Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডাকাতিয়ার সংযোগ খালে বাঁধ লক্ষ্মীপুরে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে জলাবদ্ধতা

লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১:২০ পিএম

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় পানি নিষ্কাশনের কাজে ব্যবহৃত ডাকাতিয়া নদীর সংযোগ খালগুলোতে বাঁধ দিয়ে ইমারত নির্মাণ ও মাছ চাষ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এতে প্রায় ৩০ হাজার ৩৯৫ হেক্টর ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

পৌরসভা কার্যালয় ও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ড ও উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন রয়েছে। ৫৭টি গ্রামের বিভিন্ন খাল দিয়ে ডাকাতিয়া ও মেঘনা নদে গিয়ে পানি পড়ছে। কিন্তু প্রায় স্থানে খালের অর্ধেক দখল করে প্রভাবশালীরা ইমারত নির্মান ও মাছ চাষ করছে। অনেকে বালু ফেলে ভরাট করে বাড়িও নির্মাণ করেছেন। এতে ডাকাতিয়া খালে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে এলাকার প্রায় ৩০ হাজার ৩৯৫ হেক্টর ফসলি জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে জমির ধানসহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হয়ে যায় ও যাচ্ছে। একই কারণে এসব জমিতে কৃষকেরা রবিশস্য, বোরো ধান, সয়াবিনসহ বিভিন্ন শষ্য আবাদ করতে পারছেনা। গত কয়েকদিনের মেঘনার জলোচ্ছাস ও জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্থ কয়েকজন কৃষক ও এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেছেন।

ইউএনও ও কৃষি কর্মকর্তাসহ সিআইপি কর্তৃপক্ষ-অভিযোগ পাওয়ার পরেও খাল দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করেননি। খাল ভরাট করায় ৩০ হাজার ৩৯৫ হেক্টর জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব জমি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় চাষাবাদে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। খাল ভরাটকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের নতুন বাজার, মহিলা কলেজ সংলগ্ন, পৌরসভার পশ্চিম কাঞ্চনপুর, কেরোয়া ইউপির লুধুয়া গ্রাম, মালিবাড়ি এলাকা, চরপাতা ইউপির গাজিনগর গ্রাম, চরআবাবিল ইউপির হায়দরগঞ্জের ভেরিবাঁধ এলাকা, উদমারা ও দক্ষিন চরবংশী ইউপির কয়েকটি গ্রামের বিস্তৃত জমি কয়েক ফুট পানির নিচে রয়েছে।

পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কাঞ্চনপুর গ্রামের কৃষক বেনি আমিন ভুঁইয়া বলেন, তিনি তাঁর চার বিঘা জমিতে ধান ও পেপের আবাদ করেছিলেন। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে সব শেষ হয়ে গেছে।
হায়দরগঞ্জের বিশিষ্ট সমাজ সেবক আলহাজ্ব ছাইয়েদ তাহের জাবেরি বলেন, মেঘনার জোয়ারে তার ফল বাগানের শতাধিক ফলের চারা ও গাছ নষ্ট হয়ে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে তারা দু'জনেই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও সিআইপি কর্মকর্তাদের জানালেও তারা এখন পর্যন্ত কোন সহযোগিতা করেননি বলে অভিযোগ করেন।

রায়পুর ইউএনও সাবরীন চৌধুরি বলেন,ডাকাতিয়া ও মেঘনা নদীতে প্রবাহমান সংযোগ এলাকায় খালে বাঁধ দেওয়ার বিষয়ে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। এই বিষয়ে অবৈধ স্থাপনা ও বাঁধগুলো ভেঙ্গে দিয়ে পানি চলাচলের ব্যবস্থা করে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেন শহীদ সরওয়ার্দি বলেন, উপজেলার ৫৭ গ্রামে ৩০ হাজার ৩৯৫ হেক্টর আবাদি ফসলি জমি রয়েছে। শিগগিরই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে ডাকাতিয়া ও মেঘনা নদীর সংযোগ খালের বিভিন্ন স্থানের বাঁধ ও স্থাপনা ভেঙ্গে দিতে অভিযান চালানো হবে। সহযোগিতা দিতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা তৈরি করার কাজ চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ