পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন লঙ্ঘন করে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সাদা দলের শিক্ষকরা। এরমাধ্যমে শুধু ড. মোর্শেদ নয় এটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় কুঠারাঘাত করা হয়েছে। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করার আহŸান জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলায় ড. মোর্শেদ হাসান খানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়ার প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে বিএনপিপন্থী সাদা দলের শিক্ষকরা এসব কথা বলেন।
সাদা দলের আহŸায়ক প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীন মতপ্রকাশ ও মুক্তবুদ্ধির লালন ও চর্চার কেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সুমহান ঐতিহ্যটি নস্যাৎ হতে চলেছে। ১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশের ৫৬ ধারার ৩ উপধারা এবং ১ম স্ট্যাটিউটের ৪৫ ধারার ৩ উপধারা অনুযায়ী নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ, অদক্ষতা এবং চাকরিবিধি পরিপন্থী কাজের সাথে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদান করা যায়। ড. মোর্শেদ এসবের কোনটিতে অভিযুক্ত নন।
তিনি বলেন, ভিন্নমতের বক্তব্য কেবল পাল্টা বক্তব্য দিয়েই খÐন করা উচিত। কিন্তু এই সরকারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই সরকার জবাব দেয় হামলা, মামলা, খুন, গুম ও ধর্ষণের মাধ্যমে। ভিন্ন মত প্রকাশের কারণে এই সরকারের হাত থেকে রেহাই পাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি মরহুম ড. এমাজউদ্দীন আহমদও। তার বাসায় হামলা হয়েছে, বৃদ্ধ বয়সে তাকে দাঁড়াতে হয়েছে আদালতে। ভিন্ন মত প্রকাশের কারণে এই সরকারের হাত থেকে রেহাই পান নাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. একেএম ওয়াহিদুজ্জামান এ্যাপোলোও। এমন আরো অনেক উদাহরণ আছে। কেবল ভিন্ন মতের প্রতি আক্রোশের কারণেই সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে ড. মোর্শেদকে চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। আমরা এ ধরণের নজিরবিহীন ও ন্যাক্কারজনক সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করে তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. মামুন আহমেদ বলেন, কিছু মানুষের অযৌক্তিক দাবির কাছে নত হয়ে ড. মোর্শেদকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। এমন অমানবিক আচরণ কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন করতে পারে তা বিশ্বের কোনো দেশে আছে বলে বিশ্বাস করিনা। শুধু দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর কুঠারাঘাত করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে সকল শিক্ষককে প্রতিবাদ করতে হবে। শুধু ব্যাক্তি মোর্শেদ নয় এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মর্যাদার প্রতি কুঠারাঘাত।
সিন্ডিকেট সদস্য ড. মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ড. মোর্শেদ খানের একটা ছোটো লেখার কারণে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া আইনের পরিপন্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের আদেশে স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার দিয়েছে। রাজনৈতিক মতাদর্শ গ্রহণের অধিকার দিয়েছে। লেখাটির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে লেখাটি প্রত্যাহার করেছে। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত সহ নানা কার্যক্রম করেছে। চাকরি থেকে অব্যাহতি বাইরের কারো চাপে দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আদেশ ও স্ট্যাটিউট ফলো করা হয়নি। শুধু দলীয় কারণে ড. মোর্শেদকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এভাবে একদলীয়ভাবে কাউকে স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হলে ভবিষ্যতে আরো খারাপ খবর শুনতে হবে।
ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং ড. লুৎফর রহমানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, মো. আলামিন প্রমুখ।
এসময় অন্যানের মধ্যে ড. মুজাহিদুল ইসলাম, ড. এহসান মাহবুব যুবায়ের, আবুল কালাম সরকার, মো. শহীদুল ইসলাম, ড. গোলাম রব্বানী, এম এম কাউসার, মো. মিজানুর রহমান, ড. মো. সাইফুল্লাহ, ইসরাফিল প্রামানিক রতন, মো. নুরুল আমিন, মুহাম্মদ রফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।