Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পশুর বর্জ্যে খালের পানি দূষণ

আনোয়ারায় নোংরা পরিবেশে পশু জবাই : দুর্গন্ধে জনজীবন দুর্বিষহ

নুরুল আবছার তালুকদার, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার চাতরী চৌমুহনী বাজারের দক্ষিণ পাশে খানদরিয়া খালের পাশে রয়েছে পশু জবাইয়ের স্থান। এটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। এখানে প্রতিদিন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জবাই করা হচ্ছে বাজারের পশু। মাসের পর মাস ধরে ময়লা আর দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হলেও কারো কোনো নজর নেই। জবাইকৃত পশুর বর্জ্যে খালের পানি দূষিত হয়ে দুর্গন্ধে দুর্বিষহ সাধারণ মানুষের জীবন।
উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি বাজার চাতরী চৌমুহনী। বছরের পর বছর লাখ লাখ টাকা ইজারা হওয়ায় পরও উপজেলা প্রশাসন বাজারের কসাইদের জন্য নির্মাণ করেননি স্বাস্থ্যকর পশু জবাই স্থান। এটি সড়কের পাশে হওয়ায় খালের পানি ও অল্প বৃষ্টিতে দুর্গন্ধে টিকতে পারছে না এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গতকাল স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, আনোয়ারা, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, পেকুয়াসহ কক্সবাজার জেলার হাজারো মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম পিএবি সড়ক। কাঁচাবাজারের দক্ষিণে খানদরিয়া খালের গা ঘেষে টিনসিটে নির্মিত হয়েছে একটি পশু জবাইয়ের কসাইখানা। কসাইখানার দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষণ হচ্ছে। কসাইখানায় জবাইকৃত পশুর বর্জ্য-রক্ত, নাড়িভূড়ি, গোবর, হাড়, খুর, শিং ইত্যাদি ফেলে রাখে সেখানে। সঠিক ব্যবস্থাপনা ও জনসচেতনতার অভাবে মারাত্মকভাবে পরিবেশ বিপর্যয়সহ জনস্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এছাড়া পর্যাপ্ত পানি দিয়ে ময়লা, আবর্জনা, নাড়িভূড়ি, গোবর, রক্ত না ধোয়ায় মশা, মাছি ও বিভিন্ন পোকা মাকড়ের বংশ বিস্তার ঘটছে। গাড়ি বা পায়ে হেঁটে এ পথদিয়ে যাওয়ার সময় নাক বন্ধ করে যেতে হয় পথচারীদের। এমন একটি পরিবেশে প্রতিদিন জবাই করা হচ্ছে বাজারের পশু।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আনোয়ার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা দেখছি ভাঙা ও জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে এটি। সেখানে প্রতিদিন সকালে চলে পশু জবাই। আর দুপুর হলে জবাইকৃত পশুর বর্জ্যরে গন্ধে ভারী হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ। এমন পরিবেশে জবাইকৃত পশুর মাংসগুলো বাজার থেকে আমাদের কিনে খেতে হয়। ভেবেও অনেক কষ্ট লাগলো। গাড়ি বা পায়ে হেঁটে এ পথদিয়ে যাওয়ার সময় নাক বন্ধ করে যেতে হয় আমাদের।
চাতরী চৌমহনী বাজারের মাংস ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মনছুর বলেন, পুরো বাজার জুড়ে শুধুমাত্র একটি পশু জবাইয়ের স্থান রয়েছে। সেটিও দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় ভেঙে পড়েছে। নেই কোন পানির ব্যবস্থা। আমরা পশু জবাইয়ের পর অনেক কষ্ট করে পানি নিয়ে যেতে হয় পরিস্কার করার জন্য। উপজেলা প্রশাসন বাজারের পশু জবাইয়ের জন্য সেটি সংস্কার বা নির্মাণ করে দিলে আমরা উপকৃত হবো।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন বলেন, এখানে আমি দেখেছি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই হচ্ছে। কসাইদেরকে অনেকবার বলার পরও তারা মানছে না। কয়েকবার মোবাইল কোর্টও করা হয়েছে তাদের। বাজারের পশু জবাইয়ের স্থানটিও ভেঙে পড়েছে। এটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, এটি দেখে আমি ব্যবস্থা নিবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পশুর-বর্জ্য
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ