পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সিন্ডিকেট করে শুধু চালের দাম বৃদ্ধি নয়; ভোক্তাদের সঙ্গে নানাভাবে প্রতারণা করছে এক শ্রেণির অসাধু মিল মালিক। মোটা চাল মেশিনে কেটে চিকন করে ভোক্তাদের ঠকানো হচ্ছে। এই চাল বেশি দামে বিক্রি করে ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন কিছু মিল মালিক। এই প্রতারণা রোধে বাজারে থাকা চালের উৎস ধানের জাত নির্ণয়ের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য ২১টি জেলায় একটি সমীক্ষা চালানো হবে।
জানতে চাইলে গবেষণা পরিচালক হাজিকুল ইসলাম বলেন, মাঠ পর্যায়ে লোকজন কাজ করছেন। আমরা যাচ্ছি। ডাটা সংগ্রহ চলছে। আমরা অন্যান্য কাজ নিয়েও ব্যস্ত আছি। এরমধ্যেই কাজটি করার চেষ্টা করছি। ডাটা সংগ্রহের কাজ করে কাজটি সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগবে। আমরা দেখতে চাই, আমাদের দেশে চালের ব্র্যান্ডিংটা কীভাবে হচ্ছে। কোন চাল কোন ধানের জাত থেকে আসছে। আমরা এ বিষয়ে প‚র্ণাঙ্গ তথ্য দেব। এরপর সরকার সিদ্ধান্ত নেবে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে।
জানা গেছে, চালের উৎস খুঁজতে এসব জেলা থেকে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে বিভিন্ন নাম ব্র্যান্ডের চাল কোন কোন জাতের ধান থেকে তৈরি করা হচ্ছে, তা নির্ণয় বা অনুসন্ধানের জন্য খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের (এফপিএমইউ) ১৩ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এই সমীক্ষার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ এবং তা তদারকির জন্য ১৩ জন কর্মকর্তা জেলাগুলোতে কাজ করছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা গত ৭ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করেছেন। তারা ৩১ অক্টোবরের মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা থেকে নির্ধারিত প্রশ্নপত্র মোতাবেক তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম সম্পন্ন করে পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে সচিত্র প্রতিবেদন জমা এবং ডাটা এন্ট্রি দেবেন বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা এই কাজটি শেষ করতে পারবেন না। নিখুঁতভাবে কাজটি করতে তাদের আরো সময়ের প্রয়োজন হতে পারে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, চালকল মালিকরা মোটা চাল চিকন করে মিনিকেট, নাজিরশাইল, কাজল নামে বাজারজাত করছেন। এতে মোটা চালের ভেতরের অংশ বেশি দামে কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। এছাড়া চালের উপরিভাগে যে পুষ্টি থাকে তা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন ওই চালের ভোক্তা। এতে স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
ধান গবেষণা, বিএডিসি ও কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের তথ্যমতে, দেশে উৎপাদিত চালের ৮৫ শতাংশই মোটা, আর ১৫ শতাংশ চিকন।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দেশে বোরো ও আমন মৌসুমে ব্যাপকভাবে চাষ হয় ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ ধান। কিন্তু চালের বাজারে এই নামে কোনো চাল নেই। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় চালের বাজারে মিনিকেট ও নাজিরশাইল নামে চাল পাওয়া যায়। কিন্তু এই নামে ধানের কোনো জাত নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্রি-২৮ এবং কিছু ক্ষেত্রে ব্রি-২৯ ধান কেটে ‘মিনিকেট’ নামে বাজারজাত করা হয়। একইভাবে ব্রি-২৯ ধান অধিক ছাঁটাই ও পলিশ করে চালের নাম দেয়া হয় ‘নাজিরশাইল’। গত বছর খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছিলেন, ‘দেশে নাজিরশাইল নামে কোনো ধানের জাত নেই। মিল মালিকরা নাজিরশাইল চাল বিক্রি করে ক্রেতার সঙ্গে প্রতারণা করছেন’।
সমীক্ষার জন্য খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের গবেষণা পরিচালক মো. হাজিকুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান ও ফিরোজ আল মাহমুদ, সহযোগী গবেষণা পরিচালক মিজানুর রহমান, আলিমা নুসরাত জাহান, মোস্তফা ফারুক আল বান্না, মো. ইসমাইল মিয়া, মো. আবুল হাসেম, গবেষণা কর্মকর্তা হিল্লোল ভৌমিক, মো. মেহেদী হাসান সোহাগ, ধীমান সেন, প্রসেনজিৎ শিকদার এবং ডকুমেন্টেশন অফিসার শহীদুল্লাহ দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে। এই ১৩ জন কর্মকর্তা সমীক্ষার জন্য যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, বগুড়া, নওগাঁ, সিলেট, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রংপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, জামালপুর, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ভ্রমণ করবেন।
এ প্রসঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সংগ্রহ ও সরবরাহ) এবং খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের মহাপরিচালক মো. তাহমিদুল ইসলাম বলেন, ভোক্তাকে কাক্সিক্ষত চাল কিনতে সহায়তা করা, প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করা এবং ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে বাজারে পাওয়া বিভিন্ন নাম ব্র্যান্ডের চাল কোন কোন জাতের ধান থেকে তৈরি করা হচ্ছে তা নির্ণয় বা অনুসন্ধানের জন্য একটি সমীক্ষা পরিচালিত হচ্ছে। এজন্য খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। কর্মকর্তারা কাজ করছেন। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।
গবেষণা পরিচালক ফিরোজ আল মাহমুদ বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, চালের জাত নির্ধারণ সময়সাপেক্ষ কাজ। আমরা কয়েকটি জেলায় এরমধ্যে গিয়েছি। কোয়েশ্চেনিয়ার অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ করেছি। ২১টি জেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে অর্ধেক জেলা থেকে তথ্য পেয়ে গেছি। আমরা দেখছি, কোন চাল কোন ধান থেকে আসছে। চালের ব্র্যান্ড নাম কী! ব্র্যান্ড নামের সঙ্গে ধানের নামের সামঞ্জস্যতা কতটুকু- আমরা সবকিছু রিপোর্ট আকারে দেব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।