পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দুই পাশে সাগর-সমুদ্রের মতো ঢেউ। বয়ে যায় মাতাল হাওয়া। যত দূর চোখ যায় জলরাশির অবারিত ঢল। এমন বিস্তীর্ণ হাওরের বুক চিরে গেছে পিচঢালা এক সড়কপথ। ভরা বর্ষায় কিশোরগঞ্জের হাওরগুলোর চিরায়ত রূপের বাহারে নতুন সংযুক্তি কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রামের নবনির্মিত সড়ক। দৃষ্টিনন্দন এই সড়কের কল্যাণে পর্যটন আকর্ষণের নতুন সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে হাওরে।
দৃষ্টিনন্দন নতুন সড়কটি নির্মিত হয়েছে জলে ভাসা কিশোরগঞ্জের তিন উপজেলা ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রামে। এতে নতুনত্বের ছোঁয়া পেয়েছে হাওরের প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র্যে। দূরের বিচ্ছিন্ন ছোট ছোট গ্রাম যেন একেকটি ভেসে থাকা দ্বীপ। ভরা বর্ষায় এখানকার মানুষের চলাচলে একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা। আর এখন হাওরের বিস্ময়খ্যাত এই সড়কে চলে নানা ধরনের যানবাহন। উত্তাল ঢেউ আর এলোমেলো বাতাসে খানিকটা পথ মাড়ালেই মিলবে নৈসর্গিক তৃপ্তি। বিচ্ছিন্ন এসব এলাকার মানুষ এখন পাকা সড়ক ধরেই গন্তব্যে ছুঁটছেন।
ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম উপজেলায় এক হাজার ২৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ‘অল ওয়েদার রোড’। এর মাধ্যমে ৪৭ কিলোমিটার ঊঁচু পাকা সড়ক ও ৩৫ কিলোমিটার সাবমারসিবল সড়ক এবং দৃষ্টিনন্দন সেতু ধরে যাতায়াত করে মানুষ। অল ওয়েদার সড়কের দুই পাশে অথৈ জলরাশি। প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের উদ্যোগে সড়ক ও জনপথ বিভাগ প্রায় ৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে নান্দনিক এই গ্রামীণ সড়ক তৈরি করেছে।
নরসিংদী জেলা থেকে ঘুরতে আসা রফিকুল ইসলাম হীরা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাওরের বিভিন্ন ছবি দেখে বেড়ানোর জন্য মন ব্যাকুল ছিল। এখানে এসে মনে হচ্ছে, দেশের বাইরে কোথাও ভ্রমণে বেরিয়েছি বুঝি! হাওরের বুক চিরে থাকা এই রাস্তাগুলো আরও বেশি করে হাওরপ্রেমী করে তুলেছে মনটা।
কুমিল্লা থেকে পরিবারের সাথে ঘুরতে আসা তাহমিনা আক্তার দৈনিক ইনকিলাব বলেন, সাগরের মতোই হাওরে সূর্য ডুবে। ভোরে পানির নিচ থেকে উঠে আসা সূর্যকে দেখলে মনে জাগে অন্যরকম এক অনুভূতি। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সৃষ্টি হয় চমৎকার সৌন্দর্য। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কামরুজ্জামান বলছেন, এই সড়কটির ফলে এখন পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে এই এলাকাজুড়ে।
এ বিষয়ে মিঠামইনের ইউএনও প্রভাংশু সোম মহান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবেই হাওরের সৌন্দর্য নয়নাভিরাম। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সারা বছর চলাচল উপযোগী অল ওয়েদার রোড। সড়কটির ফলে এই এলাকাজুড়ে এখন পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিষয়ে কিশোরগঞ্জ ৪ সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক বলেন, গাড়ি চলবে এমন স্বপ্ন আমার পূর্বপুরুষেরা কখনও দেখেনি। এখানে পর্যটন নিয়ে কিছু করা হলে আমার বিশ্বাস মানুষ কক্সবাজার না গিয়ে এখানে ছুটে আসবে।
সড়ক জনপদ বিভাগ ও সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম উপজেলায় এক হাজার ২৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ‘অল ওয়েদার রোড’। সারা বছর পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ধরে রাখতে ব্যবহার উপযোগী এই সড়কটিতে রয়েছে অন্তত ৭৬টি সেতু ও বক্সকালভার্ট। সড়কের উভয় পাশের্^ আরসিসি বøক দিয়ে সুরক্ষিত করা হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে সারা বছর হাওরে যান চলাচলসহ সব ধরনের চলাচল নিশ্চিত করা হয়েছে। এই সড়ক দিয়ে গভীর হাওরের তিনটি উপজেলার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করছে। এছাড়াও হাওর দেশের অন্যতম প্রধান খাদ্য, মৎস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত। হাওরকে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে সংযুক্ত করার উদ্দেশ্য দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওরকে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত করার প্রয়াসে এ প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিল সরকার। কারণ দেশের পর্যটন এলাকা হিসেবেও হাওর সারা দেশবাসীর কাছে সমাদৃত হবে। হাওরের পর্যটন থেকে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্বসহ হাওরবাসী অর্থনৈতিক জীবনযাত্রায় বেগবান হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।