Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কমলনগর-রামগতিতে অস্বাভাবিক জোয়ার

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

রামগতি (লক্ষ্মীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০২০, ২:২৫ পিএম

মেঘনানদীর দুই দফার অস্বাভাবিক জোয়ারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অমাবস্যা ও পূর্ণিমার প্রভাবে মেঘনার জোয়ার স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ থেকে ছয় ফুট পানি বেড়ে দুই উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। এতে সহস্রাধিক পুকুর ও ঘের থেকে প্রায় দুই কোটি ৭০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। জোয়ারে ভেসে ও পানিতে মারা গেছে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ প্রায় ৮০ লাখ টাকার গবাদিপশু।

জানা গেছে, পূর্ণিমার প্রভাবে ৫ আগস্ট এবং অমাবস্যার প্রভাবে ১৯ আগস্ট থেকে মেঘনার জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ-ছয় ফুট বেড়ে দুই উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে অসংখ্য পুকুর ও ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে যায়। হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ গবাদিপশু জোয়ারে ভেসে ও মারা গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন হাজারো মানুষ।

রামগতি উপজেলার চর রমিজ এলাকার মৎস্যচাষি মো. শরিফ, চর আলেকজান্ডার এলাকার মিনার উদ্দিন, চর আব্দুল্লাহ এলাকার আলী আজগর ও আবুল কাশেম জানান, দু'দফার অস্বাভাবিক জোয়ারে তাদের পুকুর ও ঘেরের লাখ লাখ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে।

কমলনগর উপজেলার চরফলকন এলাকার মৎস্যচাষি সিরাজুল ইসলাম জানান, ঋণ নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাছচাষ করে আসছেন। মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারে তার তিনটি ঘেরের প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।

চরলরেন্স এলাকার তাজ লেয়ারের স্বত্বাধিকারী মো. ওসমান জানান, জোয়ারের পানিতে তার খামার ডুবে প্রায় পাঁচ হাজার মুরগি মারা যায়।

চরফলকন এলাকার পোলট্রি খামারি ফিরোজ আলম জোয়ারের পানিতে তার খামারের দুই শতাধিক পোলট্রি মুরগি মারা গেছে বলে জানান।

কমলনগর উপজেলার চরফলকন ইউপি চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ ও রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন লিটন চৌধুরী জানান, মেঘনার ভাঙনে বিলীন হওয়া বেড়িবাঁধ পুনর্নির্মাণ না হওয়ায় জোয়ার বাড়লেই দুই উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকা সহজেই প্লাবিত হয়।

তারা জানান, গত চার যুগের মধ্যে এবারের জোয়ারের পানি সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ সময় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনসহ বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তারা। রামগতি উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন জানান, জোয়ারের পানিতে উপজেলার ৬৯৩টি পুকুর ও খামারের মাছ ভেসে গিয়ে দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

জানা গেছে, কমলনগর উপজেলায় ৬২৯টি পুকুর ও ঘের থেকে এক কোটি ২০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।

অন্যদিকে, রামগতি উপজেলায় ভেড়া, মহিষ, হাঁস ও মুরগি ভেসে গিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।কমলনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. কাউসার ই-হুদা জানান, প্রবল জোয়ারে উপজেলায় গরু, ছাগল, হাঁস ও মুরগি মারা যায়। এতে প্রায় ৭০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যায় ক্ষতি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ