Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ত্রিভুজ প্রেমের ঘটনায় নিহত প্রাইভেট ভার্সিটির ছাত্রী মুন্নী

প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সীতাকুÐ উপজেলা সংবাদদাতা : সীতাকুÐ ইকোপার্কে খুন হওয়া পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের ২য় বর্ষের ছাত্রী মুন্নী আক্তার (২৪) হত্যার নেপথ্যে ছিলো ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনী। এক প্রেমিক বর্তমান থাকা সত্বেও বান্ধবীর প্রেমিকের সাথে মুন্নীর সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টাকে ঘিরে সৃষ্ট দ্বন্ধের জেরে প্রেমিক, ২ বান্ধবীসহ ৫জন তাকে হত্যা করেছে। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম আদালতে বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুন্সি মুশিয়ার রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধীতে এসব কথা জানায় মুন্নীর প্রেমিক ও এক হত্যাকারী রমজান আলী রাহাত (২৮)। হত্যাকারী রাহাতের জবানবন্ধীর উদ্ধৃতি দিয়ে মামলার তদন্তকারী অফিসার সীতাকুÐ থানার এস.আই মোঃ কামাল উদ্দিন প্রতিবেদককে বলেন, মুন্নী ও রাহাত এক সময় চট্টগ্রামের লালখান বাজার মীফস নিউরাল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে পড়াশুনা করত। সেখানে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। দেড় বছর সম্পর্কের পর মুন্নী রাহাতকে বিয়ের জন্য চাপ দিলেও রাহাত তখন বিয়ের জন্য প্রস্তুত নয় বলে জানায়। এতে মুন্নী তাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে। এখান থেকে পাস করে পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয় মুন্নী। এখানে এক ছাত্রের সাথে সম্পর্ক হয় তার। এ খবর জেনে প্রথম প্রেমিক রাহাত ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মুন্নীর দুই ঘনিষ্ট বান্ধবী ছিলো। তাদের সাথে চলাফেরা করতে গিয়ে একজনের প্রেমিকের সাথে পরিচয় হয় মুন্নীর। ঐ বান্ধবী তার প্রেমিকের সাথে তোলা কিছু অন্তরঙ্গ ছবিও রাখে মুন্নীর কাছে। এসব দেখার পরও মুন্নী বান্ধবীর সেই প্রেমিককে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বসে। কিন্তু সে তা প্রত্যাখান করলে মুন্নী তাদের অন্তরঙ্গ ছবিগুলো অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়। এতে প্রচÐ ক্ষিপ্ত হয় বান্ধবীর প্রেমিক। সে মুন্নীর সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে প্রথম প্রেমিক রাহাতের কথা জানতে পেরে তার সাথে দেখা করে মুন্নীর সাথে সম্পর্ক আছে কিনা জানতে চায়। এসময় রাহাত জানায়, সম্পর্ক থাকা অবস্থায় মুন্নী অন্য এক যুবকের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। সে খুবই খারাপ মেয়ে। এরপর মুন্নীর প্রেমিক, বান্ধবীর প্রেমিক ঘনিষ্ট ঐ বান্ধবীদের নিয়ে তাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৩ মে দুই বান্ধবী বেড়ানোর কথা বলে মুন্নী আক্তারকে নগরীর সিটি গেইট এলাকায় নিয়ে আসে। সেখানে পূর্ব থেকে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিলো মুন্নীর আগের প্রেমিক ও বান্ধবীরা। পরে তারা সাদা মাইক্রো হায়েছ সহযোগে সীতাকুÐ ইকোপার্কে আসে। সেখানে ঘোরা ফেরার এক পর্যায়ে সন্ধ্যার দিকে পাহাড়ের নির্জন স্থানে সবাই মিলে মুন্নীকে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে চলে আসে। মামলার তদন্তকারী অফিসার এস.আই কামাল উদ্দিন আরো বলেন, পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর মুন্নীর স্বজনরা এসে লাশ সনাক্ত করলে তার পরিচয় প্রকাশ হয়। নিহত মুন্নী আক্তার (২৪) চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার উত্তর গোবিন্দ’র খীল গ্রামের আবুল কালামের কন্যা ও নগরীর পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রী। পরিচয় পাবার পর তদন্ত কাজ শুরু করেন এস.আই কামাল। গত বুধবার গভীর রাতে গোপন সূত্রে এক হত্যাকারী মুন্নী আক্তারের প্রেমিক রমজান আলী রাহাতের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে চট্টগ্রামের পোর্ট কলোনী ১নং রোড এর ১/সি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে থানায় আনেন তিনি। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার তাকে চট্টগ্রাম আদালতে বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুন্সি মুশিয়ার রহমানের আদালতে তোলা হলে রাহাত ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধীতে হত্যার সাথে নিজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং ঘটনার বর্ণনা দেয়। এস.আই কামাল উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারেও অভিযান অব্যহত আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ত্রিভুজ প্রেমের ঘটনায় নিহত প্রাইভেট ভার্সিটির ছাত্রী মুন্নী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ