Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাইডেন জিতলে পরিবর্তনের আশা চীনের, তবে তা সামান্যই সম্ভব

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৪৬ পিএম

চীনা নেতারা আশা করছেন, মার্কিন নির্বাচনে জো বাইডেন জিতলে ওয়াশিংটন বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও সুরক্ষা নিয়ে বিরোধ নিরসনের চেষ্টা করবে। আমেরিকান রাজনৈতিক পলিসি অনুযায়ী এর মাধ্যমে বেইজিংয়ের হতাশা আরও বাড়তে পারে।

রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতারা এবং তাদের আদর্শ উভয়ই নির্বাচনের ফলাফল নির্বিশেষে, চীনের ব্যপারে নরম দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের বদলে লড়াই আরও বাড়াতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। করোন ভাইরাস মহামারী, প্রযুক্তি, বাণিজ্য, সুরক্ষা এবং গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে কয়েক দশক ধরে মার্কিন-চীন সম্পর্ক তাদের সর্বনিম্ন স্তরে নেমে গেছে। অন্যান্য বহু প্রান্তে মতবিরোধ সত্ত্বেও, উভয় পক্ষই হংকং, তাইওয়ান এবং তিব্বত ও জিনজিয়াংয়ের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের প্রতি বেইজিংয়ের বাণিজ্য রেকর্ড এবং অবস্থানের সমালোচনা করছে, যেখানে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি তথাকথিত ‘শিক্ষামূলক’ ক্যাম্পে মুসলমানদের আটক করেছে। আমেরিকান জনগণও চীনের বিরুদ্ধে সমান নেতিবাচক। পিউ রিসার্চ সেন্টারের মার্চ মাসের জরিপ থেকে জানা যায়, দুই-তৃতীয়াংশ আমেরিকানই চীনের প্রতি ‘প্রতিকূল দৃষ্টিভঙ্গি’ পোষণ করেন। ওয়াশিংটনের একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের ডেরেক কাঁচি বলেছেন, বাইডেন যদি বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি তুরে নেয়ার চেষ্টা করেন তবে তিনি ‘বর্বর’ বলে বিচিত হবেন।

চীনের নেতারা ২০১৬ সালের তুলনায় এই নির্বাচন নিয়ে নিরব রয়েছেন। তখন তারা সাবেক সেক্রেটারি অফ স্টেট হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে ট্রাম্পের পক্ষেই বেশি ছিলেন। তারা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বৈদেশিক নীতি কার্যকর করার হিলারির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। এর মধ্যে মানবাধিকার ইস্যুতে বেইজিংকে চাপ দেয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল। অন্যদিকে, ট্রাম্পের ব্যবসায়িক সাফল্যের সর্বজনীন চিত্র চীনকে আগ্রহী করেছিল। চীনা বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধের ধাক্কা এবং কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলিতে ভারতে তার প্রচারের পরে বাইডেনের সরকার চীনের সাথে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে পারে। এ বিষয়ে বেইজিংয়ের ভাষা ও সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ইউ ওয়ানলি বলেন, অন্ততপক্ষে, বাইডেনের নীতি ‘ট্রাম্পের মতো সংবেদনশীল এবং হাস্যকর হবে না’। বেইজিংয়ের রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শি শিনহং বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটদেরকে কম চরমপন্থী হিসাবে দেখা হয়। তাই তারা এমনকি সীমিত সামরিক দ্বন্দ্ব রোধে আরও যত্ন নিতে পারে এবং চীনের সাথে সংকট ব্যবস্থাপনায় যোগাযোগের দিকে আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারে।’

শীর্ষস্থানীয় মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা উইলিয়াম ইভানিনার বিবৃতি অনুসারে, গোয়েন্দাদের বিশ্বাস যে, চীনা নেতারা ট্রাম্পকে পুনরায় নির্বাচিত হতে দেখতে চান না। তবে তারা চীনের বিরুদ্ধে নির্বাচনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার বা বাইডেনকে সমর্থন করার অভিযোগ করেনি। মার্কিন সমস্যাগুলি বিশৃঙ্খল পাশ্চাত্য গণতন্ত্রের চেয়ে চীনের একদলীয় সিস্টেম ভালো বলে চিত্রিত করে। চীনা জাতীয়তাবাদীরাও বিশ্বাস করেন যে, ট্রাম্প চীনকে বিশ্বনেতা হিসাবে তার যথাযথ মর্যাদায় বাধা দেয়ার চেষ্টা করছেন। এবং ট্রাম্পের আকস্মিক নীতি পরিবর্তনের ফলে বেইজিং হতাশ। ডেরেক কাঁচি বলেন, ‘দ্বিতীয় ট্রাম্প প্রশাসন পুরোপুরি অকার্যকর হতে পারে, তবে এটি অস্থিতিশীল হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে এবং কমিউনিস্ট পার্টি স্থিতিশীলতাকে উচ্চমূল্য দেয়।’

মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা রাজনীতি বিশেষজ্ঞ জুন তিউফেল ড্রেয়ার বলেন, চীনা নেতারা দ্বন্ধের সমাধান না হলেও বাইডেনকে আরও নমনীয় হিসাবে দেখতে পাবে। তিনি একটি বিখ্যাত উক্তি উদ্ধৃত করে বলেন, তারা যে ‘শয়তান’ সম্পর্কে জানে তার বদলে সেই ‘শয়তান’কেই পছন্দ করবে, যার সম্পর্কে তারা জানে না। সূত্র: ডন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ