মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আগামী মাসের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এরই মধ্যে অনেকেই বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। দেশটির প্রথম সারির গণমাধ্যমগুলোও ট্রাম্প হেরে যাবেন বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। এদিকে, জো বাইডেন ক্ষমতায় এলে চিনের পাশেই দাঁড়াবেন, আর সেটা ভারতের পক্ষে বিপজ্জনক হবে বলে মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস এক বিশেষ সম্পাদকীয় নিবন্ধে ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনের বিরুদ্ধে স্পষ্ট রায় দিয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচন হবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় হুমকি—এ কথা উল্লেখ করে পত্রিকাটি লিখেছে, ‘ট্রাম্পের বিপর্যয় সৃষ্টিকারী চার বছর যুক্তরাষ্ট্রকে দেশের ভেতরে ও বাইরে প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তিনি ক্ষমতা অপব্যবহার করেছেন ও নিজের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে বৈধতা প্রদানে অস্বীকার করেছেন। যে নীতিমালা বছরের পর বছর এই দেশকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, তিনি তা চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়েছেন।’ টাইমস–এর রায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনে অযোগ্য।
প্রায় একই ভাষায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে আরেক প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্ট। এক সম্পাদকীয় নিবন্ধে এই পত্রিকা লিখেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসের ‘সবচেয়ে মন্দ প্রেসিডেন্ট’। অন্যদিকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন সম্পর্কে ওয়াশিংটন পোস্ট মন্তব্য করেছে, তিনি একজন যোগ্য ও সম্মানজনক প্রার্থী, অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এই মুহূর্তে তাঁকেই প্রয়োজন। অন্যান্য প্রধান পত্রিকার মধ্যে লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস, টাম্পা বে টাইমস, ডেট্রয়েট ফ্রি প্রেস ও ফ্লোরিডার সান-সেন্টিনেল বাইডেনকে সমর্থন জানিয়েছে। যে কয়েকটি প্রধান পত্রিকা ট্রাম্পকে সমর্থন জানিয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য টেক্সাসের এল পাসো টাইমস ও বোস্টন হেরাল্ড। ট্রাম্প ইতিপূর্বে ঘোষণা করেছিলেন, নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্টসহ অধিকাংশ প্রধান পত্রিকা ও টিভি নেটওয়ার্ক তাকেই সমর্থন করবে। বলা বাহুল্য, সে কথা সত্য প্রমাণিত হয়নি।
শুধু জনমতে নয়, নিজ দলের ভেতরেই ট্রাম্পের অবস্থা নড়বড়ে হয়ে পড়ছে। নির্বাচনী বাতাস বিরুদ্ধে যাচ্ছে টের পেয়ে রিপাবলিকান দলের অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতা নিজেদের আনুগত্য পরিবর্তন করে নিচ্ছেন। যেসব রিপাবলিকান সিনেটর অথবা কংগ্রেস সদস্য পুনর্নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন, তাদের মধ্যেই এই প্রবণতা বেশি। বস্তুত এটি তাদের নিজেদের গা বাঁচানোর চেষ্টা। তাদের একজন হলেন নেব্রাস্কার সিনেটর বেন স্যাস, যিনি কঠোরতম ভাষায় ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন। ট্রাম্পের কারণে রিপাবলিকান দল সিনেটে তার নিয়ন্ত্রণ হারাতে যাচ্ছে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন এই মধ্যপন্থী রিপাবলিকান। এমনকি ট্রাম্পের দুই বিশ্বস্ত অনুসারী, সিনেটর মিচ ম্যাককনেল ও সিনেটর লিন্ডসি গ্রাহাম ট্রাম্পের সঙ্গে দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করছেন।
এদিকে, বাইডেন ও তার পরিবারের দুর্নীতি প্রসঙ্গে ‘লিবেরাল প্রিভিলেজ’ নামে একটি বইও লিখেছেন জুনিয়র ট্রাম্প। রোববার নিউ ইয়র্কের লং আইল্যান্ডে একটি অনুষ্ঠানে সেই বইটি প্রকাশ করেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, ‘চীন যে ভাবে শাসাচ্ছে সেটা আমাদের সকলকে বুঝতে হবে। আমার মনে হয়, এই পরিস্থিতিটা ইন্দো-মার্কিনদের থেকে আর কেউ ভাল কেউ বুঝবেন না।’ লাদাখে সীমান্ত নিয়ে চীনের সঙ্গে ভারতের টানাপড়েনের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে তার মন্তব্য, ‘নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য বাইডেনের ছেলেকে দেড়শো কোটি মার্কিন ডলার দিয়েছে চীন। বাইডেনরা ব্যবসায়ী। টাকার জন্য ওরা বিক্রি হয়ে যেতে পারেন। যা ভারতের পক্ষে মোটেই ভাল হবে না।’ শুধু চিন নয়, টাকা পেলে রাশিয়ার কাছেও যে বাইডেনরা বিক্রি হয়ে যেতে পারেন সেই আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন জুনিয়র ট্রাম্প। আর সেটা ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের পক্ষেও ভাল হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাবাকে প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্বহাল করাই এখন তার মূল লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে গেলে ইন্দো-মার্কিনদের বিপুল সমর্থন জরুরি। আর সেটা জোটাতেই দিনরাত এক করে ফেলছেন ট্রাম্প-পুত্র। ওই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে ইন্দো-মার্কিনদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প পরিবারের সঙ্গে এই সম্প্রদায়ের যথেষ্ট ভাল বোঝাপড়া রয়েছে। ইন্দো-মার্কিনরা যথেষ্ট পরিশ্রমী, পরিবারকেন্দ্রিক এবং শিক্ষাকেন্দ্রিক।’ নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রাম্পের বন্ধুত্বের প্রসঙ্গও টেনে আনেন ট্রাম্প-পুত্র। তিনি বলেন, ‘আহমেদাবাদে ট্রাম্প-মোদির ওই র্যালি সত্যিই অভূতপূর্ব ছিল।’ সূত্র: দ্য ওয়্যার, সিএনএন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।