বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দেশের বেকার যুবকদের জন্য একটি সম্ভাবনাময় কর্ম সংস্থান বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মৎস্য চাষ। বাংলাদেশে মৎস্য চাষে এই পদ্ধতি নতুন হলেও অন্যান্য দেশে অনেক আগে থেকেই বেশ জনপ্রিয় পায়। কক্সবাজারের রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের পশ্চিম মনিরঝিল দরগাহ পাড়া গ্রামে এই পদ্ধতিতে মৎস চাষ করে সফলতা পেয়েছে তরুন উদ্যোক্তা জাবেদ পারভেজ ও তার দুই সহোদর।
সরজমিনে উদ্ভোক্তাদের সাথে আলাপ করে জানাগেছে, তারা ৩ ভাইয়ের মধ্যে জাবেদ পারভেজ মূলত চট্টগ্রাম থেকে এই পদ্ধতির বিষয়ে একটি প্রশিক্ষণ কোর্স শেষ করে। এলাকায় এসে গত আগষ্ট মাসে নিজ গ্রামের বাড়িতে প্রাথমিকভাবে একটি ৩০ হাজার লিটার ট্যাংকে তেলাপিয়া মাছের চাষ শুরু করে। শীতের পরে ২ মাসের মধ্য এই ট্যাংকি থেকে ন্যূনতম ৫ শত কেজি মাছ উৎপাদন হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
তরুন উদ্ধোক্তা পারভেজ জানায়, এই পদ্ধতি শিক্ষিত বেকারদের জন্য খুবই উপযোগী। তবে পদ্ধতিটা সম্বন্ধে খুব ভালোভাবে জানতে হবে এবং সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থাকতে হবে। এই পদ্ধতিটা এক রকম আশার আলো দেখিয়েছে তাদের। তাছাড়া অনেক বেকার এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে নিজেকে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে। সে আরো জানায় তাছাড়া আমরা প্রথমে সিমিত পরিসরে এই পদ্বতি প্রয়োগ করে সাফল্য পেয়ছি। আমরা খুব শ্রীঘ্রই ১ লক্ষ লিটারের বায়োফ্লক পদ্বতি হাতে নিতে যাচ্ছি।
মৎস্যবীদরা জানায়, এই পদ্ধতিতে মাছ চাষের সুবিধা হল অল্প উচ্চ ঘনত্বে মাছ চাষ করা যায় এবং এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ তুলনামূলকভাবে অন্য পদ্ধতি অপেক্ষা খরচ সাশ্রয়ী ও কম ব্যয়বহুল। এই পদ্ধতিটা মূলত ইউরোপের একটি দেশ থেকে উৎপত্তি হয়েছে এবং ক্রমান্বয়ে এটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা আশা রাখি বাংলাদেশে এটি একটি যুগান্তকারী পেশা হিসাবে পরিনত হবে।
রামু উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন রামু উপজেলায় এটিই সর্বপ্রথম হয়েছে। এছাড়াও এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য আরো কয়েকজন উদ্যোক্তা পরামর্শ চেয়েছেন। এটি নতুন প্রযুক্তি হিসেবে ভালো একটি পদ্ধতি বলাযায়। যারা বিভিন্ন পদ্বতিতে মৎস্যজাতীয় চাষ করতে গিয়ে আর্থিক সংকটে পড়ে তাদের কে তারা সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের থেকে ঋণের ব্যবস্থা করে থাকেন বলেও তিনি জানান।
কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ বলেন এই পদ্ধতিতে মাছ চাষে যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে তেমনি কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়ে বেকারত্বের হার কমে আসবে।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের জন্য পানির ১৮ টি গুণাবলি দরকার বলে জানিয়েছেন মৎসয়বিদরা। সেগুলো হলে- তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়া। পানির রং হবে সবুজ, হালকা সবুজ, বাদামি। দ্রবীভূত অক্সিজেন ৭-৮ মিলিগ্রাম বা লিটার হওয়া। পিএইচ ৭.৫-৮.৫৫.ক্ষারত্ব ৫০-১২০ মিলিগ্রাম বা লিটার। খরতা ৬০-১৫০ মিলিগ্রাম বা লিটার। ক্যালসিয়াম ৪-১৬০ মিলিগ্রাম বা লিটার। অ্যামোনিয়া ০.০১ মিলিগ্রাম বা লিটার। নাইট্রাইট ০.১-০.২ মিলিগ্রাম বা লিটার। নাইট্রেট ০-৩ মিলিগ্রাম বা লিটার। ফসফরাস ০.১-৩ মিলিগ্রাম বা লিটার। এইচটুএস ০.০১ মিলিগ্রাম বা লিটার। আয়রন ০.১-০.২ মিলিগ্রাম বা লিটার। পানির স্বচ্ছতা ২৫-৩৫ সেন্টিমিটার। পানির গভীরতা ৩-৪ ফুট। ফলকের ঘনত্ব ৩০০ গ্রাম বা টন। টিডিএস ১৪,০০০-১৮,০০০ মিলিগ্রাম বা লিটার হওয়া ও লবণাক্ততা ৩-৫ পিপিটি থাকা।
পানিতে যথাযথ পরিমাণ ফ্লক তৈরি হলে পানির রং সবুজ বা বাদামি দেখায়, পানিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা দেখা যায়, তকন পরীক্ষা করলে পানি অ্যামোনিয়া মুক্ত দেখায়, প্রতি লিটার পানিতে ০.৩ গ্রাম ফ্লকের ঘনত্ব পাওয়া যাবে, ক্ষুদিপানা দেওয়ার পর তাদের বংশ বিস্তার পরিলক্ষিত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।