানি শিল্প বা তাঁতের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই তারা প্লট ভোগ করছে। নিয়ম অনুযায়ী কেউ যদি সরকারের দেয়া প্লট বিক্রি অথবা হস্তান্তর করতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই বিসিক শিল্প নগরী অফিসে জানাতে হবে। প্লট বিক্রির সময় বিসিক কর্তৃপক্ষ দেখবে যার কাছে প্লট বিক্রি করা হচ্ছে তিনি প্রকৃত তাঁতি কি না। প্রকৃত তাঁতি ছাড়া বিসিকে কেউ প্লট ক্রয় করতে পারবে না বলে জানান বিসিক কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রভাবশালী নেতাকর্মী ও দালালদের সমন্বয়ে কখনো হুমকি ধামকি অথবা সরলতার সুযোগে প্রকৃত তাঁতিদের কাছ থেকে অবৈধভাবে প্লট কেনাবেচা চলছে দেদার। বিসিকে প্রকৃত তাঁতিদের জন্য বরাদ্দকৃত ৪০৭টি প্লটের মাঝে ২২১টি প্লটই বিসিক কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে অবৈধভাবে কেনা হয়েছে। যার সিংহভাগ প্লটেই তাঁতের কোনো কার্যক্রম চলে না। আবার কেউ প্লট কিনে ঘর বানিয়ে ভাড়া দিয়ে রেখেছে। মোট ২২৬টি প্লটে ভাড়া দিয়ে রাখা হয়েছে, যেগুলোতে কোনো প্রকার জামদানি বুনন কার্যক্রম চলে না। যাও কয়েকটিতে চলে সেগুলোও লোক দেখানো। এসব কারণে প্রকৃত তাঁতিরা জামদানি শিল্প থেকে দূরে চলে যাচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে রূপগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জামদানি পল্লী ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে নোয়াপাড়া বিসিক শিল্প নগরীর প্রধান কর্মকর্তা শাহজাহান আলী দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসের জরিপ অনুযায়ী ৪০৭টির মাঝে ২০১টি প্লট বিসিক কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে অবৈধভাবে কেনাবেচা হয়েছে। এছাড়া বেশিরভাগ প্লটের কিস্তি পরিশোধ করা হয়নি। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।