Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সৈয়দপুরে রূপচাঁদার নামে অবাধে বিক্রি হচ্ছে মানুষখেকো নিষিদ্ধ পিরানহা

সৈয়দপুর (নীলফামারী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১:২২ পিএম

নীলফামারীর সৈয়দপুরে রূপচাঁদা মাছের কথা বলে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ মানুষখেকো পিরানহা। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বাজার মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা অসাধু কিছু সদস্যের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা, অন্যদিকে দামে সস্তা ও এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে গ্রামের বিভিন্ন হাট-বাজার এমনকি শহরেও অবাধে বিকিকিনি হচ্ছে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রাক্ষুসে ওই মাছটি। পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ আফ্রিকান মাগুরও।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার সরেজমিন ঘুরে লালছে রংয়ের তকতকে-ঝকঝকে এ মাছটি দেদারছে বিক্রি করতে দেখা গেছে। কেউ বলছেন অস্ট্রেলিয়ান, কেউ বলছেন সামুদ্রিক চাঁদা মাছ। আবার কেউ কেউ রূপচাঁদা বলে চালিয়ে দিচ্ছেন এটি। দেখতে সুন্দর, ফ্রেশ ও দামে খুব সস্তা বিধায় ক্রেতারা খুশি মনে তা কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন।
শহরের উপকন্ঠে অবস্থিত স্থানীয় ঢেলাপীর হাটে হাঁক ছাড়ছেন আব্দুস সালাম নামের মাছ ব্যবসায়ী। তার কাছে জানতে চাওয়া হল এ মাছের নাম কি। প্রত্যুত্তরে সে জানাল চাঁদা মাছ। কোন চাঁদা জিজ্ঞেস করলে সে বলে এত কিছু জানি না, সবাই বলছে তাই আমিও বলছি। আবু তালেব নামের আরেক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, নিষিদ্ধ জেনেও লাভ বেশি হওয়ায় মাছটি বিক্রি করছে তারা। তবে এ জন্য প্রতিহাটে পুলিশ ও মৎস বিভাগের দুইজনকে ৫০০ টাকা করে দিতে হয়।
শাহানাজ পারভীন নামের এক গৃহবধূ জানান, এত দামে অন্যান্য মাছ কেনা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না, তাই সস্তায় পাওয়া যায় বিধায় আমার মত অনেকেই কিনেন এ মাছ। কই কোনদিন তো কারো কাছে শুনিনি এ মাছ ক্ষতিকর ও নিষিদ্ধ। এ মাছের নাম জানেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিক্রেতারা তো বলে অস্ট্রেলিয়ান চাঁদা।
জানতে চাইলে জেলা মৎস কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান বলেন, পিরানহা মাছ রাক্ষুসে স্বভাবের। অন্য মাছ ও জলজ প্রাণীদের খেয়ে ফেলে এরা। গত ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মাছটি উৎপাদন ও বাজারজাত সম্পূণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া ২০১৭ সালে সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে কেউ যদি এ মাছের চাষ ও বাজারজাত করে তাহলে ২ বছরের জেল এবং ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন তিনি। এ বিষয়ে মাছটির ক্ষতির দিক বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর সৈয়দপুর শাখার সভাপতি চিকিৎসক নজরুল ইসলাম বলেন, মাছটি বিষাক্ত। এটি খাওয়া তো দুরের কথা কোন কারণে কামড় দিলেও মানব শরীরে চরম ক্ষতিকারক। এ মাছ খেলে নিরাময় অযোগ্য। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসিম আহমেদ বলেন, সরকারের নিষিদ্ধ ঘোষিত পিরানহা মাছ এ উপজেলায় বিক্রি হচ্ছে এমন তথ্য আমাদের কাছে নেই। কেউ জানালে অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর জন্য এলাকাবাসীর সহযোগিতা চান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ