মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা কমার আপাতত কোনও লক্ষণ নেই। প্যাংগং, দোপসাংসহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে চীনা সেনা নড়বে না বলেও মনে করা হচ্ছে। তাই সীমান্ত রক্ষায় আসন্ন শীতকালেও লাদাখে সেনা মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। ইতিমধ্যেই তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। সেনা সূত্রে খবর, ভারতীয় সেনা বাহিনী চার থেকে পাঁচ মাসের জন্য রসদ মজুত করেছে পূর্ব লাদাখ সেক্টরের উচ্চ এলাকাগুলিতে। খাবার, জ্বালানি, গোলাবারুদ, ট্যাঙ্কসহ ভারী অস্ত্রও মজুত করা হয়েছে।
আগস্ট মাস থেকেই পূর্ব লাদাখ সীমান্তের বেশ কয়েকটি এলাকায় আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই পরিস্থিতি প্রতিকূল হয়ে পড়ে। আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখেই ভারতীয় সেনা বাহিনী জুলাই মাস থেকেই পূর্ব লাদাখ সীমান্তে প্রয়োজনীয় রসদ মজুত করার ওপর জোর দিয়েছিল। সেনা সূত্রের খবর, এই কাজটি বিশেষভাবে তদারকি করেছিলেন সেনা প্রধান এমএম নরাভানে। লজিস্টিক অপারেশনের অংশ হিসেবে টি-৯০ ও টি-২২ ট্যাঙ্ক, আর্টিলারি বন্দুক চুসুল, ডেমচেক সেক্টরের সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে পাঠান হয়েছে। ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায় ফরওয়ার্ড এলাকাগুলিতে সেনা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার, পোষাক, তাবু, যোগাযোগের সরঞ্জাম, জ্বালানি, হিটার পাঠানো হয়েছে। এক সেনা কর্মকর্তা জানান, স্বাধীনতার পর চলতি বছর লাদাখে সবথেকে বেশি লজিস্টিক অপারেশন হয়েছে।
প্রবল শীতকালে চীনের মোকাবেলায় ইতিমধ্যেই লাদাখে তিরিশ হাজার অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত লাদাখে বেশ কয়েকটি এলাকার তাপমাত্রা মাইনাস ২০-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে পৌঁছে যায়। কনকনে সেই ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচাতে ভারতীয় সেনা বাহিনীর জন্য ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ থেকে বিশেষ পোষাক আমদানি করা হয়েছে। সি-১৩০ জে সুপার হারকিউলিস আর সি-১৭ গ্লোবমাস্টারসহ ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রায় সমস্ত পরিবহণ বিমান ও হেলিকপ্টার কয়েক হাজার টন খাবার জ্বালানি আর অন্যান্য সরঞ্জাম পৌঁছে দিয়ে এসেছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ সীমারেখা সংলগ্ন বিমানঘাঁটিগুলিও আগামী চার মাসের জন্য সতর্ক থাকবে বলে সেনা সূত্রে খবর।
ট্যাঙ্ক ও অন্যান্য যুদ্ধযান, অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, প্রতিকূল আবহাওয়ায় বসবাসের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত কাঠামো-সহ যাবতীয় সরঞ্জামে সম্পূর্ণ বাহিনীকে সেনার পরিভাষায় বলা হয় ‘মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি’ বা সংগঠিত পদাতিক বাহিনী। পূর্ব লাদাখের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিস্তৃত সিন্ধু নদের ধার বরাবর নদী পার হওয়া, যে কোনও প্রতিবন্ধকতার মোকাবিলা করা-সহ মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি পূর্ণ রেজিমেন্টের প্রদর্শন ও মহড়া চলছে।
পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধের পুরো প্রস্তুতির দায়িত্বভার রয়েছে ভারতীয় সেনার ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোর’-এর উপর। এই বাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকা মেজর জেনারেল অরবিন্দ কপুর বলেন, ‘শুধু ভারত নয়, সারা পৃথিবীতে একমাত্র ভারতীয় সেনার ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোর’ এই রকম চরম প্রতিকূল আবহাওয়ার মোকাবিলা করেও যুদ্ধ করতে সক্ষম। এই সব ট্যাঙ্ক, যুদ্ধযান ও অস্ত্রশস্ত্রগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করা এখানে বিরাট চ্যালেঞ্জ। অস্ত্রশস্ত্র ও সেনা দুই তরফেই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে।’
মেজর জেনারেল কপুর আরও বলেন, ‘মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি বা সংগঠিত পদাতিক বাহিনী ভারতীয় সেনার মধ্যেই আরও এক ধাপ উন্নত বাহিনী। দ্রুত বহনযোগ্য গোলাবারুদ ও মিসাইল ভান্ডার থাকায় এই বাহিনী অন্যান্য বাহিনীর তুলনায় বেশি সময় ধরে যুদ্ধ করতে পারে। সংগঠিত বাহিনীর সদস্যরা প্রায় সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র চালাতে সক্ষম।’ তিনি জানিয়েছেন, বিশেষ শীতের পোশাক-সহ যাবতীয় প্রশিক্ষণের পর বাহিনীর মনোবল তুঙ্গে। খুব অল্প সময়ের নির্দেশেও দ্রুত দায়িত্ব পালনে তারা প্রস্তুত। মেজর জেনারেল কপুর বলেন, ‘পুরো শীতকাল জুড়েই এই প্রক্রিয়া চলবে।’
সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, তীব্র ঠান্ডার মধ্যেও বসবাসের উপযোগী অস্থায়ী বাসস্থান তৈরিতেও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে। আনা হয়েছে আগে থেকে তৈরি করে রাখা কাঠামো, যা খুব কম পরিমাণ সিমেন্ট বালি ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে। বাথরুম, রান্নাঘর-সহ আধুনিক বসবাসের মতো প্রায় সব কিছুই থাকছে। বিনোদনের জন্য প্রতিটি কোম্পানির জন্য থাকছে সেট টপ বক্স কানেকশন-সহ একটি করে টিভি। সূত্র: টিওআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।