Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বর্ষণ আর জোয়ারে দক্ষিণের আমন ধান এখনো পানির তলায়

৫দিন পরে সূর্যের হাসি ফুটলেও বরিশাল মহানগরীর রাস্তায় এখনো পানি

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০২০, ৪:৩৫ পিএম

একটানা ৫দিন পরে রবিবার সপ্তাহের প্রথম কর্ম দিবসে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে সূর্যের হাসি ফুটছে। সকাল থেকে স্বমহিমায় দক্ষিণাঞ্চলের আকাশে আবিভর্র্’ত হয়ে সূর্য মামা। তবে এবারের নি¤œচাপের প্রভাবে প্রবল বর্ষন আর জোয়ারের পানিতে দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমন ধানের যথেষ্ঠ ক্ষতির আশংকা সৃষ্টি হয়েছে। রোপা আমনের প্রায় ৭৫ ভাগ জমি দুদিনের বর্ষনে প্লাবিত হবার পরে তা এখনো বিপদ মূক্ত হয়নি। আগাম শীতকালীন সবজির বেশীরভাগই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এখনো দক্ষিন জনপদের বিশাল এলাকা পানির তলায়।
অপরদিকে নি¤œচাপের প্রভাবে প্রবল বর্ষণ থেমে যাবার ৪৮ ঘন্টা পরেও বরিশাল মহানগরীর অনেক রস্তাঘাট সহ বিভিন্ন এলাকা এখনো পানিজট মূক্ত হয়নি। পশ্চিম প্রান্ত থেকে নগরীর প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত নবগ্রাম রোডের একটি বড় এলাকা এখনো দুদিন আগের বৃষ্টির পানিতে সয়লাব। তার ওপর দিয়েই নানা ধরনের যানবাহনের অব্যাহত চলাচলে রাস্তাটির সর্বনাশ হলেও কারো কোন হেলদোল নেই। নগরীর আরো বেশকিছু এলাকার রাস্তাঘাট থেকেও এখনো পানি সরেনি। পাশের ড্রেনগুলো উপচে পানি রাস্তায় গড়াচ্ছে। আর সাথে দুদিন আগের প্রবল বর্ষণের পানিও রাস্তায় গড়াচ্ছে।
এ নগরীর সোয়া ৩শ কিলোমিটার ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিস্কার হচ্ছেনা বলে অভিযোগ নগরবাশীর। এছাড়াও যে কয়টি খাল কোনমতে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে, সেগুলোও নিয়মিত পরিস্কার না হওয়ায় ড্রেনের পানি গ্রহন করছে না। নগরীর প্রায় ২শ কিলোমিটার পাকা ড্রেনেরও প্রায় একই অবস্থা। অথচ ছাউনিযুক্ত পাকা ড্রেনগুলো পরিস্কার রাখা খুব কঠিন নয়। এর মাধ্যমে পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা নির্বিঘœ রাখা অনেক সহজতর হলেও এ নগরী মাঝারী বৃষ্টিতেও প্রতিনিয়ত অবরুদ্ধ হচ্ছে। মূলত এনগরীর বেশীরভাগ ড্রেনগুলো নিয়মিত ও যথাযথভাবে পরিস্কার না করার কারনেই মাঝারী বর্ষনেই রাস্তা আর ড্রেন একাকার হয়ে যাচ্ছে। কাঁচা ড্রেনগুলোর অবস্থা আরো খারাপ।
একসময়ে ‘প্রাচ্যের ভেনিস’ খ্যাত বরিশাল মহানগরী থেকে বেশীরভাগ খাল বিলুপ্ত হয়েছে অনেক আগে। নগরীতে পানি আটকে যাওয়ার এটাও অন্যতম কারন বলে মনে করছেন নগর পরিকল্পনাবীদগন। তবে খালের পরিবর্তে যেসব পাকা ড্রেন নির্মান করা হয়েছে তা যদি নিয়মিত পরিস্কার করা হয়, তবে এ ধরনের সংকট অনেকটাই কমেআসার কথা বলে মনে করছেন মহলটি।
গত বৃহস্পতি ও শুক্রবারের প্রবল বর্ষনে নগরীর নিম্নাঞ্চল সহ প্রায় ৫০ শতাংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে ছিল। রোববার পর্যন্ত কিছু রাস্তায় ছিলো পানির ঢেউ। নগরীর ১৪টি বস্তি এলাকায় বৃষ্টি আর জোয়ারের পানি থৈ থৈ করছে গত কয়েকদিন। হাজার হাজার ছিণœমূল মানুষের দূর্গতির শেষ নেই এখনো। নগরীর অন্তত ৫০ভাগ এলাকা পানিতে সয়লাব হয়ে গেলেও পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। নগরীর সদর রোড সহ সকল এলাকায় প্রায় হাটু পানিতে তলিয়ে যায় শুক্রবার। ময়লা আবর্জনায় ড্রেন আটকে জমে থাকা পানি গোটা এলাকাকে ড্রেনে পরিনত করে। বর্ষায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ নগরীর বেশির ভাগ সড়ক মে মাস থেকে তিন দফার প্লাবন আর অতি বর্ষণে প্রায় পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়ার পর্যায়ে পৌছে গেছে।
এসব বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ডা. মো. রবিউল ইসলাম এর সাথে আলাপ কালে তিনি জানান, আমরা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছি। নগরীর ড্রেন পরিস্কার না করার বিষয়টি অস্বিকার করে তিনি বলেন, খালগুলো বন্ধ করায় সমস্যা বেড়েছে। পানি নামতে পাড়ছে না। নবগ্রাম রোড খাল সহ অন্য খালগুলো ভড়াট হয়ে গেছে। এসব খাল পুণঃ খণন না করলে পরিস্থিতির উন্নতি দুঃসাধ্য বলেও জানান তিনি। তবে এসব বিষয়ে নগর ভবনের সব ধরনের প্রচষ্টো অব্যাহত থাকার কথা দাবী করেন প্রাণী সম্পদ চিকিৎসক রবিউল ইসলাম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবহাওয়া

২৯ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ