পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অক্টোবরের শুরুতে পটুয়াখালীর পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহের জন্য প্রস্তুত। ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদানের লক্ষ্যমাত্রার পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরুর চার বছরের মধ্যেই জাতীয় গ্রিডে চলতি বছরের ১৫ মে প্রথম ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ করে।
পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, অক্টোবর মাসের শুরুতে পুরোপুরি বাণিজ্যিকভাবে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন বিসিপিসিএল কর্তৃপক্ষ। ইপিসি কনট্রাক্টরের সাথে পারফরমেন্স গ্যারান্টি টেস্ট চলতি মাসেই সম্পন্ন হওয়ার কথা। সামনের পুরো ১ মাস ধরে চলবে রিলাইবেলিটি রান টেস্ট প্রক্রিয়া। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই পিডিবির সাথে ক্যাপাসিটি টেস্টের সফলতার পর বাণিজ্যিক উৎপাদনের তারিখ ঘোষণা হবে। যেহেতু পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন পুরোপুরি উৎপাদনে সক্ষম, তাই আশা করা যাচ্ছে পিডিবির সাথে সফল ক্যাপাসিটি টেস্টের পরে সিওডি (কমার্শিয়াল অপারশেন ডেইট) ঘোষণার মাধ্যমে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. পিঞ্জুর রহমান।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জোবায়ের আহমেদ বলেন, দ্বিতীয় ইউনিট থেকে এ বছরের ২৬ আগস্ট পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করা হয়। ১০ দিনের মধ্যেই চলতি সেপ্টম্বর মাসের ৬ তারিখ চুক্তি অনুযায়ী পূর্ণ ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করেন পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এদিকে আবহাওয়া খারাপ থাকার জন্য বিদ্যুতের ডিমান্ড না থাকায় ফুল লোড টেস্ট কিছুটা ব্যাহত হয়। তবে দুটি ইউনিটই আলাদাভাবে তাদের উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে ইতোমধ্যে সরবরাহ করেছে। দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদিত বিদ্যুৎ পিডিবির সাথে সফল ক্যাপাসিটি টেস্টের সিওডি ঘোষণার পরে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন।
পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহের জন্য পটুয়াখালীর পায়রা থেকে পটুয়াখালী সদর হয়ে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলা পর্যন্ত আগেই ১৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ডাবল সার্কিটের হাই ভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইন টানা হয়েছে।
পরিচ্ছন্ন কয়লা প্রযুক্তিসম্পন্ন পরিবেশবান্ধব (আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজির মাধ্যমে) দেশের বৃহত্তম কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি এবং চায়না সিএমসির ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের বিদ্যুৎ প্রকল্পটিতে বাংলাদেশ এবং চীনের সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে। এক হাজার একর জমির ওপর নির্মিত পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য দৈনিক ১৩ হাজার টন কয়লা ব্যবহৃত হচ্ছে। আর এ কয়লা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সরসারি আমদানি করে কেন্দ্রের নিজস্ব জেটিতে খালাস করা হচ্ছে।
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় বাংলাদেশের নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) মধ্যে যৌথ উদ্যোগের চুক্তি হয়। পরে গঠিত হয় বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড।
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে ‘পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র’ নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। যৌথ উদ্যোগের ওই কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় পায়রার এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে চীনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এনইপিসি ও সিইসিসি কনসোর্টিয়াম। চীনের এক্সিম ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। এ জন্য এক হাজার ২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ১৩৫ পরিবারকে ১৬ একর জমির ওপরে ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ নামে আবাসিক পল্লী নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী নিজে উপস্থিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের হাতে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাণিজ্যিক উৎপাদন যাত্রা শুরুর মধ্য দিয়ে সরকার উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করতে যাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।