বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিদেশিরা দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ। এ জন্য প্রযুক্তি আরও উন্নত করার আহ্বান জানান বিএসইসির এই কমিশনার।
তিনি বলেন, টেকনোলজিকে আরও উন্নত করতে পারলে শেয়ারবাজারকে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বাহিরে নিয়ে যাওয়া যাবে। বিদেশিরা দেশের ক্যাপিটাল মার্কেটে বিনিয়োগে গভীরভাবে আগ্রহী। কারণ তারা তাদের দেশে ১ শতাংশও রিটার্ন পায় না। আমরা তাদের সুযোগ করে দিলে বিনিয়োগ আসবে। এ নিয়ে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করেছি।
শনিবার (১০ অক্টোবর) ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ’ উপলক্ষে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ সামসুদ্দিন বলেন, একসময় ৫০ লাখ টাকার লেনদেন হলেই অনেক মনে করা হতো। তবে এখন সেই পরিমাণ চলে এসেছে হাজার কোটিতে। এটা সম্ভব হয়েছে টেকনোলজির উন্নতির কারণে। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের গভীরতা বাড়াতে সবপক্ষ থেকেই কাজ করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে মার্কেটটা অত্যান্ত বেগবান এবং গভীর হবে।
তালিকাভুক্ত কোম্পানির ওয়েবসাইট না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৫ শতাংশের ওয়েবসাইট নেই বা কাজ করে না। এছাড়া ওয়েবসাইট থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৭ শতাংশের সর্বশেষ আর্থিক হিসাব নেই। অথচ এগুলো থাকা বাধ্যতামূলক। কারণ একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগের জন্য ওই কোম্পানির ওয়েবসাইটসহ অন্যান্য তথ্য থাকা উচিত।
তিনি বলেন, ৩২টি কোম্পানির ৬২ পরিচালক মারা গেছেন। কিন্তু ওই কোম্পানিগুলোর ওয়েবসাইটে তার আপডেট নেই। এসবের কারণে বিনিয়োগকারীরাও সঠিক তথ্য পাচ্ছে না।
মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে আইপিও আসে উল্লেখ করে বিএসইসির কমিশনার বলেন, বিনিয়োগকারীরা তাদের ওপর আস্থা রেখে বিনিয়োগ করে থাকে। সে ক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিডিং প্রাইস যদি ১২ টাকা থেকে ৭৬৫ টাকা পর্যন্ত হয়, তাহলে বিষয়গুলো বিএমবিএ’র দৃষ্টিগোচর হওয়া উচিত।
শেখ সামসুদ্দিন বলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর পোর্টফোলিওতে যে তথ্য উপাত্ত আছে, তা সঠিক বলে মনে হয় না। একটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ শেয়ারবাজারের বাহিরে অন্যত্র বিনিয়োগ করতে পারে। কিন্তু সেই অন্যত্র বিনিয়োগের ক্ষেত্রটি কোথায় বা কি, তা বিনিয়োগকারীর জানার প্রয়োজন আছে। সে জানতে পারলে হয়তো ওই মিউচ্যুয়াল ফান্ড অপছন্দ করতে পারে। যাতে করে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করতে পারবে।
বিএসইসির এ কমিশনার বলেন, আমরা তথ্য বিতরণটা সঠিকভাবে করছি না। এতে করে বিনিয়োগ ঝুঁকি বেড়ে যায়। তবে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে যৌক্তিকভাবে বিনিয়োগ করতে পারলে, তা কমে যায়।
বিএসইসি স্টক ব্রোকার এবং ডিজিটাল বুথের জন্য নীতিমালা তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন শেখ সামসুদ্দিন। এর মাধ্যমে একজন বিনিয়োগকারী যেকোনো জায়গা থেকে ঝুঁকি নিরসনের জন্য তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, করোনার পরে বিএসইসি টেকনোলজি নির্ভর অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। যেগুলো প্রমাণ করে ডিজিটালাইজড স্টক এক্সচেঞ্জ খুব উপকারি। যেমন বিভিন্ন রিপোর্ট অনলাইনে জমার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া এজিএম, ইজিএম অনলাইনে করার অনুমতি দিয়েছি। এতে ব্যয় ও সময় লাঘব হবে।
শেখ সামসুদ্দিন বলেন, টেকনোলজি জীবনকে সহজ করে দেয়। তবে অনেকেই টেকনোলজি কঠিন কাজ মনে করে। এটা কিন্তু একেবারেই তা নয়। যেমন মোবাইল ফোন দেশে আসার সময় অনেকেই ভেবেছিল কম শিক্ষিত মানুষজন এটা ব্যবহার করতে পারবে না। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। সেই প্রেক্ষাপট থেকে আমরা যদি মার্কেটটাকে ডিজিটালাইজড করতে পারি, সেটা অবশ্যই সবাই গ্রহণ করবে। এর মাধ্যমে বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে। এছাড়া ব্যয় কমে আসবে। আর মার্কেটটাও সব জায়গায় পৌঁছে যাবে। অতএব টেকনোলজিকে ব্যবহার করে কেউ লাভবান হবে না, তা কেউ আর বিশ্বাস করবে না।
বিএমবিএর সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন আকন্দ ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন অংশ নেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএমবিএর সদস্য মীর মাহফুজ উর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএমবিএর সাধারণ সম্পাদক মো. রিয়াদ মতিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।