পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাড়ি চলক আব্দুল মালেকের সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষকদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছেন। অনেক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে সখ্যতা-অনৈতিক সম্পর্কের মাধ্যমে শত কোটি টাকা মালিক হয়েছে তিনি। এসব ব্যক্তির সঙ্গে দহরম-মহরম থাকায় তিনি হয়ে উঠেছিলেন অপ্রতিরোধ্যে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করলেও মালেকের পৃষ্ঠপোষক এবং সহযোগীরা এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এদের আইনের আওতায় না আনায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। একটি সংস্থার সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
মালেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন- একটি সংস্থার এমন একজন কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মালেক জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের পাত্তাই দিতেন না তিনি। কখনও প্রভাব খাটিয়ে, আবার কখনও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে লোকজনকে চাকরি দিতেন। পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনকে চাকরি দিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন মালেক। শুধু তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ কিংবা বদলি করেই নয়, প্রভাবশালী মহলের মাধ্যমে তিনি চিকিৎসকদের বদলি করেও কামিয়েছেন বিপুল অঙ্কের টাকা।
ওই সূত্র আরও জানায়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অবৈধ অর্থ সংগ্রাহক ছিলেন গাড়িচালক মালেক। চালকদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট চক্র। তাকে বা তার ঘনিষ্ঠ কোনো চালককে বদলি করা গেলে তাকে ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতেন। অধিদফতরে বেশিরভাগ সময়ই কর্মকর্তাদের বিকেল ৫টার পরও কাজ করতে হয়। অফিস সময়ের বেশি কাজ করলে গাড়িচালকরা ওভারটাইম পেয়ে থাকেন। কিন্তু ওভারটাইমের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে টাকা দিতে হতো মালেককে। আর কেউ সেটা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ওভার টাইমের বিলে স্বাক্ষর করতেন না। তাকে নিয়মিতভাবে চাঁদা দিয়ে পরিশ্রমের টাকা নিতে হতো। স্বাস্থ্য অধিদফতরে ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে সংগঠন তৈরি করে তার সভাপতি হন মালেক। আর সে ক্ষমতা দিয়ে ড্রাইভারদের ওপর একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেন তিনি। ড্রাইভারদের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন কর্মকর্তা জানান, একবার একজন মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পরপরই গাড়িচালক মালেকের নেতিবাচক কর্মকান্ড সম্পর্কে জানতে পারেন। এ কারণে তিনি মালেককে একটি দিনের জন্যেও তার গাড়ি চালাতে দেননি। কয়েকবার তাকে অন্যত্র বদলির উদ্যোগও নিয়েছিলেন এই পরিচালক, কিন্তু মানসম্মান হারানোর ভয়ে বদলির সাহস করেননি।
কী কারণে সাহস করেননি, জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, নানা অনিয়মের অভিযোগে ওই কর্মকর্তার নির্দেশে কয়েকজন চালককে বদলি করা হলে মালেক তাদের তিন মাসের মধ্যে ফিরিয়ে আনবেন বলে একজন পরিচালককে চ্যালেঞ্জ করেন। তিন মাসের মধ্যে প্রভাবশালী মহলের সুপারিশে সেই চালকরা অধিদফতরে বদলি হয়ে আসেন। চালকরা যদি এভাবে কর্মকর্তাদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বদলি হয়ে চলে আসেন, তাহলে মানসম্মান আর থাকে কোথায়? এ কারণে কৌশলে গাড়িচালক মালেককে এড়িয়ে গেছেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর ভোরে র্যাব-১ এর একটি দল তুরাগ থানাধীন কামারপাড়ার বামনেরটেক এলাকার বাসা থেকে আবদুল মালেককে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার করার সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ টাকার জাল নোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল জব্দ করা হয়। ২ মামলায় সাতদিন করে মোট ১৪ দিন রিমান্ডে নেয়া হয়েছে তাকে। অবৈধ অস্ত্র, জাল নোটের ব্যবসা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন মালেক। সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ভিত্তিতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় র্যাব। রাজধানীর তুরাগে গাড়িচালক আবদুল মালেকের রয়েছে ২৪টি ফ্ল্যাটবিশিষ্ট সাততলার দুটি বিলাসবহুল বাড়ি। একই এলাকায় ১২ কাঠার প্লট। এছাড়া হাতিরপুলে ১০তলা ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। মালেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রশাসনকে জিম্মি করে চিকিৎসকদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতেন তিনি। চিকিৎসকদের বদলি-পদোন্নতিতেও ছিল তার হাত। নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে তদবিরের নামে-বেনামে আদায় করেছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। যার বদৌলতে অল্প দিনেই শতকোটি টাকারও বেশি অর্থ-সম্পদের মালিক এই মালেক ড্রাইভার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।