পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক রাহাত খানকে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান দীর্ঘদিনের সহকর্মী সাংবাদিক, লেখক-সাহিত্যিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাহিত্যপ্রেমী ভক্ত-অনুরাগীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। রাহাত খান গত শুক্রবার রাতে ইন্তেকাল করেন।
জাতীয় প্রেসক্লাব্ থেকে তার সর্বশেষ কর্মস্থল প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার কার্যালয়ের সামনে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বাদ জোহর তৃতীয় জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
এর আগে প্রেস ক্লাবে প্রথম জানাজা শেষে তার প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল প্রমুখ।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন রাহাত খানের স্ত্রী অপর্ণা খান, ছেলে ঋদ্ধি খানসহ বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী, মরহুমের পরিবারের সদস্য ও সাহিত্যপ্রেমী ভক্ত-অনুরাগী।
রাহাত খানের কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। একুশে পদকপ্রাপ্ত একজন লেখক। প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার একজন মানুষ। আজীবন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে কথা বলেছেন ও লিখেছেন। তিনি শুধু সাহিত্যিক ছিলেন তা নয়, তিনি একজন প্রখ্যাত সাংবাদিকও ছিলেন। এ বরেণ্য সাংবাদিক সংবাদপত্র জগৎকে সমৃদ্ধ করে গেছেন। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।’
রাহাত খানের স্ত্রী অপর্ণা খান বলেন, ‘উনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন। আপনারা তার জন্য দোয়া করবেন। তাকে যেন আল্লাহ বেহেশত নসিব করেন।’
রাহাত খান ১৯৪০ সালের ১৯ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার পূর্ব জাওয়ার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কথাসাহিত্যিক হিসেবে সমাদৃত হলেও কর্মসূত্রে রাহাত খান আপাদমস্তক ছিলেন সাংবাদিক। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষাজীবন শেষ করে রাহাত খান কিছুদিন জোট পারচেজ ও বীমা কোম্পানিতে চাকরি করে ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজে যোগদান করেন। তারপর একে একে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করেন।
১৯৬৯ সালে দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় রাহাত খানের সাংবাদিকতা জীবনের হাতেখড়ি। পরে তিনি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় যোগদান করেন। ২০০৯ সাল থেকে তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের সহকারী ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় দৈনিক বর্তমান পত্রিকা। শেষবেলায় এসে তিনি দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭২ সালে তার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘অনিশ্চিত লোকালয়’ প্রকাশিত হয়। তার পরবর্তী উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ‘অমল ধবল চাকরি’, ‘ছায়াদম্পতি’, ‘শহর’, ‘হে শূন্যতা’, ‘হে অনন্তের পাখি’, ‘মধ্য মাঠের খেলোয়াড়’, ‘এক প্রিয়দর্শিনী’, ‘মন্ত্রিসভার পতন’, ‘দুই নারী’, ‘কোলাহল’ ইত্যাদি।
তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৩), সুহৃদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৫), সুফী মোতাহার হোসেন পুরস্কার (১৯৭৯), আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮০), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮২), ত্রয়ী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮) এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় একুশে পদকে (১৯৯৬) ভ‚ষিত হন। বিখ্যাত সিরিজ ‘মাসুদ রানা’ চরিত্রটি তার অনুসরণেই তৈরি করা। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।