এবার দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বিধবাকে দলবেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছে। লক্ষীপুরের রামগতিতে এমন ঘৃণ্য ঘটনা ঘটে। সিলেটের ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। রাঙমাটিতে বড় বোনের পর বৃদ্ধের লালসার শিকার হয়েছে ছোট বোন। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় ডাকাতদের হাতে মা ও মেয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে ৮ম শ্রেণির ছাত্রী, শ্রীপুর স্কুল শিক্ষার্থী ও গৃহবধূকে ধর্ষণ এবং মঠবাড়িয়ায় বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক শিক্ষকসহ বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ মামলায় ১২ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

লক্ষীপুর : লক্ষীপুরের রামগতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে এক বিধবা নারীকে (৩৮) দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। পরে ওই নারীকে হাত-পা ও চোখ-মুখ বেঁধে ঘরের পেছনে ফেলে পালিয়ে যায় ধর্ষকরা। গতকাল সকালে নির্যাতনের শিকার ওই নারী বাদী হয়ে রামগতি থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধ মামলা করেছেন। পরে দুপুরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলার চরপোড়াগাছা গ্রাম থেকে সোহেল ও জামাল নামে দুই আসামিকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার সোহেল চরপোড়াগাছা গ্রামের আবু আহম্মদের ছেলে ও জামাল একই এলাকার সৈয়দ আহম্মদের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বামী মারা যাওয়ার পর ওই নারী একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেন। ফলে তিনি বাড়িতে একাই বসবাস করেন। এ সুযোগে আসামিরা তাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। স¤প্রতি এ নিয়ে তাদের সঙ্গে বিধবা নারীর বাগবিতন্ডা হয়। তখন বিধবাকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেয়া হয়। এখনও তার হাত ও পায়ে ব্যান্ডেজ রয়েছে। এ ঘটনায় আদালতে একটি মামলা করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে শনিবার রাতে দরজা ভেঙে আসামিরা ঘরে ঢুকে পালাক্রমে ওই নারীকে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে তাকে রশি দিয়ে হাত-পা ও টেপ দিয়ে চোখ-মুখ বেঁধে ঘরের পেছনে ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়। ওই নারীর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। পুলিশ জানায়, আসামিরা গত কয়েকদিন আগে ওই নারীকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেয়। পরে ওই নারী আদালতে মামলা করেন। এর জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে ঘরে ঢুকে দলবেঁধে ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার ওই নারী বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছেন। এরই মধ্যে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সিলেট : সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে গৃহবধূকে গণধর্ষণের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত দিলাওয়ার হোসেন ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সিলেট নগরের শামীমাবাদ আবাসিক এলাকার চার নম্বর রোডের দুই নম্বর বাসায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, শামীমাবাদ এলাকার চার নম্বর রোডের দুই নম্বর বাসায় স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন এক গৃহবধূ। শনিবার সন্ধ্যায় বাসার নিচতলার ভাড়াটে দিলাওয়ার হোসেন (৩৮) তার দুই সহযোগী হারুন মিয়া ওরফে চাক্কু হারুন (৩৫) ও জামাল মিয়া ওরফে বাইড্ডা জামালকে (৩৪) নিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। গতকাল দুপুরে ওই গৃহবধূকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসিতে) ভর্তি করা হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনার খবর পেয়ে রোববার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে দিলাওয়ার হোসেন ও হারুন মিয়া ওরফে চাক্কু হারুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বাদী হয়ে সকালে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন গৃহবধূ। গ্রেফতারকৃত দিলাওয়ার শামীমাবাদ আবাসিক এলাকার চার নম্বর রোডের দুই নম্বর বাসার বাসিন্দা। তিনি সিলেট সদর উপজেলার পাইকেরগাঁওয়ের লাল মিয়ার ছেলে।

রাঙামাটি : বৃদ্ধের লালসার শিকার কিশোরী দুই বোন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক বৃদ্ধ হারুনুর রশিদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার ইসলামপুরের মধ্য-পাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১১ বছরের প্রতিবন্ধী কিশোরীকে রবিবার সকালে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে মধ্য-পাড়া এলাকার আতাহার আলীর ছেলে হারুনুর রশিদ (৮০)। প্রতিবন্ধীর মা বাদী হয়ে নানিয়ারচর থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ ধর্ষক হারুনুর রশিদকে গ্রেফতার করে। ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর মা জানান, তিন বছর আগে তার বড় মেয়েকে ধর্ষণ করে কৃষক হারুনুর রশিদ। সে সময় হাতেনাতে ধরাও পড়েন তিনি। তখন বড় মেয়ের বয়স ছিল ১০ বছর। সে সময় গ্রাম্য শালিসে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। ধর্ষককে দশ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। সেই একই লোক গত রোববার সকালে বাসায় কেউ নেই জেনে তার ১১ বছরের প্রতিবন্ধী কিশোরীকেও ধর্ষণ করে।

হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় ডাকাতদের হাতে মা ও মেয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চুনারুঘাটের রানীগাঁও ইউনিয়নে গত শুক্রবার ভোররাতের ঘটনায় গতকাল রবিবার বিকেলে গ্রেফতারকৃতরা হলেন উপজেলার জীবধর ছড়া গ্রামের সফিক মিয়ার ছেলে শাকিল মিয়া (২৬) এবং রেজাক মিয়ার ছেলে হারুন মিয়া (২৮)। এ ব্যাপারে গত শনিবার রাতে চুনারুঘাট থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো তিন-চারজনকে আসামি করে মামলা করেন ভুক্তভোগী মেয়েটি। স্থানীয় সূত্র জানায়, কিছু যুবক রানীগাঁওয়ে একটি ঘরে ঢুকে এক নারী (৪৫) ও তাঁর মেয়েকে (২৫) মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে। পরে তারা ঘরে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নিয়ে যায়।

নারায়ণগঞ্জ : বন্দরে ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৫) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাড়িতে একা পেয়ে কোমলপানীয়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করিয়ে ছাত্রীর মামাতো ভাই (২১) তাকে ধর্ষণ করে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। গত শনিবার রাতে বন্দরের বক্তারকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে রোববার রাতে বন্দর থানায় মামলা করেছেন। ধর্ষিতার মা জানান, তিনি মেয়েকে দাদির কাছে রেখে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বাবার বাড়ি চাঁদপুর যান। বাড়িতে একা পেয়ে শনিবার রাতে কোমলপানীয়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করিয়ে অচেতন করে মামাতো ভাই মেয়েটিকে ধর্ষণ করে।

কুমিল্লা : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একটি কোচিং সেন্টারে তারেকুর রহমান নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। একাধিকবার ধর্ষণে ওই ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। গত রোববার এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩নং আদালতে অভিযুক্ত শিক্ষকসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ৩নং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রফিকুল ইসলাম অভিযোগের বিস্তারিত শুনানির পর মামলাটি আমলে নিয়ে চৌদ্দগ্রাম থানাকে তদন্তসহ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার আদেশ দেন। অভিযুক্ত শিক্ষক তারেকুর রহমান চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের ল²ীপুর গ্রামের মৃত রেজাউর রহমান চৌধুরীর ছেলে।

শ্রীপুর (গাজীপুর) : গাজীপুরের শ্রীপুরে এক স্কুল শিক্ষার্থী ও গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গত রোববার দিবাগত রাতে পৃথক ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। গতকাল সকালে দু›জন ভিকটিমকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। শিক্ষার্থী ধর্ষণে অভিযুক্ত অটোরিকশা চালক মো. রুমান মিয়া (৩০) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ। ধর্ষক রুমান মিয়া উপজেলার বরমী ইউনিয়েেনর সাতখামাইর গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে ।

অপরদিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রাম থেকে এক গৃহবধূকে প্রাইভেটকার যোগে তুলে নিয়ে কক্সবাজারে হোটেলে রেখে ১৫দিন ধরে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলা সূত্রে জানাযায়, তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের মো: রইস উদ্দিনের ছেলে জাহিদ হাসান জোর করে গৃহবধূ (২৫) কে তুলে নিয়ে কক্সবাজার হোটেলে অবরুদ্ধ করে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে ১৫ দিন পর গৃহবধূকে পাশ্ববর্তী কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া গভীর জঙ্গলে ফেলে চলে যায়। গৃহবধূর পরিবার স্থানীয় ফুলবাড়িয়া লোকজনের সহযোগিতায় উদ্ধার করে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন ধর্ষিত ঐ নারী।

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার পূর্ব পতপকাটা গ্রামের গৃহবধূ মোসা. ডলি বেগম (৪৫) পারিবারিক তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে তাকে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে গতকাল ৩ জন নামীয় এবং অজ্ঞাত ৩ জনের বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া থানায় একটি মামলা করেছেন। আহত ডলি বেগম ওই গ্রামের মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদারের স্ত্রী।