Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অর্ধেক পুরুষ-অর্ধেক নারী, অত্যন্ত বিরল পাখির খোঁজ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০২০, ৩:২৮ পিএম

সম্প্রতি অত্যন্ত বিরল এই পাখিটির খোঁজ পেয়েছেন পেনসিলভেনিয়ার জীববিজ্ঞানীরা। একই দেহে পাখিটি পুরুষ ও নারী! এক শরীরে দুই লিঙ্গের সহাবস্থান শুধু নয়, দ্বিপার্শ্বিক প্রতিসাম্যে অর্ধেক শরীরে সেটি পুরুষ, অর্ধেক তার নারী।

পাখি হিসেবে রোজ-ব্রেস্টেড গ্রসবিক অবশ্য বিরল প্রজাতিভুক্ত নয়। কিন্তু, পেনসিলভেনিয়ার যে পাখিটিকে চিহ্নিত করে পক্ষী বিশারদরা গবেষণাগারে নিয়ে গিয়েছেন, সেটি অত্যন্ত বিরলই। কারণ, পাখিদের ক্ষেত্রে এমনটা সাধারণত দেখা যায় না। প্রজাপতির দুনিয়ায় এ ঘটনা বিরল নয়। কেঁচোর মধ্যেও নারী-পুরুষের স্বাভাবিক সহাবস্থান থাকে অনেকসময়। শামুকের ক্ষেত্রেও এমনটা দেখা যায়। যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়ে থাকে হের্মাথ্রোডিজম। কিন্তু, পাখিদের মধ্যে এটা অস্বাভাবিক। তাই বিচিত্র সে পাখি নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহী জীববিজ্ঞানীরা।

রোজ-ব্রেস্টেড গ্রসবিক প্রজাতির পাখি সেক্সুয়ালি ডাইমরফিক। অর্থাৎ, যৌনগত ভাবে স্পষ্ট পার্থক্য বা ভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। পালকের রং-ই চিনিয়ে দেয় স্ত্রী-পুরুষকে। ডানার বাইরের দিকটা কালো। কিন্তু, ডানা মেললে ভিতরের দিকে এবং পুরুষ বুকে বা স্তনে গোলাপি রঙের প্রলেপ আছে। যে কারণে পাখিটির নাম হয়েছে রোজ-ব্রেস্টেড গ্রসবিক। কিন্তু, স্ত্রী-পাখির ডানার বাইরের রং খয়েরি। ভিতরে হলদেটে রং। কিন্তু, নারীবক্ষে পুরুষের মতো কোনও রঙের পোঁচ থাকে না।

নানা কারণে প্রকৃতিতে পাখির সংখ্যা কমে আসছে। যে কারণে পেনসিলভেনিয়ার রেক্টরের ‘পাউডমিল নেচার রিজার্ভ’-এর বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি পাখি পর্যবেক্ষণ শুরু করেছেন। এটা করতে গিয়েই ২৪ সেপ্টেম্বর একটি অদ্ভুত পাখি বিজ্ঞানীদের নজরে পড়ে। পাখিটি যে রোজ-ব্রেস্টেড গ্রসবিক, তা নিয়ে কারও মনে সন্দেহ ছিল না। কিন্তু, পাখির বিচিত্র রং বিজ্ঞানীদের বিস্মিত করে। পাখিটির একদিকে পুরুষ গ্রসবিকের উজ্জ্বল লাল পালক। অন্য দিকে, স্ত্রী-পাখির ক্যানারি হলুদ রঙের পালক। জীব বিজ্ঞানীরা জানান, পাখিটিকে যদি মাঝখান থেকে দুটো ভাগ করে দেয়া যায়, তার ডান পাশে গোলাপি রং, বাঁদিকে হলুদের সমাবেশ।

পাখিটি যে একই সঙ্গে পুরুষ এবং স্ত্রীও, বিজ্ঞানীদের এটা বোঝার জন্য বাইরের রংটুকুই যথেষ্ট ছিল। ফলে, বিচিত্র, বিরল সে পাখিকে সঙ্গে সঙ্গে তারা জালবন্দি করে, ল্যাবে চালান করেন। তাঁদের আশঙ্কা যে অমূল ছিল না, ল্যাবের কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাতে সে প্রমাণ মিলেছে।

শরীর ডানদিকে প্রত্যাশা মতোই তারা একটি শুক্রাশয়ের সন্ধান পেয়েছেন। রয়েছে পুরুষের আর সব বৈশিষ্ট্যও। বাকি অর্ধেকে আছে একটি ডিম্বাশয় ও অন্যান্য স্ত্রী বৈশিষ্ট্য। কেন এমন হয়? বিজ্ঞানীরা বলেছেন, কোনও ডিমের ভিতরে যদি একটার বদলে দুটো আলাদা নিউক্লিয়াস থাকে, এবং সেটি যদি দু'টি স্পার্মের মাধ্যমে নিষিক্ত হয়, তখন ডিমটির মধ্যে দু'টি লিঙ্গের ক্রোমোজমের আলাদা ভাবে বিকাশ হতে থাকে। জীব বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই অবস্থাকে বলা হয়ে থাকে বাইল্যাটেরাল গাইন্যানড্রোমর্ফিসম। সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ