Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আরো ৩ আসামির স্বীকারোক্তি

এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ তারেক-মাসুমের ডিএনএ সংগহ

ফয়সাল আমীন | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৯ এএম

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ মামলায় আরো ৩ আসামি ধর্ষণে নিজেদের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেছে আদালতে। ৫ দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল (শনিবার) আদালতে হাজির করার পর এ স্বীকারোক্তি দেয় তারা। এছাড়া কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণের ঘটনায় গতকাল আরও দুই আসামির ডিএনএর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এদিকে, ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তিসহ টিলাগড় এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি ও সিসি ক্যামেরা বসানের দাবিতে বিশাল মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় পঞ্চায়েতবাসী।

আদালতে আরো ৩ আসামির দায় স্বীকার : এমসি কলেজের গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত হিসেবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে এজহারনামীয় আসামি শাহ মাহবুবুর রহমান রনি। এছাড়া সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতারকৃত আসামি রাজন চৌধুরী রাজু ও মো: আইনুদ্দিন। এর মধ্যে রাজন চৌধুরী সিএমএম- ১ এর অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুল ইসলামের আদালতে। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতের বিচারক শারমিন খানম নীলার কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন আসামি মাহবুবুর রহমান রনি ও মো. আইনুদ্দিন।

৫ দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল দুপুর ১২ টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আসামি েেদর আদালতে হাজির করেন শাহপরান থানা পুলিশ। এর আগে একই মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর ও রবিউল ইসলাম। এদিকে রিমান্ডে থাকা বাকি দুই আসামি তারেকুল ইসলাম তারেক ও মাহফুজুর রহমান মাসুমের ৫ দিনের রিমান্ড শেষ হবে আজ (রোববার)। এ দুই আসামিকেও স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি গ্রহণে আদালতে তোলা হতে পারে আজ। গণধর্ষণে নিজদের সর্ম্পৃক্ততার স্বীকার করেছেন ৩ আসামি বলে জানিয়েছেন মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারি কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী। গতকাল সন্ধ্যা ৬ টায় আদালত প্রাঙ্গণে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ।

আরো ২আসামির ডিএনএ সংগ্রহ : এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ মামলার এজহারনামীয় আসামি তারেকুল ইসলাম তারেক ও মাহফুজুর রহমান মাসুমের ডিএনএর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গতকাল দুপুর সোয়া ১২টায় তাদের হাসপাতালে নেয়া হয় পুলিশ পাহারায়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) ল্যাবে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম, শাহ মো. মাহবুবুর রহমান ওরফে শাহ রনি, রাজন চৌধুরী ও মো: আইনুদ্দিনের সংগ্রহ করা হয় ডিএনএ নমুনা। মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোতির্ময় সরকার জানান, এর আগে ৬জনের ডিএনএ নমুনা নেওয়া হয়েছিল। এজাহারভুক্ত অপর দুই আসামির নমুনা সংগ্রহ করা হলো এবার।

টিলাগড় পঞ্চায়েতবাসীর মানববন্ধন : এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের প্রতিবাদ ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে টিলাগড় পঞ্চায়েতবাসী। সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের আহ্বানে সিসিকের ২০, ২১, ২৪ নং ওয়ার্ড ও টুলটিকর ইউনিয়নবাসীর উদ্যোগে গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের সামনে পালিত হয় এ কর্মসূচি। মানববন্ধনে বক্তারা এমসি কলেজ ও আশপাশ এলাকা থেকে অপরাধ নির্মূলের জন্য টিলাগড় এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন ও পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা প্রয়োজনীয়তা তোলে ধরে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাবস্থায় ছাত্রাবাস খুলে দিয়ে অপরাধীদের অবস্থানের সুযোগ করে দেওয়ায় কলেজের অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারের অপসারণ দাবি করেন বক্তারা।

মানববন্ধনে নিজস্ব ব্যানার নিয়ে শতাধিক রাজনৈতিক, সামাজিক, ক্রীড়া সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এলাকার কয়েক হাজার লোক অংশ নেন। টিলাগড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লী অধ্যাপক সৈয়দ মকসুদ আলীর সভাপতিত্বে ও মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুবেদুর রহমান মুন্নার পরিচালনায় মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, কাউন্সিলর আবদুর রকিব তুহিন, সিসিকের সাবেক প্যানেল মেয়র মো. শাহজাহান, শাপলাবাগ বহুমূখী উন্নয়ন সমিতির সভাপতি ও জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, শিল্পপতি আতাউল্লাহ সাকের, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ছানাউল্লাহ ফাহিম, টিলাগড় পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছমর উদ্দিন মানিক, দৈনিক সিলেটের ডাকের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ওয়াহিদুর রহমান ওয়াহিদ, টুলটিকর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম আলী হোসেন, সিলেট জেলা ফুটবল খেলোয়াড় কল্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম জাকারিয়া চৌধুরী শিপলু, জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন জামিল আহমদ দুলাল, সাবেক জাতীয় জুনিয়র ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন খায়রুল ইসলাম অপু প্রমুখ।



 

Show all comments
  • মোঃ দুলাল মিয়া ৪ অক্টোবর, ২০২০, ১:২২ এএম says : 0
    যদি আইন থাকে বাংলাদেশে তবে সুস্থ বিচার করা জরুরি। আমার মতে (1)এদের পুরুষ অংগে ইনজেকশন দিয়ে শাস্তি দেয়া (2)জাবজীবন কারাদণ্ড দেওয়া এবং সবাই কে 5লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা।আর পকিরনি হলে গুলিকরে মেরেপেলা।
    Total Reply(0) Reply
  • Neamat Ullah ৪ অক্টোবর, ২০২০, ৬:১১ এএম says : 0
    Hang all culprits
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গণধর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ