Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডব্লিউটিওর প্রধান হচ্ছেন নারী

প্রথমবারের মতো

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০০ এএম

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) শীর্ষ নেতৃত্বে নারী নিযুক্তির ইতিহাস নেই। এ পর্যন্ত মহাপরিচালক পদে দায়িত্ব পালনকারী সবাই পুরুষ। দীর্ঘদিনের এ চর্চা ভাঙতে যাচ্ছে এবার।

গত বৃহস্পতিবার সংস্থাটির পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, পরবর্তী মহাপরিচালকের জন্য দুজন চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী এবং হার্ভার্ড ফেরত নাইজেরিয়ার সাবেক এক অর্থমন্ত্রীকে নির্বাচন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে যিনি চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হবেন, তিনিই হবেন সংস্থাটির সর্বোচ্চ পদে আসীন প্রথম নারী। নির্বাচক কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সংস্থাটির মহাপরিচালক পদের দৌড়ে চ‚ড়ান্ত ধাপের জন্য নাইজেরিয়ার এনগোজি ওকনজো ওয়েইলা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়ো মিয়াং হি নির্বাচিত হয়েছেন, যা সামনের সপ্তাহগুলোয় শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ডব্লিউটিওর মুখপাত্র কেইথ রকওয়েল বলেন, উভয় নারীই বেশ যোগ্য। এ কারণেই তাদের ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছে।

জানা গেছে, মহাপরিচালকের জন্য যোগ্যতম প্রার্থী বাছাইয়ের পাশাপাশি ১৬৪ সদস্যবিশিষ্ট জেনেভাভিত্তিক বৈশ্বিক সংস্থাটির সাধারণ পরিষদ কেনিয়ার সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমিনা মোহাম্মদ, সাবেক সৌদি অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ মাজাইদ আল-তোয়াইজরি এবং সাবেক ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমন্ত্রী ও ব্রেক্সিটের অন্যতম প্রবক্তা লিয়াম ফক্সকে সদস্য থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। ভান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ডিগ্রি নেয়া ইয়ো এক টুইটে পরবর্তী মহাপরিচালকের নির্বাচন প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ধাপে তাকে নির্বাচনের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমাদের একজন সমর্থ ও অভিজ্ঞ নতুন নেতা প্রয়োজন, যিনি ডব্লিউটিওর আস্থা পুনরুদ্ধার ও প্রাসঙ্গিকতা ফিরিয়ে আনতে পারেন। অন্যদিকে ওকনজো-ওয়েইলা টুইটারে তার প্রতি সমর্থন দেয়ায় সংস্থাটির সদস্যদের ধন্যবাদ দিয়েছেন এবং লিখেছেন, চূড়ান্ত ধাপে নির্বাচিত হওয়ায় তিনি খুশি। আগের ধাপে প্রার্থীদের তালিকা আট থেকে পাঁচে সংক্ষিপ্ত করা হয়।

মহাপরিচালক পদে চূড়ান্ত বিজয়ীর নাম নভেম্বরের প্রথম দিকে ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে। সংস্থাটির আগের মহাপরিচালক ব্রাজিলের নাগরিক রবার্তো অ্যাজিভেদো ‘ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত’ উল্লেখ করে মে মাসে ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি এক বছর আগে শীর্ষ পদটি ছাড়তে চান। কোনো উত্তরস‚রি না রেখেই তিনি গত ৩১ আগস্ট পদত্যাগ করেন। অ্যাজিভেদোর সাত বছরের কার্যমেয়াদ ব্যাপকতর উত্তেজনার মধ্যে কেটেছে। বিশেষত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিক থেকে তিনি প্রায়ই চাপে ছিলেন, যিনি উপর্যুপরিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ডবিøউটিও অন্যায্য আচরণ করে বলে অভিযোগ করেছেন। একই সঙ্গে ডব্লিউটিওও ব্যবস্থায় প্রকাশ্য বিরোধের জেরে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেছেন। অতীতে ট্রাম্প বৈশ্বিক বাণিজ্য সংস্থাটি থেকে নিজের দেশকে প্রত্যাহারের হুমকিও দিয়েছেন।

এদিকে ডবিøউটিও বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি-ব্যবস্থা সম্ভবত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিরোধ নিরসনের বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত ও নির্ভরযোগ্য ভরসাস্থল। কিন্তু সংস্থাটির সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগে নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি বাধাগ্রস্ত করে এর বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থাকে রুদ্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে গত বছর থেকে বিশ্ব সংস্থাটি নতুন কোনো বিরোধ মীমাংসায় সমর্থ হয়নি। পরবর্তী মহাপরিচালক যুক্তরাষ্ট্রকে সংস্থাটির কাঠামোর মধ্যে রাখতে দুঃসাহসিক কাজের মুখোমুখি হবে—যদি ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন।

বরাবরই ওয়াশিংটন চীনের বিরুদ্ধে শিল্পগুলোকে অত্যধিক মাত্রায় সমর্থন প্রদান ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ চুরির মতো অন্যায্য চর্চায় যুক্ত থাকার অভিযোগ করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা, পশ্চিমা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো চীনের স¤প্রসারণশীল বাজার যেন ধরতে না পারে, তার জন্যই দেশটি এমনটি করে। চীন অবশ্য অভিযোগ নাকচ করেছে। শুল্ক ও বাণিজ্যসংক্রান্ত আগের সাধারণ চুক্তির ভিত্তিতে ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ডব্লিউটিও এখন পর্যন্ত নারী মহাপরিচালক পায়নি কিংবা আফ্রিকার দেশগুলো থেকে কেউই সংস্থাটির শীর্ষ নেতা হিসেবে আসীন হননি। সংস্থাটি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়, যার অর্থ হলো যেকোনো একক সদস্য দেশ সিদ্ধান্ত বাধাগ্রস্ত করতে পারে। সূত্র : এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ