রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
পিরোজপুরের উপক‚লীয় উপজেলা ইন্দুরকানী কচা ও বলেশ্বর নদীর অব্যাহত ভাঙনে ইন্দুরকানী, কালাইয়া, টগড়া, চন্ডিপুর, খোলপটুয়া গ্রামসহ চারাখালী খাদ্যগুদাম, গুচ্ছগ্রাম হুমকির মুখে। উপজেলার খরস্রোতা কচা নদীর ভাঙনে ইন্দুরকানী গ্রামের ঐতিহ্যবাহী তালুকদার বাড়ি, কাজী বাড়ি, হাওলাদার বাড়ি, ভক্ত বাড়িসহ ২ শতাধিক বাড়ি এবং তাদের ৭শ’ বিঘা ভিটা ও বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পাশাপাশি কালাইয়া গ্রামের সেকান্দার হাওলাদারের বাড়ি, চিত্তরঞ্জন মন্ডলের বাড়ি, আনিচুর রহমান হাওলাদারের বাড়িসহ শতাধিক বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আর কচা নদীর অব্যাহত ভাঙনে টগরা গ্রাম বিলীনের পথে।
ঐ গ্রামের রামগোপাল সাহা জানান, আমাদের পৈত্রিক ভিটা বাড়িসহ শতাধিক বাড়ি ও প্রায় ৪শ’ বিঘা জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং আমাদের বাড়ির শেষ চিহ্নটুকুও বিলীন হওয়ার পথে। কালাইয়া গ্রামের সেকান্দার আলী হাওলাদার তার সব কিছু হারিয়ে বেড়িবাঁধের পাশে ঝুপড়ি ঘরে স্বজনদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
কচা নদীর ভাঙনের দৃশ্য দেখাতে গিয়ে সেকান্দার আলী বলেন, হায়রে সর্বনাশা কচা মোর সব কিছু লুইটা লইয়া গ্যাছে। এহন মুই একেবারে অসহায়। কালাইয়া গ্রামের চিত্তরঞ্জন ভক্তের ভিটা-বাড়ি কচা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সে স্ত্রী পরিজন নিয়ে নদীর কিনারায় জোয়ার ভাটার সাথে যুদ্ধ করে শুধু নেট জাল দিয়ে বাগদা ও গলদার রেণু ধরে সংসার চালাচ্ছেন। এভাবে নদীর কিনারে নজরুল হাওলাদার, নান্টু হাওলাদার, মনমোহন হাওলাদার, জাকির হাওলাদার, মোশারফ মৃধাসহ অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। তাদের নিজেদের থাকার কোন জায়গা নেই, তেমনি পায়নি কোন আবাসন স্থান।
এছাড়া টগড়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী বৃটিশ আমলের জামে মসজিদসহ শতাধিক বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বালিপাড়া ইউনিয়নের চন্ডিপুর ও খোলপুটয়া গ্রামের কচা ও বলেশ্বর নদীর ভাঙনে ভিটা বাড়িসহ কৃষি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ঐ গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন জানান, কচা ও বলেশ্বর নদীর মোহনায় খোলপটুয়া গ্রাম হওয়ায় ঐ গ্রামের তিন ভাগের এক ভাগ নদীতে ভেঙে গেছে। এখন ঐ গ্রামটি ভাঙনের মুখে। এছাড়া চারাখালী গ্রামের খাদ্য গুদাম, গুচ্ছ গ্রাম, ভাড়ানী খালের স্লুইচ গেটের ২ পাশের রাস্তা দিন দিন বলেশ্বর নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। পানী উন্নয়ন বোর্ড থেকে ভাঙন রোধে টেকসই বাঁধ না দেয়ায় ভাঙন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
পাড়েরহাট ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার বাবুল বলেন. টগরা ও উমেদপুর গ্রামের বেশির ভাগ মানুষের বসত বাড়িসহ ফসলি জমি কচা নদী গ্রাস করে ফেলছে। অনেকে সব কিছু হারিয়ে অন্যের জাগায় ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। নদী ভাঙন রোধে টেকসই নির্মাণ প্রয়োজন। ইন্দুরকানী উপজেলা চেয়ারম্যান এড. এম মতিউর রহমান জানান, সিডর, আইলা, আম্পান দুর্যোগের সময় জলোচ্ছ্বাসে নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। তাই ভাঙন রোধে কালাইয়া, ইন্দুরকানী, টগড়া, খোলপটুয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ ও দ্রুত ব্লক ফেলানো জরুরি প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পিরোজপুর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী দিপক রঞ্জন দাশ বলেন, আম্পানের পর ইন্দুরকানী উপজেলার নদী তীরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্ধ আসলে বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।