Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ফোরামে ভাঙনের সুর!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০২০, ৮:২০ পিএম

দেশের ক্রীড়াঙ্গনে শক্তিশালী এক সংগঠনের নাম বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদ। যে সংগঠনটি ‘ফোরাম’ নামে অধীক পরিচিত। বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশনের নির্বাচনের সময় এই সংগঠনের প্রভাব থাকে চোখে পড়ার মতো। তাদের দখলে ৭২টি ভোট। যার মধ্যে ৬৪ জেলার ৬৪টি এবং আট বিভাগের আটটি। ফলে ফেডারেশনগুলোর নির্বাচনের আগে ফোরাম নেতারা বনে যান অনেকটা নীতি-নির্ধারক! বছরের পর বছর তারা একে চেটিয়া প্রভাব বিস্তার করে আসছেন দেশের ক্রীড়াঙ্গনে। তবে এবার শক্তিশালী এই সংগঠনে যেন বেজে উঠেছে ভাঙনের সুর!

গত বছর বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের (বাহফে) নির্বাচনে ফোরামের সমর্থণপুষ্ট হয়েও সাধারণ সম্পাদক পদে জিততে পারেননি বর্ষীয়ান হকি সংগঠন আব্দুস সাদেক। সর্বশেষ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচনেও কাক্সিক্ষত ফল পাননি এই সংগঠনের ছায়ায় থাকা সমন্বয় পরিষদ। বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (বিডিডিএফএ) এবং বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাব অ্যাসোসিয়েশন (বিএফসিএ) সমর্থিত ও ফোরামের আশির্বাদপুষ্ট সমন্বয় পরিষদ প্রার্থীরা সদ্য সমাপ্ত বাফুফে নির্বাচনে ২১টি পদের মধ্যে মাধ্য ছয়টি সদস্য পদে জয়ী হয়েছেন। এতেই টনক নড়েছে ফোরাম নেতাদের। ফুটবলের নির্বাচনে কাক্সিক্ষত ফল না পাওয়ায় ক্রীড়াঙ্গণের ভোটে না থাকার কথা জানিয়েছেন তারা। তবে এর আগে ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটি নিয়ে টানাপোড়েন দেখা যায়। সম্প্রতি জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের সভাপতি ও মহাসচিবের কাছে জেলা ও বিভাগের কতিপয় সংগঠকদের লিখিত এক অভিযোগ পত্রে এই টানাপোড়েন স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

অভিযোগে বলা হয়, ফোরামের নীতি-নির্ধারকদের অগোচরেই ব্যাডমিন্টনের অ্যাডহক কমিটি গঠিত হয়েছে। বিশ্বস্ত সুত্র জানায়, জেলা ও বিভাগের সংগঠকরা ৪/৫ জনের স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে বলেন, ‘গত ২৭ সেপ্টেম্বর ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটি গঠন হয়েছে। সবার অগোচরে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন বাহার ও মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন গত ১২ জুলাই সভাপতি আবদুল মালেককে ভুল বুঝিয়ে অ্যাডহক কমিটি গঠন করতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে (এনএসসি) একটি চিঠি এবং প্রস্তাবিত কমিটি জমা দেন। কমিটির নামের তালিকা দেখলেই বোঝা যায় যে, বেছে বেছে বিভিন্ন জেলার নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরকে বাদ দিয়ে, কতিপয় নাম না জানা ও ব্যাডমিন্টনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতাহীন ব্যক্তিদেরকে নিয়ে কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়। পরবর্তীতে একটু অদল বদল হয়ে সেই কমিটিই অ্যাডহক হিসাবে ঘোষণা পায়। আগের নির্বাচিত কমিটির সহ-সভাপতি চট্টগ্রামের আমিনুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ খুলনার কাজী নূর মোহাম্মদ, সদস্য শরীয়তপুরের তারিক মাহমুদ, ঠাকুরগাঁওয়ের প্রবীর কুমার গুপ্ত, মাদারীপুরের এসএম সায়েমুল হক রাসেল এবং পঞ্চগড়ের ইকবাল মনোয়ার খান চান্নাকে বাদ দেয়ার মাধ্যমে অ্যাডহক কমিটিকে প্রায় জেলা প্রতিনিধি শূণ্য করা হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন এতে ফোরামকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। এছাড়া দেশের ক্লাবগুলোকে প্রতিনিধিত্ব করা সংগঠকদেরকেও অ্যাডহক কমিটি হতে বাদ দেয়া হয়েছে।’

অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, ‘অন্যান্য ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটির মত ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের বর্তমান কমিটিতে মৃত্যু ও পদত্যাগজনিত কারণে শূন্য থাকা চারটি পদ পূরণ করে কমিটি গঠন করার প্রস্তাব দেয়াটাই সঙ্গত ছিলো। কিন্তু বাহার ও আলমগীর বিভিন্ন রকম লেনদেনের মাধ্যমে তা না করে পুরো অ্যাডহক কমিটির চেহারা বদলে দিয়ে ফোরাম ও ক্লাবশূণ্য করেছেন।’ বাহার ও আলমগীরের ফোরাম বিরোধী এমন কর্মকান্ডে জেলা ও বিভাগের সংগঠকরা অত্যন্ত ক্ষুদ্ধ। চিঠি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের মহাসচিব আশিকুর রহমান মিকু বলেন,‘একটি চিঠি পেয়েছি, তবে তাতে কারো কোন স্বাক্ষর নেই।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ