Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকব’

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৭:৫৯ পিএম

মাঠের মানুষ তিনি, সব সময় মাঠেই ছিলেন। টেবিলের কাজে কখনো দেখা যায়নি তাকে। সেই সাবেক তারকা ফুটবলার ও কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি পদে দাঁড়িয়েছেন! ফুটবলের মতো নির্বাচনী মাঠেও মানিক প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন বাফুফের তিনবারের নির্বাচিত সভাপতি ও বাংলাদেশ ফুটবলের প্রথম মেগাস্টার কাজী মো. সালাউদ্দিনের। এই পদের আরেক প্রার্থী সাবেক তারকা ফুটবলার ও বাফুফের তিনবারের সহ-সভাপতি বাদল রায়। তিনজনই দেশের মাঠ কাঁপানো খেলোয়াড়। নিজ ক্যারিয়ারে সালাউদ্দিন যখন ঢাকা আবাহনীর হয়ে মাঠ মাতাতেন, তখন বাদল রায় ছিলেন ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডানের তুখোর খেলোয়াড়। আর মানিক খেলতেন ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবে। খেলা ছেড়ে সালাউদ্দিন এবং বাদলকে সংগঠকের ভূমিকায় দেখা গেলেও মানিক এখনও আছেন মাঠে। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম দল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের প্রধান কোচ। তবে বাফুফে নির্বাচনে কখনও দৃশ্যপটে দেখা যায়নি তাকে। এমনকি গেল প্রায় তিন বছরের মধ্যে বাফুফের বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বিরোধী পক্ষের কোনো সভা বা কর্মসূচিতেও থাকেননি তিনি। অথচ সেই মানিকই সভাপতি পদে প্রথম মনোনয়নপত্র তুলে সবার আগে সালাউদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন।

মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিন ৭ সেপ্টেম্বর মানিকই ছিলেন চমক। পরে বাদল রায়ও তার মনোনয়নপত্র তুলেছেন, তবে তা ছিল পূর্ব ঘোষিত। সবার শেষে কাজী সালাউদ্দিন মনোনয়নপত্র তুলেন। মঙ্গলবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। এদিন বেলা ১১ টা থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে সংগ্রহকারী ৪৯ জন তাদের মনোনয়নপত্র বাফুফের নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে যদি কেউ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করেন তাহলে আগামী ৩ অক্টোবর বাফুফের নির্বাচনে ২১ পদের জন্য ৪৯ জনই লড়বেন। এদের মধ্যে সভাপতি পদে ৩, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে ২, সহ-সভাপতি পদে ৮ ও সদস্য পদের জন্য ৩৬ জন রয়েছেন।

মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে সবার আগে বাফুফে ভবনে আসেন বর্তমান সহ-সভাপতি তাবিথ আউয়াল। তিনি তার মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর একে একে বাকিরা তা জমা দেন। তবে সবার শেষে বিকেল ৪টার দিকে কাজী সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থীরা একযোগে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে শফিকুল ইসলাম মানিক জানান, বাফুফে নির্বাচনে তিনি শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকবেন। তার কথায়,‘দেশের ফুটবলের সেবা করার লক্ষ্যেই বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি পদে দাঁড়িয়েছি। কারণ চেয়ার না থাকলে কিছুই করা যায় না। আমি সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছি ভোট করার জন্যই। তাই শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকব।’

মানিক আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, ১৩৯ জন কাউন্সিলের অধিকাংশই বাফুফের মসনদে পরিবর্তন চান। আমিও চাই। যখন খেলেছি, নিজের জন্যই খেলেছি। ভালোভাবে বেঁচে থাকার তাগিদে অর্থ পাওয়া সাপেক্ষে কোচিং করিয়েছি। এখানেও নিজের স্বার্থ ছিল। তবে এবার দেশের জন্য কিছু করতে চাই। দেশের ফুটবল উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাই।’ কাউন্সিলরদের প্রতি আস্থা রেখে মানিক বলেন, ‘যদি কাউন্সিলররা নীতি ও নৈতিকতা বজায় রাখেন তবে আমি সভাপতি পদে জয়ী হবো।’

১৯৭৯ সালে ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবে ক্যারিয়ার শুরু করেন ৫৩ বছর বয়সি মানিক। ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত খেলেন ব্রাদার্সেই। এর মধ্যে ১৯৮২ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় এই ডিফেন্ডারের। ১৯৮৬ থেকে ’৯৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছর খেলেন ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডানে। পরের বছর কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করলেও গত দুই যুগে জাতীয় দল ছাড়াও পেশাদার লিগের ক্লাব মোহামেডান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চট্টগ্রাম আবাহনী, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলের কোচ ছিলেন মানিক। ভোটে সভাপতি পদে নির্বাচিত হলে দেশের ফুটবলে ফের যৌবন আনার প্রতিশ্রুতি দিলেন তিনি। মানিকের কথা, ‘ফুটবলকে ভালোবাসি এবং এর যৌবন ফিরিয়ে আনতে চাই বলেই নিজের গাঁটের এক লাখ টাকা খরচা করে সভাপতি পদে মনোনয়ন কিনেছি। দেখা যাক কি হয়।’ এদিকে নিজ পরিষদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে কাজী সালাউদ্দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তিনি বলেন,‘নির্বাচনে জয়-পরাজয় নিয়ে আমি এখনই কোন কথা বলতে চাই না। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কে নির্বাচনের মাঠে থাকে। ১২ সেপ্টেম্বরের পর আমরা সম্মিলিত পরিষদের ইশতেহার ঘোষণা করবো।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ