Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী শিক্ষা না থাকায় ধর্ষণ বেড়েই চলছে

জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৫ এএম

ইসলামী শিক্ষা ও অনুশীলন না থাকার কারণেই সমাজে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ বেড়েই চলছে। সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের ঘটনা সামাজিক মর্যাদাকে ম্লান করে দিয়েছে। ইসলামী শিক্ষার অভাবে সন্তানদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। সমাজ, দেশ, রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে হলে ইসলামী জ্ঞানার্জন, কৃষ্টিকালচারের চর্চা এবং অনুশীলনের বিকল্প নেই। রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে গতকাল জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমামরা এসব কথা বলেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদগুলোতে উপচেপড়া ভিড় পরিলক্ষিত হয়। নগরীর মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজমেও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন, ইসলামের শিক্ষা ও অনুশীলন না থাকার কারণেই সমাজে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ বেড়েই চলছে। সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ধর্ষণের ঘটনা সমাজিক মর্যাদাকে ম্লান করে দিয়েছে। পেশ ইমাম বলেন, আগামী ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিশু ও শিক্ষক দিবস। ইসলামের দৃষ্টিতে সন্তানদের প্রতিপালনে মা-বাবার ভ‚মিকা সবচেয়ে বেশি। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভ‚মিকাও কম নয়; পড়া লেখার পাশাপাশি সন্তানদের মানবিক মূল্যবোধ ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য পূর্ণমাত্রায় বিকশিত করার লক্ষ্যে শিক্ষকদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করতে হবে। ইসলামী শিক্ষার অভাবে সন্তানদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। আল্লাহপাক সকল সন্তানদের উত্তম আদর্শবান হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমীন!

ঢাকার ডেমরার দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসা জামে মসজিদের ইমাম ও খতীব মাওলানা মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জুমার বয়ানে বলেন, মানুষ যদি আল্লাহ তা’য়ালার ওলী তথা প্রিয়পাত্র হতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি নফল ইবাদত করতে হবে। সহিহ আল বুখারীতে হাদিসে কুদসিতে এসেছে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত করতে থাকে আমার নৈকট্য লাভের জন্য, পরিশেষে আমি তাকে ভালোবাসি অর্থাৎ তাকে আমার ওলী বানিয়ে নেই। যখন তাকে আমি ভালোবাসি তখন আমি তার কান, চোখ, হাত, পা নিয়ন্ত্রণ করি। অতপর (অবস্থা এমন হয়ে যায় যে) সে যদি আমার কাছে কোন প্রার্থনা করে তখন আমি তা অবশ্যই কবুল করি। সে যদি আমার কাছে কোন কিছু থেকে আশ্রয় চায়, আমি তাকে আশ্রয় দেই।
নফল ইবাদতের দ্বারা কিয়ামতে বান্দার ফরজের ঘাটতি পূরণ করা হবে। মুসলিম শরিফের হাদিসে এসেছে, কিয়ামতের দিন যখন বান্দার ফরজ ইবাদতে ঘাটতি দেখা দিবে তখন আল্লাহ তা’য়ালা ফেরেস্তাদেরকে বলবেন, দেখতো আমার বান্দার কোন নফল ইবাদত আছে কিনা? অতপর তা দ্বারা তার ফরজের ঘাটতি পূরণ করা হবে। এভাবে সকল ইবাদতের ঘাটতি নফল দ্বারা পূরণ করে বান্দাকে জান্নাতে দেয়া হবে।

পেশ ইমাম বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন বার রাকাত নামাজ নিয়মিত আদায় করবে তার জন্য জান্নাতে ঘর বানানো হবে। আর তা হলো জোহরের নামাজের আগে চার রাকাত ও পরে দুই রাকাত, মাগরিবের পরে দুই রাকাত, ঈশার পরে দুই রাকাত ও ফজরের পূর্বে দুই রাকাত। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, ফজরের পূর্বের দুই রাকাত নামাজ দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছু থেকে উত্তম।

রাজধানীর চকবাজার ইসলামবাগ বড় মসজিদের খতীব শাইখুল হাদীস মাওলানা মন্জুরুল ইসলাম আফেন্দী গতকাল জুমার বয়ানে বলেছেন, পবিত্র কুরআনের সূরা ফাতেহার ২৯ নম্বর আয়াতের শুরুতে মহান আল্লাহ এরশাদ করেছেন, মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসূল এবং তার সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভ‚তিশীল। যেহেতু হযরত রাসূলে আকরাম (সা.) এর পর পৃথিবীতে আর কোন নবী-রাসূল আসবেন না, যেহেতু উম্মতের জন্য তিনি পবিত্র কুরআনের সাথে সাথে স্বীয় সাহাবীগণকেও নমুনা হিসেবে রেখে যাবেন তাই পবিত্র কুরআনও সাহাবায়ে কেরামের গুণাবলী বর্ণনা করে মুসলমানদেরকে তাদের অনুসরণ-অনুকরণে উদ্বুদ্ধ করেছে। এই আয়াতেও তাদের গুণাবলীর বর্ণনা এসেছে। এই গুণাবলীর মধ্যে সর্বাগ্রে উল্লেখিত গুণটি হল তারা কাফেরদের মোকাবেলায় কঠোর এবং নিজেদের বেলায় পরস্পর সহানুভ‚তিশীল ছিলেন। কাফেরদের প্রতি তাদের কঠোর মনোভাব সর্বক্ষেত্রে প্রমাণিত হয়েছে। সেই সাথে নিজেদের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহানুভ‚তি ও ভালোবাসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্তও তারা স্থাপন করেছেন। বর্তমান যুগে আমাদের মাঝে সাহাবায়ে কেরামের এই ঈমানী গুণের বড় অভাব রয়েছে। খতীব বলেন, বন্ধুত্ব ও শত্রুতা কোনটাই নিজের জন্য না হয়ে আল্লাহর জন্যই হতে হবে। হাদীস শরীফে এসেছে ‘যে ব্যক্তি তার ভালবাসা ও শত্রুতা আল্লাহর ইচ্ছার অধীনে ন্যস্ত করে দেয় সে তার ঈমানকে পূর্ণতা দান করে’।



 

Show all comments
  • md anwar ali ৩ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৪৯ এএম says : 0
    এখনো ভাল আছে, আমাদেরকে স্কুলের ন্যায় কলেজ পর্যায়েও ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Jack Ali ৩ অক্টোবর, ২০২০, ১:০৮ পিএম says : 0
    Our beloved country is ruled by the enemy of Allah as such all the heinous crimes are committed by everybody. O'Muslim in Bangladesh wake up and repent your sin to Allah and establish the Law of Allah. If you don't want the Law of Allah then wait for the severe punishment which is waiting for you when you die.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ