Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাওরে স্বপ্নের সড়ক

১৩ কিলোমিটার উড়াল সড়ক প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে এলজিইডি এ মাসেই একনেকে অনুমোদনের সম্ভাবনা : থাকবে ২৮ কিলোমিটার পানিসহনীয় ডুবন্ত সড়ক উড়াল সড়ক ছাড়াও নির্মাণ করা হবে ১০৭ কিলোমিটার নান্

নূরুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

সুনামগঞ্জের বিচ্ছিন্ন হাওর এলাকায় হচ্ছে স্বপ্নের উড়াল সড়ক। হাওরের ভেতর দিয়ে সুনামগঞ্জ থেকে নেত্রকোণা পর্যন্ত যাবে এই উড়াল সড়ক। প্রায় সাড়ে ১৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই দৃষ্টিনন্দন সড়ক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। উড়াল সড়ক ছাড়াও সমস্ত হাওর এলাকাজুড়ে আরও ১০৭ কিলোমিটার নান্দনিক সড়ক নির্মাণ করা হবে। থাকবে ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুবন্ত সড়কও। পানিসহনীয় সড়কটি বর্ষায় ডুবে থাকলেও শুস্ক মৌসুমে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। এছাড়া উপজেলা সাবমারসিবল সড়ক হবে ১৩ কিলোমিটার। অল সিজন ইউনিয়ন সড়ক হবে ১৫ কিলোমিটার। উপজেলা সড়কে ২ হাজার ৯৮৭ মিটার ও ইউনিয়ন সড়কে ৬৮৫ মিটার সেতু নির্মাণ করা হবে। বিভিন্ন সড়কে থাকবে ৭৭৫ মিটার কালভার্ট। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটির প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। চলতি সময় থেকে প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৫ সালের জুন পযর্ন্ত। এর মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মশালা, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও দিরাই উপজেলা উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অধীনে আসবে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, এই মাসেই একনেকে প্রকল্পটি উঠবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, প্রকল্পটিতে অনুমোদন দিবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, হাওরের প্রকৃতি বিবেচনা করে এমন বিরল উড়াল সড়ক নির্মাণ প্রস্তাবের কাজ প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা থেকেই এসেছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে এমন পরামর্শ দেওয়ার পর আমরা এ নিয়ে কাজ করছি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে হাওর অঞ্চল পুরোপুরি ব্যবসা ও পর্যটনের জন্য খুলে যাবে। সহজেই পর্যটকরা সুনামগঞ্জে প্রবেশ করে হাওরের উড়াল সড়ক দিয়ে নেত্রকোণা হয়ে ঢাকা চলে আসতে পারবে। প্রকল্প এলাকার আশেপাশে বেসরকারি উদ্যোক্তারা হোটেল-মোটেল নির্মাণ, হাওরে ঘুরার জন্য নৌকা-স্পিডবোটসহ নানা কিছু করবে। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাওর অঞ্চল ব্যবসা ও পর্যটনের জন্য পুরোপুরি খুলে দেয়া হবে। পর্যটকদের সুযোগ সুবিধা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, সরকারিভাবে উড়াল সড়কের দুই পাশে কিছু দূর দূর আমরা কিছু ‘ইয়ূথ হোস্টেল’ করে দেব। টিনসেডের বাংলো টাইপের হোস্টেল। হাওরে দেখতেও সুন্দর লাগবে। পরিষ্কার পানি ও রান্নাবান্নার ব্যবস্থা থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়েরা হাওরের উড়াল সড়কে ঘুরতে আসবে। হাওরের বাউরি বাতাসে অবগাহন করবে তারা। তিনি বলেন, পর্যটকরা (নারী-পুরুষরা) এসব ইয়ুথ হোস্টেলে আলাদাভাবে থাকবে। নিজেরা রান্না করে খাবে। তাদের কাছ থেকে অল্প টাকা রাখা হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সুনামগঞ্জ এতদিন কুমারি ছিল। সম্পদ ও সম্ভাবনা থাকলেও সুযোগের অভাবে সুনামগঞ্জকে ব্যবহার করা যাচ্ছিল না। তাই এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সময় এসেছে উন্নয়নের। আমরা এখন সুনামগঞ্জকে খুলে দিতে চাই। যাতে সারা দেশ এখানে প্রবেশের সুযোগ পায়। ব্যবসা-বাণিজ্য পর্যটন স¤প্রসারণ হয়।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, দেশের জন্য মাইলফলক ও বিরল এমন প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা থেকে আসায় তার নামেই নামকরণের যুক্তিকথা তুলে ধরা হবে। তিনি বলেন, আমরা যখন হাওরের যোগাযোগ উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সহযোগিতা কামনা করেছিলাম তখন তিনি হাওরের প্রকৃতি বিবেচনা করে হাওরের স্বাভাবিক পরিবেশ যাতে অক্ষত থাকে এমন প্রকল্প গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছিলেন।

প্রকল্প প্রসঙ্গে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদ খান বলেন, সুনামগঞ্জ বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানের মতো নয়। হাওরের কারণে এই জেলার অধিকাংশ উপজেলা বিচ্ছিন্ন। এসব উপজেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হাওরে উড়াল সড়ক নির্মাণ পরবর্তী পর্যায়ে পরিবেশ ও সামাজিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করা হবে। উড়াল সড়কের জন্য ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হবে। হাওরের উদ্ভিদ ও প্রাণিক‚ল যাতে শব্দ দূষণের শিকার না হয় সেজন্য সড়কে শব্দ প্রতিরোধক ব্যবহার করা হবে। পরিবেশ ও সামাজিক প্রভাব নিরুপণের জন্য প্রকল্পের বিস্তারিত রাস্তার ধরণ ও রাস্তার অ্যালাইনমেন্ট, প্রস্থ, উচ্চতা, চাপ, অবস্থান নির্ণয় করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিশদ সার্ভে করা হয়েছে। সুনামগঞ্জের বিচ্ছিন্ন উপজেলা সংযোগের পাশাপাশি পযর্টনেরও বিকাশ হবে হাওরে।



 

Show all comments
  • Sheikh Farid ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ২:১০ এএম says : 0
    প্রধাণমন্ত্রীকে অনেক অনেক অনেক দোয়া রইল।ধন্যবাধ।
    Total Reply(0) Reply
  • ash ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৩:১০ এএম says : 1
    HAWR KE CHOTO GOVIR KORA WICHITH !! NET ER MOTO GOVIR KHAL KHONON KORA HOLE PANIR JEMON SHUBEBOSTHA HOBE, KRISHOK DHAN WTHPONNO BESHI KORTE PARBE, GORIB MANUSHER JOMI MILBE SHARA BOSORER JONNY, MAS O WTHPONNO HOBE KOYEK GUNNN
    Total Reply(0) Reply
  • শান্তা ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:২৪ এএম says : 0
    যথা সময়ে যেন এই প্রকল্পের কাজটি শেষ করা হয়
    Total Reply(0) Reply
  • সঞ্জয় ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:২৫ এএম says : 0
    আমাদের সরকার অনেক ভালো ভালো প্রকল্প হাতে নেয়, কিন্তু কিছু লোকের দুর্নীতির কারণে তার সুফল আমরা পাই না।
    Total Reply(0) Reply
  • তমাল ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:২৬ এএম says : 0
    আশা করি খুব শিগ্রই এই হাওরে স্বপ্নের সড়ক বাস্তবে রূপ নিবে
    Total Reply(0) Reply
  • জাহিদ ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:২৬ এএম says : 0
    এভাবে এগিয়ে যাবে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ
    Total Reply(0) Reply
  • পায়েল ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:২৭ এএম says : 0
    প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে হাওর অঞ্চল পুরোপুরি ব্যবসা ও পর্যটনের জন্য খুলে যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • নজরুল ইসলাম ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৯:৪৯ পিএম says : 0
    অবহেলিত‌ সুনামগন্জের ভাগ্য এবার খুলেছে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সড়ক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ