পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক পাচারে এখন হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করছে। আর মাদকগুলোর মধ্যে রয়েছে মরণনেশা ইয়াবা, হেরোইন ও ইয়াবার চেয়ে শক্তিশালী মাদক অ্যামফিটামিন। এসব মাদক মধ্যপ্রাচ্য, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়াতে পাচার করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মাদক পাচারের সাথে জড়িত ১০টি চক্রের সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দারা। এ চক্রের সাথে জড়িত রয়েছে প্রায় ২৫ জন সদস্য। এদের মধ্যে অনেকেই একাধিকবার গ্রেফতার হয়ে আবার পূর্বের অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। গার্মেন্টসের রফতানি পণ্য ও কাঁচামাল বিদেশে রপ্তানির আড়ালে ইয়াবা, হেরোইন ও অ্যামফিটামিন পাচার করা হয়। আর পাচারকৃত অধিকাংশ মাদক স্থলপথ দিয়ে ভারত থেকে আনে মাদক কারবারীরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতে মাদক পাচারের ক্ষেত্রে নেয়া হচ্ছে নানা কৌশল। আর এ ধরণের মাদক পাচারে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ইমেজ ক্ষুণ হচ্ছে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদকের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের লোকজনও জড়িত। কতজনের লাগেজ তল্লাশী করা সম্ভব? স্ক্যানারে বা এক্সরে মেশিনে ভিআইপিতে লাগেজ তল্লাশি করাও কঠিন। এক্ষত্রে শাহজালালে যদি প্রশিক্ষিত কুকুর মোতায়েন করা যায় তা হবে বেশি কার্যকরী। কারণ কুকুর ভিআইপি চিনবে না, চিনবে মাদক। মাদক কারবারিরা টেকনোলজিতে অনেক বেশি আপডেটেট। সে তুলনায় পিছিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রশিক্ষিত কুকুর মোতায়েনের পাশাপাশি অত্যাধুনিক ক্যামেরা বসালে ফল পাওয়া যাবে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক রফতানির আড়ালে ইয়াবা তৈরির কাঁচামাল পাচার হচ্ছে বিভিন্ন দেশে। ঢাকাকে ইয়াবা তৈরির কাঁচামাল পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহার করছে আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ী চক্র। গত ৯ সেপ্টেম্বর বুধবার রাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে তৈরি পোশাক রফতানির কার্টনে ধরা পড়েছে ১৫ কেজি ৬৫৮ গ্রাম ইয়াবা তৈরির কাঁচামাল অ্যামফিটামিন। ‘এই প্রথমবারের মতো শাহজালালে এত বড় চালান ধরা পড়েছে’ বলে দাবি করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।
তবে সূত্র বলছে, তাদের এ দাবি সঠিক নয়। কারণ, এর আগেও একই ধরনের মাদক পাচার হলেও ধরতে পারেননি বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটির সদস্যরা। গত বছরের ১০ নভেম্বর ঢাকা থেকে যাওয়া একটি ফ্লাইটে ১০টি কার্টনে থাকা ইয়াবা তৈরির কাঁচামাল ‘সিউডোফিড্রিন’ ধরা পড়ে মালয়েশিয়ায়।
বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ইয়াবা পাচারের সময় বিমানবন্দরে একাধিকবার ধরা পড়ে পাচারকারী চক্রের সদস্যরা। একইসঙ্গে বাংলাদেশ থেকে পার হয়ে গেলেও বিদেশে ধরা পড়েছে সেসব ইয়াবা। এ কারণে সরাসরি ইয়াবা পাচার না করে এখন ইয়াবা তৈরির কাঁচামাল পাচারের কৌশল নিয়েছে পাচারকারী চক্র। ‘মেটাফিটামিন, অ্যামফিটামিন ও সিউডোফিড্রিন ইয়াবা তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়। এই রাসায়নিক সাদা পাউডার অতিরিক্ত মাত্রায় উত্তেজক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এসব উপাদান ব্যবহার করে সহজেই ইয়াবা তৈরি করা যায়। এক কেজি সিউডোফিড্রিন দিয়ে দুই লাখ পিস ইয়াবা তৈরি করা যাবে। কাঁচামাল থাকলে ঘরে বসেই ইয়াবা তৈরি করা যায়, এটা খুব কঠিন কাজ নয়।
এদিকে, গত কয়েক মাসে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কোটি কোটি টাকার অবৈধ স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৬ জুলাই তিন কোটি ১২ লাখ ২০ হাজার টাকার স্বর্ণসহ জেদ্দা থেকে আসা ইসমাইল হোসেন সরকার নামের এক যাত্রীকে আটক করা হয়। পরে তার কাছ ২টি জুসার মেশিন ও ২টি ডিজিটাল সাউন্ড বক্স এর ব্যাটারির মধ্যে ৩২টি স্বর্ণবার পাওয়া যায়। এগুলো বিশেষ কৌশলে লুকানো ছিল। বারগুলোর মোট ওজন ৫ কেজি ২০০ গ্রাম। আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। পরে কাস্টমস আইনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
গত ১৩ আগস্ট আরো ২ কোটি ২২ লক্ষ টাকা মূল্যের ৩ কেজি ৭০০ গ্রাম স্বর্ণসহ দুবাইফেরত মো. আলমাস আলী নামের এক যাত্রীকে আটক করা হয়। পরে তার সঙ্গে থাকা ব্যাগ স্ক্যানিং করলে ২টি মিক্সার মেশিমের বিশেষ কৌশলে লুকায়িত অবস্থায় ৩২টি স্বর্ণবার পাওয়া যায়। যার ওজন ৩ কেজি ৭০০ গ্রাম এবং বাজার মুল্য প্রায় ২ কোটি ২২ লাখ টাকা। গত ১৬ অক্টোব সৌদিগামী রেডিমেট গার্মেন্টসের রফতানি পণ্য চালানের ৩টি কার্টন থেকে ৩৮ হাজার ৯শ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। পন্য চালানটি আটকের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে জানানো হলে তাদের প্রতিনিধি এসে ইয়াবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বিল অব এক্সপোর্ট অনুযায়ী পণ্য চালানের রফতানিকারক এমএস সিয়াম অ্যান্ড সমি এন্টারপ্রাইজ এবং ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে খিলগাঁও পশ্চিমপাড়া। আর আমদানিকারক হিসেবে লেখা ছিল সৌদি আরবের অ্যাপারিজ ইন্টারন্যাশনাল ইস্ট, যেখানে ঠিকানা দেয়া হয় রিয়াদের আল ওয়াজির ট্রেডিং সেন্টার।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রোর উপ-পরিচালক আহসানুর রহমান বলেন, বিপুল পরিমান এমফিটামিন পাচারচেষ্টায় জড়িত আন্তর্জাতিক চক্র রয়েছে। এই চক্রের বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আরও একাধিক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদেরকেও আইনের আইতায় আনার চেষ্টা চলছে। এই চক্রে একাধিক দেশের লোকজন জড়িত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।