বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার : ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার জাতীয় ঐক্য করতে চায় না বলে অভিযোগ করেছেন আব্দুল্লাহ আল নোমান। গতকাল দুপুরে এক সমাবেশে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ দমনে জাতীয় ঐক্য সরকার চায় না। কারণ এই ঐক্যের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে তারা ভীত। আজকে তারা (সরকার) ভয় পায় একথা চিন্তা করে যদি জাতীয় বৃহত্তর ঐক্য গড়ে উঠে, তাহলে তার প্রেক্ষিত কী? সেখানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ লাগবে, সেখানে আইনের শাসনের যে ব্যত্যয় ঘটছে, এগুলো সংশোধিত হতে হবে। সেজন্য তারা চায় কোনোভাবেই সংবিধান বহির্ভূতভাবে যে সব কাজ তারা করেছে, জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে তারা বড় বড় যে সমঝোতা করেছে ভারতের স্বার্থে, ট্রানজিটে করেছে এবং অন্যান্যক্ষেত্রে যেটা করেছে- সে সব বিষয়ে তাদের ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তাদের শাস্তি হবেই হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মহানগর পূর্ব শাখার উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিবের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এই সমাবেশ হয়।
আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, জঙ্গিবাদ জঙ্গি নয়, জঙ্গিবাদ একটি দর্শন। একে পাল্টা দর্শনের মাধ্যমে মোকাবিলা করতে হবে। যারা ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে, তাদের সংশোধন করে, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে এমন একটা জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টি করতে হবে, যেখানে আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ হিসেবে, শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে শান্তিপূর্ণভাবে আমরা সবাই সহাবস্থান করতে পারি। এছাড়া আর কোনো বিকল্প পথ আছে বলে আমরা মনে করি না।
জনসম্পৃক্ততা ছাড়া কেবলমাত্র ‘পুলিশ কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী’ জঙ্গিবাদ দমন সম্ভব হবে না বলেও জানান তিনি।
আব্দুল্লাহ আল নোমান অভিযোগ করে বলেন, সরকার সংবিধান অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করছে না, তারা দেশে রাজত্ব করছে। এই সরকারের অনেক মন্ত্রী আছে যারা ১/১১-এর সময়ে মামলা হয়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। কিন্তু তাদের জন্য বাংলাদেশের সংবিধানের যে আইন সেটা প্রযোজ্য নয়। আমাদের জন্য যা কিছু আইন।
আর সরকারি দলের ছাত্রলীগ, যারা সন্ত্রাসী, যারা অপকর্ম করছে, ব্যাংকের টাকার লুট করছে এবং বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগ-ছাত্রলীগে সংঘর্ষ হচ্ছে। আমরা লক্ষ্য করছি, সেখানে থেকে পুলিশ একটি রিভলবার ও একটি পিস্তল-রাইফেলও কেড়ে নিতে পারেনি। এভাবে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় এলাকায় যে সন্ত্রাস চলছে ছাত্রলীগে ছাত্রলীগে খুন করছে- এসব সন্ত্রাসের কোনো মামলা নেই। সরকারের দমন নীতির প্রসঙ্গ টেনে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহŸান জানান নোমান।
সরকার গুম-খুন করে মানুষের মধ্যে ভয়-ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি করে আবারো ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে চায়। একে রুখতে হলে আপনাদের রাস্তায় নামতে হবে, এই সংগ্রামে বিজয় হতেই হবে।
রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সমালোচনা করে সাবেক পরিবেশ মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, কৃষিপ্রধান দেশ, পলি-মাটির দেশ, সুন্দরবনের দেশ। প্রাকৃতিকভাবে দেশকে তারা (সরকার) ধ্বংস করে দিচ্ছে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে সরকার আমাদের জীব- বৈচিত্র্যকে ধ্বংস করছে। যদি রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হয় তাহলে এদেশ একদিন মরুভূমিতে রূপান্তরিত হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এটা করা হচ্ছে শুধুমাত্র সরকারের নিজস্ব স্বার্থে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র যদি ভারতের সাথে সহযোগিতা করে করা যায়, তাহলে ক্ষমতায় থাকা যায়। তাদের ক্ষমতার আজকে মূল ভিত্তি হচ্ছে বিদেশ। মূল ভিত্তি হচ্ছে ভারত। ভারতের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশে এসে একথা বলে গেছে। তাদের ভিত্তি জনগণ নয়। তাই জনগণের প্রতি তাদের আশা-ভরসা নাই। নোমান বলেন, এই সরকার দেশের স্বার্থকে প্রতিবেশী দেশের কাছে বিকিয়ে দিয়েছে। ভারতের সাথে যেসব চুক্তি হয়েছে, কোনো চুক্তিই দেশের স্বপক্ষে আসে নাই, ভারতের পক্ষে গেছে। কারণ ভারতকে তারা খুশি করতে চায়, খুশি করে তারা ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে চায়।
মহানগর ঢাকা পূর্ব শাখার সভাপতি এনামুল হক এনামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, শহীদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসানসহ ছাত্র নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।