বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আধুনিক সভ্যতার আলো যেন পৌছেনি গ্রামটিতে। সংঘর্ষ যেন নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা। প্রায় ১ যুগ ধরে গ্রামের লোকজন ২টি বিবাদমান দলে বিভক্ত হয়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ চলে আসছে। সম্প্রীতি সহাবস্থান এখানে বিরল। ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌর শহরের গজারিয়া গ্রামটির লোকজন দীর্ঘ্যদিন যাবৎ ২ দলে বিভক্ত হয়ে একাধিকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে। গত কয়েকদিন আগে দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই দিন বিকেলে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে নারী, পুরুষ, শিশুসহ অন্তত শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। আহতদের ভাঙ্গা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে। ঘটনাস্থল থেকে ছয়জনকে আটক এবং গ্রামজুড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় শিশু ও নারীরা পর্যন্ত রক্ষা পাচ্ছেনা। সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ বছরের একটি শিশুকে নির্মমভাবে আহত করে প্রতিপক্ষ বাচ্চু মাতুব্বরের লোকজন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,ওই গ্রামের পৌরসভার সাবেক কমিশনার বাচ্চু মাতুব্বরের লোকজনের সঙ্গে একই গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা রাজ্জাক ফকিরের লোকজনের কথা কাটাকাটি হয়। পরদিন সকালে এর জের ধরে বাচ্চু মাতুব্বর পক্ষ প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালায়। এতে উভয় গ্রুপের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হয় ।এ বিষয়ে রাজ্জাক ফকিরের পক্ষ হতে বাচ্চুর মাতুব্বরের লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করে।গত রবিবার বাচ্চু মাতুব্বরের লোকজন আদালত থেকে জামিনে এসেই কয়েকশত লোক সংঘবদ্ব হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাজ্জাক ফকিরের লোকজনের বসত ভিটার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় রাজ্জাক ফকিরের লোকজন বাধা দিতে চাইলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘষে বাচ্চু মাতুব্বরের লোকজন রাজ্জাক ফকিরের লোকজনের বাড়ী-ঘরে নারকীয় তান্ডব চালায়। এ সময় হামলাকারীরা যেথানে যা পেয়েছে তাই গুড়িয়ে দিযেছে। এ সময় অর্ধশত বসতঘর, বিল্ডিংয়ের গ্লাস,ঘরের চালা ভেঙ্গে বিধ্বস্ত করেছে। হামলাকারীরা ঘরের ভেতরে থাকা আসবার পত্র ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং স্বর্ণ, নগদ টাকা দামি আসবাব লুট করে নিয়ে যায়। রাজ্জাক ফকিরের শতাধিক লোকজন গুরুতর আহত হওয়ায় গ্রামটি ফাঁকা হয়ে যায়। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় রাজ্জাক ফকিরের পক্ষীয়দের বাড়িতে কোন পুরুষ সদস্য নেই। রাজ্জাক ফকিরের বসবাস করা বিল্ডিংটির বাইরে এবং ভিতরের আসবাবপত্র ভেঙ্গে চৃর্ণবিচুর্ণ করে দিযেছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রতিটা টিনের ঘরের চালা, টিভি, ফ্রিজ, বাথরুমের কমড, ব্রেসিং, ওয়াল সোকেজ, আলমারী, খাট, ডাইনিং টেবিল পর্যন্ত ভাংচুর করে। প্রতিটি বাড়িতে ভাঙচুরের কারণে প্রায় কোটি টাকা স¤পদ নষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। রাজ্জাক ফকিরের কন্যা মেঘলা,,অভিযোগ করে বলেন,হামলাকারীরা নারকীয় বর্বর হামলা চালিয়ে যাকে যেখানে পেয়েছে আহত করেছে। সেই সাথে সম্পদহানি করেছে। বাড়িতে আমাদের কোন পুরুষ সদস্য নেই। প্রতিপক্ষরা যেকোন সময় আমাদের উপর হামলা করতে পারে। রাতে আমরা মহিলারা নিরাপত্তার সার্থে বাড়িতে থাকিনা। বয়ঃবৃদ্ব আছিয়া বেগম বলেন,ভয়ে আমাদের পুরুষরা বাড়িতে আসতে পারছেনা।গ্রামে ঢুকলেই তারা আমাদের উপর হামলা করে।উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক স¤পাদক রাজ্জাক ফকিরের স্ত্রী ঝর্না বেগম জানান, আদিম যুুগের মানুষের মত বর্বর আচরণ করেছে বাচ্চু মাতুব্বরের লোকজন। অতর্কিত হামলা চালিয়ে শতাধিক বাড়ির নারীদের এলোপাথাড়ি কোপানোসহ কয়েক ঘণ্টা ধরে লুটপাট চালানো হয়। পুলিশ সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেও কোনো প্রতিবাদ করেনি বরং আমাদের গালিগালাজ করেছে। থানা সদর থেকে আমাদের গ্রামের দূরত্ব পাঁচ মিনিট হলেও পুলিশ দেরিতে আসে। প্রতিপক্ষের হামলার আশংকায় পালিয়ে থাকা রাজ্জাক ফকির মুঠোফোনে জানান,আমরা বাচ্চু মাতুব্বরের সন্ত্রাসীদের কারনে বাড়িতে ফিরতে পারছিনা। পুলিশও রহস্যজনক ভ’মিকা পালন করছে। এব্যাপারে বাচ্চু মাতুব্বরের সাথে তার নিজ বাড়িতে কথা হলে তিনি জানান, আমার লোকজন জামিনে এসে বাড়ি ফিরছিল। তখন রাজ্জাক ফকিরের লোকজন খারাপ কথা বলায় সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।আমার ছেলেকে প্রতিপক্ষরা মারাত্নকভাকে কুপিয়ে জখম করেছে। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে আমার লোকজন ভাংচুর করেছে।বছরের পর বছর ধরে চলা সংঘর্ষের জন্য তিনি সরাসরি পুলিশকে দায়ী করেন। তিনি বলেন,পুলিশই সংঘর্ষটি জিইয়ে রাখে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নীরিহ গ্রামবাসীদের কয়েকজন জানান,আমরা এ বর্বরতা থেকে মুক্তি চাই। মোড়লরাই এ সংঘর্ষ জিইয়ে রাখে। এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শফিকুর রহমান বলেন, প্রায় ১ যুগ ধরে গ্রামটির লোকজন ২ দলে বিভক্ত হয়ে আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় সংঘর্ষ চলে আসছে।গত ৮ সেপ্টেম্বর বিবাদমান ২ দলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী আহত হন। শৃংখলা রক্ষার্থে গ্রাম জুড়ে পুলিশ মোতায়েন করে ৯ জনকে আটক করা হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলাও হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।