Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তারকা থেকে প্রতারক!

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

দেশে তথ্যপ্রযুক্তি জগতে নাজমুস সাকেব নাঈম পরিচিত একটি নাম। তার তৈরি করা পেখম ওয়েবসাইটটি অনলাইনে হোটেল বুকিংয়ের জন্য বিকাশ, সেবাসহ বিভিন্ন অনলাইন ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। ফেসবুক-কমার্স বা এফ-কমার্সের জন্য গ্রাহকসেবা সমাধান অর্থাৎ ফেসবুকের মাধ্যমে পণ্য কিনতে গ্রাহককে পুরো প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য সাকেব উদ্ভাবিত চ্যাট বট ‘দ্য জেড বয়’ নিয়ে মার্কিন সাময়িকী এন্ট্রাপ্রেনার ও ফোর্বসে ২০১৭ সালে তার সাক্ষাৎকার ছাপা হয়।

সাকেব বেশ কয়েকটি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তিবিদ হিসেবে নানা পদে কাজ করেছেন। রীতিমতো এ জগতের তারকা খ্যাতিও মিলেছে তার। অথচ সেই তিনিই কি-না পাপুয়া নিউগিনিতে বসবাসরত আবদুল ওয়াহেদ নামে এক বাংলাদেশির ডেবিট কার্ড হ্যাক করে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পরে ২০১৪ সালের ওই জালিয়াতির ঘটনায় পাপুয়া নিউগিনিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি গত বছরের ডিসেম্বরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় গত ২৫ আগস্ট সাকেব ও তার সহযোগী মইনুল ইসলাম মামুনকে মহাখালী ডিওএইচএস থেকে করে পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে সাকেবকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রিমান্ড শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাতারুজ্জামানের আদালতে হ্যাকিং ও জালিয়াতির বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন সাকেব।

পুলিশ জানায়, গ্রেফতার নাজমুস সাকেব নাঈম যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক করেছেন। তিনি থাইল্যান্ডের সিয়াম ইউনিভার্সিটিতে অতিথি শিক্ষক হিসেবে কাজের পাশাপাশি নেপালের একটি ব্যাংকে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। অন্যদিকে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৮৮ সালে পাপুয়া নিউগিনিতে পাড়ি জমান বাদী আব্দুল ওয়াহেদ। সেখানে প্রথমে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত হলেও পরবর্তীতে শিক্ষকতা ছেড়ে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। ওয়াহেদ পাপুয়া নিউগিনির শীর্ষস্থানীয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দেশ বেশ এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

পুলিশ আরো জানায়, নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখতে ২০১৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর অনলাইনে থাই এয়ারওয়েজে ব্যাংকক এবং ওই বছরের ১ নভেম্বর এমিরেটস এয়ারলাইন্সে ঢাকা থেকে দুবাই হয়ে ব্যাংককে যাওয়ার জন্য বিজনেস ক্লাসে পরিবারের সদস্যদের টিকিট কনফার্ম করলেও ভ্রমণ করেননি সাকেব বা তার পরিবারের কেউ।

তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ভিসা কার্ডটি হ্যাক করে কার্ডের গোপন তথ্য চুরি করা হয়েছে। হ্যাকড ভিসা কার্ডটি দিয়ে ২০১৪ সালের ২১ জুলাই দ্যলোডনেট ডটকমে প্রথম ১৪.৯৫ মার্কিন ডলার বিল পরিশোধ করেন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত নিজের অ্যাকাউন্টে ভার্চুয়াল ভিসা কার্ড জেনারেট করে ২০৯৯ মার্কিন ডলার ট্রান্সফার করে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সাকেব। তিনি আরো বলেন, হ্যাকড ভিসা কার্ডটি ব্যবহার করে প্রথমদিকে দেশীয় কিছু অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে প্ল্যাটফর্মে ১৬টি দামি মোবাইল কিনে আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিত জনদের উপহার দেন সাকেব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রতারক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ