নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বর্তমানে উত্তপ্ত দেশের ক্রীড়াঙ্গণ। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে এই নির্বাচন। ভোট সামনে রেখে বাফুফের বর্তমান কমিটি নির্বাচনী কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিরতিহীন। তাদের দাবী কাউন্সিলর তালিকা তৈরী থেকে শুরু করে নির্বাচনের যাবতীয় কাজ তারা করছে গঠনতন্ত্র মেনেই। ইতোমধ্যে ১৩৯ জন কাউন্সিলরকে চূড়ান্ত করেছে বাফুফে। যারা বাফুফের বহুল আলোচিত নির্বাচনের দিন নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। তবে কাউন্সিলর তালিকা তৈরী করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (বিডিডিএফএ) এবং বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাব অ্যাসোসিয়েশন (বিএফসিএ)। এ দুই সংগঠনের দাবী বাফুফের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুর রহিমকে ঢাকা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন থেকে কাউন্সিলর করা হয়েছে। যা গঠনতন্ত্র বিরোধী। এছাড়া দি মুসলিম ইনস্টিটিউট ও নবাবপুর ক্রীড়া চক্রের কাউন্সিলরশীপ নিয়েও তাদের আপত্তি আমলে নেয়নি বাফুফে। কাউন্সিলর তালিকার আপত্তি আমলে নেয়ার দাবি জানিয়ে বিডিডিএফএ এবং বিএফসিএ কর্তারা বলেছেন, অন্যথায় আইনি ব্যবস্থা নেয়া এবং তথ্য প্রমানসহ বাফুফের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে ফিফার এথিকস কমিটি এবং এএফসিতে যাবেন তারা। কয়েকদিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে বিডিডিএফএ এবং বিএফসিএ’র কর্মকর্তারা বাফুফের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে নির্বাচনের কাউন্সিলর বদলের অভিযোগ এনেছেন। যা দেশের প্রতিটি ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং প্রিন্ট মিডিয়া ফলাও করে প্রচার ও প্রকাশ করেছে।
এ ব্যাপারে বাফুফের ব্যাখ্যা, যারা কাউন্সিলর তালিকা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন এবং অনিয়মের অভিযোগ করছেন তাদের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। অভিযোগকারীরা বুঝেও না বোঝার ভান করছেন যে, নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন পর্যন্ত বাফুফে সবগুলো কাজ নিয়ম মেনেই করেছে। যারা কাউন্সিলরশীপ দাবী করছেন তারা নিয়মের তোয়াক্কা না করেই করছেন। ফলে তাদের বিরুদ্ধে গত ১১ আগস্ট বাফুফের নির্বাহী কমিটির সর্বশেষ সভায় অভিযোগ উত্থাপিত ও সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভায় শুধু ঢাকা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, দি মুসলিম ইনস্টিটিউট ও নবাবপুর ক্রীড়া চক্রের ব্যাপারেই নয়, মোট ১১টি কাউন্সিলরশীপ নিয়ে আলোচনা, অভিযোগ উত্থাপন ও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই তালিকায় আরও আছে মহাখালী একাদশ, কদমতলা সংসদ, পূর্বাচল পরিষদ, ইষ্ট এন্ড ক্লাব, টাঙ্গাইল ফুটবল একাডেমী, বাসাবো তরুণ সংঘ, বাড্ডা জাগরনী সংসদ এবং ওয়ারী ক্লাব। এ প্রসঙ্গে রোববার বাফুফের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু নাইম সোহাগ বলেন,‘প্রতিটি নির্বাচনেই বিরোধী পক্ষের কিছু অভিযোগ থাকে। তবে তা অবশ্যই নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করতে হয়। যা নিয়মের মধ্যে পড়ে। বাফুফে নির্বাচনকে ঘিরে কাউন্সিলরশীপ নিয়ে যারা অভিযোগের ফানুস উড়াচ্ছেন তারা মিথ্যাচার করছেন। যারা কাউন্সিলরশীপ পাওয়ার যোগ্য তারাই তা পেয়েছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন পর্যন্ত আমরা সবগুলো কাজই নিয়ম মেনে করেছি।’
এদিকে দেশের ফুটবলবোদ্ধারা মনে করছেন কয়েকজন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বাফুফের কঠোর অবস্থান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধের হাত থেকে রক্ষা করেছে। কাউন্সিলরশীপ নিয়ে বিডিডিএফএ এবং বিএফসিএ’র কর্তাদের আপত্তি আমলে না নিয়ে বাফুফে প্রমাণ করেছে যে, তারা স্বচ্ছ।
বাফুফের দায়িত্বশীল সুত্রে জানা যায়, গত ১১ আগস্ট তাদের সর্বশেষ কার্যনির্বাহী সভায় যেসব কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন ও সিদ্ধান্ত হয় তাদের মধ্যে মহাখালী একাদশ থেকে কাউন্সিলর হওয়া শাকিল মাহমুদ চৌধুরী একইসঙ্গে চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড ফুটবল দলের দলনেতা। ঢাকা মহানগরী ফুটবল লিগ কমিটির কোন সভা ও মহাখালী একাদশ ক্লাবের পক্ষে খেলার মাঠে বা কোন ধরনের কার্যক্রমে তার উপস্থিতি দেখা যায়নি কখনও। ফলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত ও সিদ্ধান্ত হয়।
সিরাজ উদ্দিন মো: আলমগীর কাউন্সিলর হয়েছেন কদমতলা সংসদ থেকে । তিনি বাফুফের সর্বশেষ নির্বাচনে ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে কাউন্সিলর হয়েছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম থেকে এসে কিভাবে ঢাকার ৩য় বিভাগ ফুটবল লিগের ক্লাব কদমতলা সংসদের সদস্য হলেন এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ এক প্রশ্ন! এবার বাফুফে নির্বাচনের আগে পূর্বাচল পরিষদ থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন খান। কিন্তু ঢাকা মহানগরী ফুটবল লিগ কমিটির কোন সভা ও পূর্বাচল পরিষদ ক্লাবের পক্ষে খেলার মাঠে বা কোন ধরনের কার্যক্রমে তাকে দেখা যায়নি। তার বিরুদ্ধেও বাফুফের ১১ আগস্টের সভায় অভিযোগ উত্থাপিত ও সিদ্ধান্ত হয়।
ইষ্ট এন্ড ক্লাবের পক্ষে কাউন্সিলর দাবীকারী টিএম মামুন কায়ছার ঢাকা মহানগরী ফুটবল লিগ কমিটির কোনরূপ সভা ও ইষ্ট এন্ড ক্লাবের পক্ষে খেলার মাঠে বা কোন ধরনের কার্যক্রমে কখনো উপস্থিতি হননি। তার বিরুদ্ধে বাফুফের সর্বশেষ কার্যনির্বাহী সভায় অভিযোগ উত্থাপিত হলে বিষয়টি সবার নজরে আসে।
টাঙ্গাইল ফুটবল একাডেমী থেকে কাউন্সিলর হওয়া হাসানুজ্জামান খান বাবলু নিজেকে ক্লাবটির ফুটবল সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিলেও তা মিথ্যে। ঢাকা মহানগরী ফুটবল লিগ কমিটি ২০১৯-২০ মৌসুমে ৩য় বিভাগ ফুটবল লিগে অংশগ্রহণের লক্ষে এই ক্লাবটির ফুটবল সম্পাদক হিসেবে আরিফ আকন্দের নাম উল্লেখ রয়েছে; যা প্রমাণ করে যে হাসানুজ্জামান খান বাবলু টাঙ্গাইল ফুটবল একাডেমী’র ফুটবল সম্পাদক নন। ফলে তার বিরুদ্ধেও বাফুফের ১১ আগস্ট তারিখের সভায় অভিযোগ উত্থাপিত হয়। এছাড়া বাসাবো তরুণ সংঘের মুনজের রহমান, বাড্ডা জাগরনী সংসদের আবু হোসেন চৌধুরী প্রিন্স এবং ওয়ারী ক্লাবের মহিদুর রহমান মিরাজের বিরুদ্ধেও কাউন্সিলরশীপ নিয়ে ওই সভায় অভিযোগ উত্থাপিত ও সিদ্ধান্ত হয়। এ সভায় নবাবপুর ক্রীড়া চক্রের কাউন্সিলরশীপ নিয়ে সিদ্ধান্ত ছাড়াও দি মুসলিম ইন্সটিটিউটের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বাবুলের গত ২৫ মার্চ বাফুফেতে করা লিখিত আবেদনের ফলে ‘বাফুফে নির্বাচনী সাধারন সভা- ২০২০’ উপলক্ষ্যে কাউন্সিলর মনোনয়নের বিষয়ে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে জটিলতা নিরসনের জন্য গঠিত উপ-কমিটি অনুমোদন সাপেক্ষে দি মুসলিম ইন্সটিটিউটকে আরেকটি ডেলিগেট ফরম পাঠানো হয় এবং পূর্বে পাঠানো ডেলিগেট ফরমটি বাতিল বলে গন্য করা হয়। এবং ঢাকা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রহিম’কে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আসন্ন বাফুফে নির্বাচনে ঢাকা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে কাউন্সিলর হিসেবে অনুমোদন দেয়া হয়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, আব্দুর রহিম এবার বাফুফে নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।