পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় উপনির্বাচনের সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএন) সঙ্গে মোবাইল ফোনে যে কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে তা পুরোপুরি এডিট করা বলে দাবি করেছেন ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী। তিনি দাবি করে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার নামে যে কথোকথন ছড়িয়ে পড়েছে, তা এডিট করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন চলাকালীন ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ডিসি সাহেব আমার বাড়িতে ইউএনও সাহেবকে পাঠিয়েছেন। এটা তিনি করতে পারেন না। আমি যদি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করি; তাহলে ডিসি সাহেবও আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। আমার নামে মামলা হলে ডিসির নামেও মামলা হবে।
নিজ নির্বাচনী এলাকার ইউএনও’র সঙ্গে ‘ভাই-বোনের’ মতো সম্পর্ক দাবি করে নিক্সন চৌধুরী বলেন, গত ১০ তারিখে উপনির্বাচন হয়েছে। সেই উপনির্বাচনে যে প্রার্থী ছিলেন, তার পক্ষে আমাদের নেতাকর্মীরা কাজ করেছেন। সেই উপনির্বাচনে সকালে ১১টার দিকে ইউএনওকে আমি ফোন করেছিলাম। কিন্তু আমি তাকে একথা বলার জন্য ফোন করেছিলাম যে, আমার একজন কর্মী মাঠে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিলো, এজন্য ম্যাজিস্ট্রেট এবং বিজিবি সদস্যদের দিয়ে তাকে ধরে নিয়ে যায়। এ বিষয়টা অবগত করার জন্য তাকে ফোন করেছিলাম। কিন্তু বাকী অংশটুকু সুপার এডিট করা হয়েছে।
আলোচিত সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনারা দেখতে পারবেন। ইউএনও’র সঙ্গে আমার কথোকথন দেয়া হয়েছে। ইউএনও একজন বিসিএস ক্যাডার। যদি ইউএনও’র সঙ্গে আমার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় আসে বা রেকর্ড হয়; তিনি (ইউএনও) নিশ্চয়ই জানেন যে, এ বিষয়ে হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে কারো বক্তব্য রেকর্ড করা যাবে না এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় দেয়া যাবে না। আমার মনে হয়, আমার ইউএনও এত বোকা নন যে, আইনের লোক হয়ে তিনি আইন ভঙ্গ করবেন। আর এখন পর্যন্ত তার কোন বক্তব্য আসেনি। আপনারা তাকে জিজ্ঞাসা করবেন, এরকম কোন কথা আমার সঙ্গে হয়েছে কি না।
নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ হয়েছে কি না- এমন প্রসঙ্গ টেনে নিক্সন চৌধুরী বলেন, আমি তাকে (্ইউএনও) আমার একজন কর্মীর বিষয়ে কথা বলেছি। এতে নির্বাচনের কোন ধরনের আচরণবিধি ভঙ্গ হয়নি। আমার দ্বারা নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়নি। কর্মীদের আটক নিয়ে নালিশ করেছি, গালিগালাজ করিনি। তিনি বলেন, আপনারা জিজ্ঞেস করেন এই গালিগুলো আমি ইউএনওকে দিয়েছি কি না। তিনি (ইউএনও) বলুক এই গালিগুলো আমি তাকে দিয়েছি। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ করেন এই ভয়েসটা আমার। এই ক্লিপগুলো এক এক জায়গা থেকে কেটে নিয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশিত গালিগালাজের বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, আমার আর ইউএনওর কথাই শুধু ভাইরাল হয়নি, পুলিশ প্রশাসন ও ইউএনওর কথাও ভাইরাল হয়েছে। এটা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য কোনো মহল কাজটা করেছে। এটা সরকারের দায়িত্ব খুঁজে বের করা।
নিক্সন চৌধুরী অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে দেয়া চিঠিতে ৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়ার কথা। কিন্তু নির্বাচনের আগের দিন জানতে পারি ১৩ জন ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের দিন এই ম্যাজিস্ট্রেটরা মারমুখী আচরণ করেন বলেও অভিযোগ তার।
উল্লেখ, ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করার অভিযোগ এনে নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দিয়েছেন ফরিদপুরের ডিসি অতুল সরকার। নির্বাচনকালীন ঘটনা হওয়ায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপষিদ বিভাগ থেকে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠিয়েছে।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম ন‚রুল হুদা বলেছেন, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসককে (ডিসি) হুমকি ও নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের গালিগালাজ করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন, ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফায়জুর রহমান প্রমূখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।