বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে সারাদেশে ১ কোটি বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর আওতায় উপক’লীয় ১০টি জেলার ৪৩টি উপজেলায় প্রায় দশ লাখ গাছের চাড়া বিতরন সম্পন্ন করেছে উপক’লীয় বন সাকের্লের আওতাধীন ৪টি বন বিভাগ। বরিশাল সামাজিক বন বিভাগ ছাড়াও পটুয়াখালী, ভোলা ও নোয়াখালী উপক’লীয় বনোৎপাদন বিভাগের আওতাধীন ১০টি জেলার ৪৩টি উপজেলায় ইতোমধ্যে এসব গাছের চাড়া রোপনও সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে বন অধিদপ্তরের কোষ্টাল সার্কেলের বন সংরক্ষক। এসব চাড়া রোপনের ফলে দেশের উপক’লীয় এলাকা ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাস সহ যেকোন ধরনের প্রকৃতিক বিপর্যয় থেকে সুরক্ষা আরো নিশ্চিত হবে বলে আশা করছেন বন বিভাগের দায়িত্বশীল মহল। ২০০৪Ñ০৬ অর্থ বছরে ‘দেশে ১ কোটি নারকেল চারা উত্তোলন ও রোপন কর্মসূচী’র আওতায়ও উপক’লীয় এলাকায় বিপুল সংখ্যক চাড়া রোপন করা হয়েছিল।
বঙ্গোসাগরের কোল ঘেসে ৭১০ কিলোমিটার উপকুলীয় তটরেখার ১৯টি জেলার ৪৮টি উপজেলার প্রায় এক কোটি জনগোষ্ঠী সহ হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষায় উপক’লীয় বনভ’মী ‘ঢাল’ হিসেবে কাজ করছে। পাশাপাশি এসব বনভ’মী দেশের ‘প্রাকৃতিক ভারসাম্যের রক্ষা কবজ’ হিসেবেও বিবেচিত পরিবেশবীদদের কাছে। এছাড়া উপকুলীয় এলাকায় তাল গাছের চাড়া উত্তোলন ও রোপনের একটি নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ বন গবেষনা ইনস্টিটিউট। তালগাছ যেকোন প্রকতিক দূর্যোগের বিরুদ্ধে যেমনি টেকসই, তেননি তা বজ্রপাতের হাত থেকে জানমাল রক্ষায়ও যথেষ্ঠ কার্যকরি বলে ইনস্টিটিউট-এর বরিশাল গবেষনা কেন্দ্রর বিভাগীয় কর্র্মকর্তা জানিয়েছেন।
সরকার ইতোমধ্যে উপক’লের ৭১০ কিলোমিটার তটরেখার ১৯টি জেলার ৪৮টি উপজেলার ৪৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে ‘উপকুলীয় এলাকা’ হিসেবে চিহিৃত করেছে। যা দেশের মোট আয়তনের ৩০%। মোট জনসংখ্যার ২৮ ভাগ এসব ঝুকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করে। আর এ বিশাল জনগোষ্ঠী সহ সম্পদকে রক্ষায় উপক’লীয় এলাকায় বনায়ন অব্যাহত রয়েছে। ১৯৬৫-৬৬ সাল থেকে সীমিত বনায়ন শুরু হলেও ১৯৭০-এর ১২ নভেম্বর ভয়াল ঘূর্ণিঝড় ‘হেরিকেন’এর ছোবলে উপক’লের ৫ লক্ষাধীক মানুষের প্রাণহানীর পরে এ কার্যক্রম আরো যোরদার হয়। বিশ^ব্যাংক উপক’লীয় বনায়নে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় উপকুলভাগে এ পর্যন্ত প্রায় সোয়া দুই লাখ হেক্টর জমিতে ‘লবনাম্বুজ বন বা ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট’ সহ বিভিন্ন ধরনের বন সৃজন করা হয়েছে। তবে গত এক দশক ধরে উপক’লীয় বনায়নে তেমন কোন কার্যক্রম ছিলনা। বিষয়টি নিয়ে দাতাদের কাছ থেকেও তেমন সারা ছিলনা।
তবে সম্প্রতি ১০৪ কোটি টাকার সম্পূর্ণ দেশীয় তহবিলে ‘বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা চরাঞ্চলে বনায়ন’ নামে একটি প্রকল্পের আওতায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে নতুন বনায়ন সহ এক হাজার কিলোমিটার উপকুলীয় বেড়িবাঁধ ও বিভিন্ন ধরনের সড়কে বৃক্ষ রোপনের একটি প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। বরিশাল বিভাগের ৪ টি জেলাসহ উপকুলের ১০টি জেলায় ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এ বনায়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হবে। প্রকল্পের আওতায় উপক’লের পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, পিরোজপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ৪০ হাজার বসতবাড়ী বনায়ন করা হবে। তবে প্রকল্পটির ব্যায় বৃদ্ধি সহ ‘উন্নয়ন প্রকল্প সার-পত্র, ডিপিপি’ সংশোধনের সম্ভবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
ইতোমধ্যে সৃজিত বনভ’মির কারনে দেশের বিশাল উপকুলীয় এলাকায় অনেক ভুমি উদ্ধারও সম্ভব হয়েছে। অনেক চরাঞ্চল মূল ভু-খন্ডের সাথেও যূক্ত হয়েছে ইতোমধ্যে। তবে পরিবশেবীদদের মতে, ভু-খন্ড উদ্ধারের চেয়েও এসব সৃজিত বনভুমি সবচেয়ে বেশী ইতিবাচক ভুমিকা রাখছে বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা ঝড়-জলোচ্ছাসের হাত থেকে উপকুলের জান-মাল রক্ষায়।
তবে এ পর্যন্ত উপকুলীয় এলাকায় যে বনায়ন হয়েছে, তার প্রায় ৯৫ ভাগই ছিল কেওড়া গাছ। কিন্তু এসব গাছ দ্রুত বর্ধনশীল হলেও দশ বছর বয়স থেকে কান্ড ছিদ্রকারী পোকার আক্রমনে কেওড়া বাগান মড়ে যাচ্ছিল। পাশাপাশি উপকুলীয় বাগানে ক্রমাগত পলি পড়ে ভ’মির উচ্চতা বৃদ্ধি সহ অবাধে গবাদিপশুর বিচরনে বনভুমির মাটি শক্ত হয়ে বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রানে উপকুলীয় এলাকায় কেওড়া’র বিকল্প হিসেবে ‘ছইলা,বাইন, সাদা বাইন, মরিচা বাইন, গেওয়া, সুন্দরী, পশুর, ধুন্দল, সিংড়া, খলসী, কিরপা, গোলপাতা, হেতাল, কাকড়া, গড়ান ও গর্জন’ গাছের চারা উত্তোলন ও আবাদ কৌশল উদ্ভাবন করেছে বন গবেষনা ইনস্টিটিউট। তবে সাম্প্রতিককালে কেওড়া গাছের কান্ড ছিদ্রকারী ‘স্টেম বোরার’ পোকার আক্রমন প্রকৃতিকভাবেই অনেকটা স্তিমিত হয়েছে বলেও গবেষকগন জানিয়েছেন। ২
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।