Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভুল ভিসেরা প্রতিবেদন মুক্তিযোদ্ধা হত্যা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ

গোপালগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০২০, ৯:২৭ এএম

ঘটনার সাথে ভিসেরা প্রতিবেদনের মিল না থাকায় মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলা মোড় নিচ্ছে অন্য দিকে । এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিরা কৌশলে হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার চেষ্টা করছেন। এতে মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা করছে । ময়নাতদন্তে ( ভিসেরা) প্রতিবেদন সঠিক না আসার কারনে এ অবস্থা সৃস্টি হয়েছে বলে মুক্তিযোদ্ধার পরিবার অভিযোগ করেছে ।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার পশারগাতি ইউনিয়নের কাউলদিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা নিহত সাহেব আলী খন্দকারের ছেলে উজ্জ্বল খন্দকার এ অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী অছিয়া বেগম ভিসেরা প্রতিবেদনে চিকিৎসকদের সঠিক মতামত প্রদানের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন ।
আবেদনে বলা হয়েছে, গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্য বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ফারুক আহমেদ , সঞ্জিব কুমার ধর ও হরিদাস রায় আসামীদের সাথে যোগসাযোশে এ কাজ করেছেন।
নিহত সাহেব আলীর ছেলে উজ্জ্বল খন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, আমার বাবা চলতি বছরের গত ১২ জুন গ্রামের বিবদমান দু’ পক্ষের দ্বন্দ সংঘাত মিমাংসার জন্য সালিশ বৈঠকে বসেন। ওই সময় এক পক্ষ উত্তেজিত হয়ে প্রতিপক্ষের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা আমার বাবার ওপর হামলা করে। তারা আমার বাবার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। তাকে মাটিতে ফেলে ২০/২৫ জনে লাথি দিয়ে ও পাড়াইয়া মেরে ফেলে । ঘটনার পর মুকসুদপুর থানা পুলিশ এসে সুরাতহাল রিপোর্ট করে। সেই প্রতিবেদনে আমার বাবার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে পুলিশ উল্লেখ করে । যখন গোপালগঞ্জ হাসপাতালে ময়না তদন্ত হয় সেখানে চিকিৎসকরা তাদের বর্নণায় উল্লেখ করেন, ফুসফুসে রক্ত জমাট , বাম ফুসফুস ও ফুসফুসের আবরনীর পাশে অত্যাধিক রক্ত জমাট এবং হৃদপিন্ডে রক্ত জমাট ও ফুলা অবস্থা পাওয়া গেছে ।
অথচ রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠান চিকিৎসকেরা ওই প্রতিবেদনে ফলাফলে লেখা আছে বিষ পানে তার মৃত হয়নি । এখানে বিষ পানে মৃত্যর বিবরন কেন আসলো ? তাছাড়া ওই প্রতিবেদনে গোপালগঞ্জের চিকিৎসকরা সেখানে পুনরায় বর্ননা করেন হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে । কোন প্রাণির হৃদক্রিয়া বন্ধ না হয়ে কি মারা যায় ? এই হৃদক্রিয়া বন্ধ হওয়ার প্রকৃত কারণ কেন তারা উল্লেখ করেননি ? আমি চাই আমার বাবার মৃত্যুর সঠিক কারণ প্রকাশ করা হোক । আমরা ঘটনার দিনই মুকসুদপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করি।
মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী অছিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষ এ মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে চিকিৎসকদের দিয়ে এ কাজ করেছে। তাই ন্যায় বিচারের স্বার্থে আমরা সঠিক ভিসেরা প্রতিবেদন চাই।
রাসয়নিক পরীক্ষায় বিষ প্রয়োগে মৃত্যু হয়েছে কিনা শুধু এতটুকু জানতে চাওয়া হয়েছে কিনা ? জানতে চাইলে ময়নাতদন্তকারি চিকিৎসক ও গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফারুক আহমেদ বলেন , অপর পক্ষের দ্বারা ম্যানেজ হয়ে আমরা ময়নাতদন্ত করিনি ( অথচ এ কথা তার কাছে জানতে চাওয়া হয়নি ) । এ বিষয়ে নিয়ে এগিয়ে লাভ হবেনা মন্তব্য করে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা হাসপাতালের সহকারী পরিচালকের কাছে গিয়ে এ বিয়য়ে জানতে পারেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে সহকারী পরিচালক অসিত কুমার মল্লিক বলেন, আমি ওই বিষয়ে অবগত নই । প্রতিবেদন থেকে যতটুকু জানাযায় তাহলো নিহত মুক্তিযোদ্ধা সাহেব আলী রাসয়নিক পরীক্ষায় শুধু বিষ প্রয়োগ হয়েছে কিনা এতটুকু জানতে চাওয়া হয়েছে । সেই জন্যই রাসয়নিক পরীক্ষার ফলাফল শুধু লিখেছে ভিসেরা পরীক্ষায় কোন বিষ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সঠিক প্রতিবেদন দেয়ার জন্য আমার কাছে একটি লিখিত আবেদন করেছে নিহত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী । আমি আবেদনপত্রটি দেখেছি। এ ব্যপারে চিকিৎসকদে নিয়ে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ