Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গোয়ালন্দে ভাঙনে গৃহহারা ৫৫৩ পরিবার

প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নে পদ্মা নদীর ভয়াবহ তা-বে ৫৫৩টি পরিবার গৃহহীন হয়ে সর্বস্বহারা হয়েছে। অসহায় পরিবারগুলোর ঠিকমত মাথা গোঁজার ঠাঁই পাচ্ছে না। অর্ধাহারে-অনাহারে অতিকষ্টে দিন অতিবাহিত করছে তারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ঢল্লা পাড়া, আফছার শেখের পাড়া, ফেরিঘাট সংলগ্ন সিদ্দিক কাজির পাড়া, সাত্তার শেখের পাড়াসহ নদীর তীরবর্তী বাহিরচর এলাকার ৫৫৩ পরিবার গত কয়েক দিনের ভয়াবহ ভাঙনের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ পরিবারের ভিটে-মাটি পদ্মায় বিলীন হয়েছে। বাকিরা আতঙ্কেই ভিটে-মাটি ফেলে ঘর-বাড়ী সরিয়ে নিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এক রকম খোলা আকাশের নিচে মানবেতরভাবে বেঁচে আছে। পদ্মার পানি কিছুটা কমতে শুরু করায় ভাঙন পরিস্থিতি তীব্র হয়। এ সকল এলাকায় এখনো বসবাসকারী প্রায় দেড় হাজার পরিবার চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। সরেজমিন দেখা যায়, ফেরিঘাট এলাকায় শত শত খালি ভিটা পড়ে রয়েছে। পানি কিছুটা কমলেও ভাঙন আতঙ্কে অনেক পরিবার ঘর-বাড়ী সরানো অব্যাহত রেখেছে। ভাঙা ঘর-বাড়ীগুলো পাশের মহাসড়কের ধারে, দৌলতদিয়া ট্রাক টার্মিনাল, দৌলতদিয়া হেলিপ্যাড, রেল সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ফেলছেন। অনেকেই কাছে-দূরের আত্মীয়-স্বজনের বাড়ীতে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন। অনেকেই শূন্য ভিটায় এসে কুড়িয়ে নিচ্ছেন শেষ সম্ভবটুকু। আয়নাল বেপারী (৫৭), তোফাজ্জল হোসেন (৬০)সহ অনেকেই জানান, মাত্র মাসছয়েক আগে অনেক আশা করে ঘর তুলেছিলাম। এখনই তা আবার ভেঙে ফেলতে হচ্ছে নিজ হাতে। নিজের সাজানো সংসার ভেঙে ফেলা যে কতো কষ্টের তা বোঝাতে পারব না। ক্ষতিগ্রস্ত রাশেদ বেপারী জানান, এক বছরও হয়নি ধার-দেনা করে বাড়ীতে চৌচালা একটি টিনের ঘর তুলেছিলাম। নদীর ভয়াবহতার কারণে ঘরটিকে রক্ষা করতে এখন তা ভেঙে ফেলতে হচ্ছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে কোথায় আশ্রয় নেবো তা জানা নেই। দৌলতদিয়ার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য নাছিমা খাতুন জানান, তিনি নিজেও ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে তার ঘর-বাড়ী সরিয়ে নিয়েছেন। আমরা শত শত পরিবার এখন কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেবো। সরকারিভাবে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া না হলে এতগুলো পরিবার মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ ঘোষ জানান, দৌলতদিয়ায় বন্যা ও নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর মধ্যে ৫৩ মে. টন চাল ও নগদ ১ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে গৃহহীনদের জন্য টিন দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে। পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙন থেকে এ এলাকা ও লঞ্চ-ফেরিঘাটকে রক্ষার জন্য নদী শাসন জরুরি হয়ে পড়েছে। এটা করা না হলে আগামি কয়েক বছরের মধ্যে দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়ন পুরোপুরি নিশ্চহ্ন হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে বলে তিনি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গোয়ালন্দে ভাঙনে গৃহহারা ৫৫৩ পরিবার
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ