Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘কোনো চাপের কারণে নির্বাচন থেকে সরে যাইনি’

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৭:৫৫ পিএম

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বহুল আলোচিত নির্বাচনে না থেকেও আছেন সাবেক তারকা ফুটবলার ও বাফুফের তিনবারের নির্বাচিত সহ-সভাপতি বাদল রায়। কারণ নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেও ১২ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে নির্দিষ্ট সময়ে পরে বাদল রায়ের আবেদন বাফুফের নির্বাচন কমিশনে পৌঁছে। ফলে বিধি মতে সভাপতি পদে তার প্রার্থীতা বহাল থাকে। তাই আগামী ৩ অক্টোবর হতে যাওয়া বাফুফে নির্বাচনের ব্যালট পেপারে বাদলের নাম ঠিকই থাকছে বলে পরের দিন ঘোষণা দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন। তার ভাষ্যে, সভাপতি পদে জমা দেয়া মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করতে বাদলের ঘন্টাখানেক বিলম্ব হয়েছে। তাই নির্বাচন কমিশনে তা প্রহণ হয়নি। তবে বাদল রায় নির্বাচন থেকে সরে গেলেও তার শুভাকাঙ্খী ও সমর্থকরা তার জন্য ঠিকই ভোট চাইছেন। যে কারণে তিনি এবার আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে নিজের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের কথা মিডিয়ার মাধ্যমে তার সমর্থকদের জানালেন। শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাদল রায় জানান, কোনো ব্যাক্তি বিশেষের চাপে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াননি তিনি। নিজের শারীরিক অসুস্থ্যতাই তাকে নির্বাচনে থাকতে দেয়নি। বাদল রায় বলেন, ‘অনেকে মনে করছেন আমার ওপর চাপ আছে। আসলে কোনো চাপ নয়। নিজের কাছেই আমার চাপ। কোনো চাপের কারণে নির্বাচন থেকে সরে যাইনি আমি। আসলে আমি তৃণমূলের সংগঠকদের নিয়ে বেশি ভাবি। তারা খুব অসহায়। নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার কারণে তাদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি কাউন্সিলরদের অনুরোধ করবো, আপনারা চিন্তাভাবনা করে ভোট দেবেন। আমি চাই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে শক্তিশালী কমিটি আসুক। এমন কাউকে ভোট দিয়েন না যারা ফুটবলের জন্য কাজ করবে না।’ এর আগে স্বামীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়ার পর বাদলের স্ত্রী মাধুরী রায় বলেছিলেন, কোনো কাউন্সিলর যেন বাদলকে ভোট না দেন।

মোহামেডানের বাদল নামেই পরিচিতি এই সাবেক তারকা ফুটবলারের। সেই প্রিয় ক্লাবে বসেই প্রায় ৬ মাস আগে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, আসন্ন বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি পদে যদি কাজী মো. সালাউদ্দিন ছাড়া অন্য কোন যোগ্য প্রার্থী না থাকেন তাহলে এই পদে বাদল রায়ই নির্বাচন করবেন। সেই মোহামেডান ক্লাবে বসেই শুক্রবার ঘোষণা দিলেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। এই ঘোষণা দিতে গিয়ে আবেগে কেঁদে ফেললেন বাদল রায়। যিনি টানা ১২ বছর বাফুফের অন্যতম সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

‘ফুটবলে কাজ করতে পারবো না’- পাশে বসা স্ত্রী মাধুরী রায়কে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে কথাটি বলেই কেঁদে ফেললেন ডাকসুর সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক মোহামেডানের বাদল। তিনি বলেন,‘ফুটবল থেকে আমাকে সরে যেতে হচ্ছে তাতে আমি খুবই কষ্ট পাচ্ছি। ফুটবলের জন্য কাজ করতেই বাফুফের সভাপতি পদে নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। অনেক কষ্ট ও দুঃখ নিয়ে আজ আপনাদের ডেকেছি। আমার অনেক কষ্ট লাগছে যে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। আমার শরীরের ওপর দিয়ে অনেক চাপ যাচ্ছে। করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠলেও এখনও শারীরিক দুর্বলতা কাটেনি। তো কিভাবে আমি নির্বাচনের ক্যাম্পিং করবো! আমার মেয়ে ও স্ত্রীসহ আতœীয়-স্বজনরা সবাই বললো-‘ইলেকশন করার দরকার নেই, তোমার ভালো থাকার দরকার। তুমি বেঁচে থাকো, আমাদের জন্য বেঁচে থাকো’। তারপরই আমি ভোট না করার সিদ্ধান্ত নিলাম।’

মনোয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন প্রসঙ্গে বাদল রায় বলেন, ‘হ্যাঁ, আবেদন করতে বিলম্ব হয়েছে। তাতে আইনগতভাবে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে সালাউদ্দিন সাহেব চাইলে এটা এড়িয়ে যেতে পারতেন। তার তো শক্তি অনেক। আমাকে কেন হয়রানি করছেন, জানি না।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ