Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পলাতক আকবরকে ধরতে সব ইমিগ্রেশনে চিঠি : পিবিআইয়ের সংবাদ সম্মেলন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

সিলেট কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে মো. রায়হান আহমদের (৩৪) মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত কাজ শুরু করেছে পিবিআই। তদন্তের স্বার্থে সাময়িক বরখাস্ত ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে প্রয়োজন। পলাতক আকবর যেন কোনোভাবেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারেন, সেজন্য ইমিগ্রেশনে চিঠি দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে পিবিআইর প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার।

তিনি বলেন, সিলেটের ঘটনার মামলার ডকেট আমরা গত পরশুদিন রাতে পেয়েছি। ঘটনাস্থলে সিলেটের পিবিআই টিম তিন থেকে চার ঘণ্টা ছিল গতকাল(বুধবার)। আমরা আমাদের তদন্ত শুরু করে দিয়েছি। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে আমাদের মনে হয়েছে সাময়িক বরখাস্ত এসআই আকবরকে আমাদের দরকার। এ কারণে সব ইমিগ্রেশনে আমরা জানিয়ে দিয়েছি আকবর যেন কোনোমতেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে না যেতে পারে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও সীমান্তের বিভিন্ন ইমিগ্রেশন সেন্টারে জানিয়ে দেয়া হয়েছে আকবর যেন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারে। তাকে ধরার জন্য আমরা টিম রেডি করেছি। তাকে আমাদের খুবই দরকার।

বনজ কুমার মজুমদার বলেন, আকবর যেহেতু এই অপকর্ম করে বাহিনীর সুনাম নষ্ট করেছে এবং সে আমাদের কথা চিন্তা করেনি। সুতরাং তার বিষয়ে কোনো চিন্তা করার সুযোগ নেই। ১০ হাজার টাকার কারণেই কি এমন ঘটনা ঘটেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখছি। একদিনেতো সবকিছু বলা যাবে না। তবে আমরা একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কবর থেকে তার লাশ আবার তুলবো এবং তদন্ত করবো। ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখনো মামলার ফাইল পাইনি। পেলে তদন্ত কাজ শুরু করবো। এক্ষেত্রে তদন্তভার সিনিয়র কোনো নারী অফিসারকে দেয়া হবে।

এদিকে সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান উদ্দিনের লাশ পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, রায়হান নামের ওই যুবককে বন্দরবাজার থানা পুলিশ গত শনিবার ১০ অক্টোবর বিকালে আটক করে। ওইদিন রাতে ফাঁড়িতে তার ওপর নির্যাতন চালায় পুলিশ এবং তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য টাকা দাবি করে। ভোরে অপরিচিত একটি মোবাইল থেকে ছেলের ফোন পায় রায়হানের বাবা। তাতে ওই ফাঁড়িতে তাকে আটকে রেখে ছেড়ে দেয়ার জন্য টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে জানায় রায়হান। বাবাকে টাকা নিয়ে এসে তাকে উদ্ধারের অনুরোধও করে রায়হান। ছেলেকে বাঁচাতে ভোরে তার বাবা টাকা নিয়ে ওই ফাঁড়িতে গেলে তাকে জানানো হয় রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে, সকাল ১০টার দিকে আসতে হবে। পরে সকালে এলে তাকে বলা হয় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে যেতে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছে। এরপর মৃত ছেলের শরীরে নির্যাতনের ভয়াবহ চিহ্ন দেখতে পান তিনি। রায়হানের হাতের নখগুলোও ওপড়ানো ছিল। পুলিশ এরপর দাবি করে রায়হানকে ছিনতাইকারী সন্দেহ করে জনতা গণপিটুনি দেয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশনের ফুটেজে এর কোনও প্রমাণ মেলেনি। রোববার সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে তার ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়। বিকেলে ৩টার দিকে ময়না তদন্ত শেষে নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এশার নামাজের পর জানাজা শেষে তার লাশ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। রায়হানকে পুলিশ হেফাজতে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনাটি রোববার থেকেই গণমাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে। সোমবার এ ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। মামলা দায়েরের পর এর তদন্তভার দেয়া হয় পিবিআইকে।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিলেট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ