বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সিলেটে রায়হান মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ হচ্ছে বলে রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে হাইকোর্টকে। আজ সোমবার (২ নভেম্বর) হাইকোর্টর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল বেঞ্চকে জানানো হয় এ তথ্য। এছাড়া এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি আগামী ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেন আদালত। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী। অন্যদিকে ছিলেন রিট আবেদনকারী আইনজীবী সৈয়দ ফজলে এলাহী।
সোমবার আদালতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমাকে জানিয়েছেন দুই সপ্তাহের মধ্যে ওনারা (তদন্তকারী কর্মকর্তা) চার্জশিট দিয়ে দেবেন। অ্যাজ আর্লি অ্যাজ পসিবল টাইমের মধ্যে দিয়ে দেবেন। এরপর আদালত মুলতবি করেন। এর আগে ওই ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত এবং ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট করেন আইনজীবী সৈয়দ ফজলে এলাহী। এছাড়া নিরপেক্ষ তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে আরেকটি রিট করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ। সেটি বিচারাধীন অন্য বেঞ্চে। ওই রিটে পক্ষভুক্ত হতে রোববার আবেদন করেছেন রায়হানের মা সালমা বেগম।
সিলেট নগরীর বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর হোসেনের নেতৃত্বে নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর এই ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় গণ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত। পরে প্রকাশিত সেসব সংবাদ সংযুক্ত করে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ ফজলে এলাহী।
পুলিশ হেফাজতে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে গত ১২ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট আবেদন (রিট নম্বর-৭১৩২/২০২০) করেন ব্যারিস্টার ফয়েজ উদ্দিন আহমদ। রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, আইজিপি, সিলেটের পুলিশ কমিশনার, সিলেটের জেলা প্রশাসক, এসপি সহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। এই রিট আবেদনে নিজেকে আবেদনকারী হিসেবে বিবেচনা করতেই (পক্ষভুক্ত) হাইকোর্টে আবেদন দিয়েছেন রায়হানের মা সালমা বেগম। আদালত এ বিষয়ে সোমবার শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। রায়হানের মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে ওই রিট আবেদন করা হয়।
গত ১১ অক্টোবর রাতে সিলেটের আখালিয়া এলাকার যুবক রায়হান আহমদের মৃত্যুর আগে নগরীর বন্দরবাজার ফাঁড়ি ইনচার্জ আকবর হোসেনের নেতৃত্বে নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই রাতে রায়হানকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে পুলিশের কয়েকজন সদস্য। ফোনে পরিবারের সদস্যদের টাকা নিয়ে আসতে বলেন রায়হান। গত ১১ অক্টোবর সকালে ৫ হাজার টাকা নিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা থানায় গিয়ে জানতে পারেন, অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পরিবারের সদস্যরা সেখানে গিয়ে শুনতে পান রায়হানের মৃত্য হয়েছে। এনিয়ে গণমাধ্যম সোচ্চার হয়ে উঠে। পরে প্রকাশিত সেসব সংবাদ সংযুক্ত করে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। রিটে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং অভিযুক্ত এসআই আকবরকে দ্রুত গ্রেফতার করার নির্দেশনা চাওয়া হয়। এদিকে, সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় নির্যাতনের বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। নগরীর বন্দরবাজার ফাঁড়ি ইনচার্জ আকবর হোসেনের নেতৃত্বে এ নির্যাতন চালানো হয়। ইনচার্জসহ ৭ পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য মিলেছে। এ ঘটনায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)। আকবরসহ ৪ পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ৩ জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রায়হানের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে এসএমপির উপকমিশনার (ডিসি-উত্তর) আজবাহার আলী শেখের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির একটি সূত্র জানায়, দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বন্দর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ সে সময় দায়িত্বে থাকা ৭ পুলিশ সদস্যকে। ইনচার্জ আকবর প্রথমে রায়হানকে ফাঁড়িতে নেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। পরে সিলেট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত কমিটি। সেই ফুটেজ দেখানোর পর সবাই মুখ খুলতে শুরু করেন। তবে মূল অভিযুক্ত আকবর হোসেন ভূঁইয়া পালিয়ে গেছেন। রায়হান উদ্দিন সিলেট নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার রফিকুল ইসলামের পূত্র। তার প্রায় ৩ মাস বয়সী একটি কন্যা রয়েছে। নগরের রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে কাজ করতেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।