গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর মহাসচিব আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমী বলেন, বিএসএফ’র নির্বিচার বাংলাদেশী খুনের বিরুদ্ধে সরকারীভাবে কার্যকর পদক্ষেপ তো দূরের কথা, মৌখিক কড়া প্রতিবাদ জানাতেও আমরা দেখছি না। এটা গভীর বেদনাদায়ক, লজ্জার ও নিন্দনীয়। সরকারের দুর্বল জনসমর্থন এবং ভারত নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণেই বিএসএফ এমন দুঃসাহস দেখাচ্ছে। ভারতীয় বিএসএফ কর্তৃক সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে। আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোন আপোষকামিতা চলবে না।
তিনি বলেন, শুধু আইন করলেই হবে না, ধর্ষণ ও যেনা-ব্যভিচার বন্ধ করতে হলে এগুলোর উৎস বন্ধ করতে হবে। গোড়া রেখে ডাল-পালা কাটলে বৃক্ষ যেমন সমূলে ধ্বংশ করা যায় না, ধর্ষণের উৎস বন্ধ না করে মৃত্যুদ-ের আইন দিয়ে ধর্ষন বন্ধ করা যাবে না।
পুলিশী হেফাজতে সিলেটের রায়হান হত্যাকান্ড প্রসঙ্গে আল্লামা কাসেমী বলেন, হত্যার ঘটনাকে ধামাচাপা দিয়ে জনগণকে শান্ত করা যাবে না। এটা যে পুলিশী হত্যাকান্ড ছিল, তা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট। সুতরাং দোষী পুলিশ সদস্যদের কঠিন শাস্থি কার্যকর করতে হবে।
তিনি আরো বলেন দ্রব্যমূল্য আজ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। আলু পিয়াজসহ নিত্য পণ্যের দাম দিন দিন হুহু করে বাড়ছে, এ দিকে সরকারের কোন নজর নেই। শীতকালীন সবজীর দাম সবসময় কম থাকে, কিন্তু এখন তার সম্পূর্ণ বিপরীত। যে সবজী উৎপাদন করে কৃষক পাচ্ছে কেজি প্রতি মাত্র ৫/৬ টাকা সে সবজীর দাম বাজারে ৪০-৫০ টাকা। তা কোনভাবেই বরদাশত করা যায়না। সরকারের উচিত দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর ভুমিকা পালন করা।
আল্লামা কাসেমী গতকাল বৃহ:বার বাদ আসর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, পুলিশ হেফাজতে ও সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক মানুষ হত্যার প্রতিবাদে এবং যিনা-ব্যভিচার ও ধর্ষণ রোধে ৬ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে সমমনা ইসলামী দলসমুহ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সহকারী প্রচার সম্পাদক মাওলানা ফয়সাল আহমদ এর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর আল্লামা শাহ আতাউল্লাহ ইবনে হাফিজ্জী,জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর সহসভাপতি আল্লামা আব্দুর রব ইউসূফী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমির মাওলানা ড. মোহাম্মদ ঈশা সাহেদী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক,মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়বে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, বাংলাদেশ ফরায়েজি আন্দোলনের আমির মাওলানা আব্দুল্লাহ হাসান,পীর সাহেব বাহাদুরপুর, ইসলামি ঐক্য আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা মোস্তফা তারিকুল হাসান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী,জনাব মুনতাসির আলী,বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ ফরায়েজি আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, ও মুসলিম লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব খান আসাদ প্রমূখ।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর আল্লামা শাহ আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী বলেন, পুলিশী হেফাজতে মানুষ হত্যা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। সিলেটের রায়হান হত্যা পুলিশের ভাবমূর্তিকে তলানীতে নিয়ে গেছে। পুলিশ বাহিনীকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে ও ভঙ্গুর ভাবমূর্তি রক্ষায় সরকারের উচিত দোষী পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ শাস্থি নিশ্চিত করে তা দ্রত কার্যকর করা। অন্যথায় জনমনে বাড়তে থাকা ক্ষোভ থেকে উদ্ভূত যেকোন পরিস্থিতির দায় সরকার’সহ সংশ্লিষ্ট সকলকেই নিতে হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি আল্লামা আব্দুর রব ইউসূফী বলেন, যারা নারীদেরকে পণ্য বানিয়ে মজা লুটতে চায় এবং নারীদের অবাধ ও অশ্লীল বিচরণের সুযোগে যিনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হতে চায়, এমন কি ধর্ষণের মত কর্মকা- চালাতে চায়, তারা আজ দিশেহারা ও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে আবোল-তাবোল বকছে। এদের হীন মানসিকতার বিরুদ্ধে সরকার ও জনগণকে সচেতন থাকতে হবে। এবং সমাজকে কলুষতা ও হিংস্রতামুক্ত রাখতে সমমনা ইসলামী দলসমূহের ৬ দফা দাবি অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের বলেন, আজকে সারা দেশে মহামারির আকার ধারণ করেছে পর্ণোগ্রাফি। এই পর্ণোগ্রাফি অবিলম্বে কঠোর হাতে বন্ধ করতে হবে। পর্ণোগ্রাফি, দেহ-ব্যবসা, অশ্লিলতা অবিলম্বে বন্ধ না করলে ধর্ষণ বন্ধ করা যাবে না। তাই আমরা বলি- ধর্ষণ বন্ধ করতে চান নাকি বিচার কার্যকর করতে চান। যদি বাস্তবিকই ধর্ষণ বন্ধ করতে চান, তাহলে সবার আগে পর্ণোগ্রাফি বন্ধ করতে হবে। তার সঙ্গে মাদকের ব্যবসাও মহামারি আকার ধারণ করেছে। এটাকেও বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, মৃত্যুদন্ডের আইন করাই যথেষ্ট নয়, বার বছর ষোল বছর লেগে যায় বিচার কাজ সম্পাদন করতে। এইভাবে চলবে না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ আইন প্রয়োগ ও কার্যকর করতে হবে। প্রকাশ্যে শাস্তি প্রদান করতে হবে।
মাওলানা মামুনুল হক আরো বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম যেভাবে পাগলা ঘোড়ার মত লাগামহীন ভাবে ছুটে চলছে, তাতে দেশে কোন সরকার আছে বলে মনে হয় না।
সরকার দেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা না করে শুধু দলীয় নেতা-কর্মীদের পকেট ভারী করার জন্য মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে লুটপাট করছে।
সরকার যদি দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রনে রাখতে ব্যর্থ হয়, তাহলে জনগণ দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার পতনের আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।