Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাহবুবে আলমকে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে দাফন করা হয়েছে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। গতকাল সোমবার দুপুরে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন সুপ্রিম কোর্ট জামে মসজিদের পেশ ইমাম আবু সালেহ মো. সলিম উল্লাহ। পরে তার দীর্ঘ দিনের সহকর্মী, বিভিন্ন সংগঠন এবং প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তার কফিনে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। জানাজায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিগণ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নেতাসহ দেশের বিভিন্ন বারের আইনজীবী ও শুভাকাক্সক্ষীরা অংশ নেন।
পরে মাহবুবে আলমের কফিনে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এছাড়া প্রধান বিচারপতি, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, পুলিশের (মহাপরিদর্শক) আইজি, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার রূহুল কুদ্দুস কাজলসহ অন্যান্য নেতা, ঢাকা (বার) আইনজীবী সমিতি, আইন, মানবাধিকার ও সংবিধান বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন সমিতি, গণতান্ত্রিক আইনজীবীর নেতাসহ বিভিন্ন সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম। গতকাল সকালে বেইলি রোডস্থ সরকারি বাসায় তার লাশ আনা হয়। সেখান থেকে সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে লাশবাহী গাড়ি তার প্রিয় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে নিয়ে যায়।
জ্বর ও গলাব্যথা নিয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর তিনি সিএমএইচে ভর্তি হন। ওই দিনই করোনা পরীক্ষা করালে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সুপ্রিম কোর্ট বারের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানাধীন মৌছান্দ্রা গ্রামে ১৯৪৯ সালের ১ ফেব্রæয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন। ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি তৎকালিন প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহমেদ তাকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে সাংবিধানিক এ পদে নিয়োগ দেন। এর আগে তিনি সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ (অনার্স) এবং পাবলিক প্রশাসনে এমএ পাস করেন। ১৯৭৯ সালে নয়াদিল্লিতে সংবিধান এবং সংসদীয় গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইসিপিএস) থেকে সাংবিধানিক আইন এবং সংসদীয় প্রতিষ্ঠান বিষয়ে দুটি ডিপ্লোমা ডিগ্রি নেন। এর আগেই তিনি ১৯৭৫ সালে হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে পেশায় আত্মনিয়োগ করেন।
এর ধারাহিকতায় ১৯৮০ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অ্যানরোলড হোন। ১৯৯৯ সালে সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৪ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৫-২০০৬ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি নির্বাচিত হন। এর আগে ১৯৯৩-১৯৯৪ সালে তিনি একই বারের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পদাধিকার বলে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যানও তিনি। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুন্সিগঞ্জ-২ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়নও চেয়েছিলেন। মাহবুবে আলম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, জাতীয় চার নেতা হত্যা, সংবিধানের এয়োদশ ও ষোড়শ সংশোধনীসহ ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ মামলায় সরকারপক্ষীয় আইনজীবী হিসেবে আইনি লড়াই করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শহীদ

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১০ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ