Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঈদের দেড় মাস পূর্বেও প্রস্তুতি নিতে পারছেন না খুলনার চামড়া ব্যবসায়ীরা

প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : ঈদুল আজহার দেড় মাস পূর্বেও পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে পারছেন না খুলনার চামড়া ব্যবসায়ীরা। বরং স্থান ও পুঁজি সংকট, ট্যানারি মালিকদের কাছে পাওয়া অনাদায়ী এবং চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংকঋণ না পেয়ে গুটিয়ে যেতে বসেছে জমজমাট চামড়া ব্যবসা। পুঁজি সংকট উত্তরণে ব্যাংক সুবিধা পেতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় একশ’ বছর পূর্বে নগরীর শেরে বাংলা রোডের পাওয়ার হাউস মোড়ে গড়ে ওঠে কাঁচা চামড়া ব্যবসার প্রতিষ্ঠানগুলো। জমজমাট ওই ব্যবসায় তখন অন্তত তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠান ছিল। এখন মাত্র ১২ জন ব্যবসায়ী কোনো রকমে টিকে আছে। এ ব্যবসায়ীদের নিজস্ব কোনো দোকান না থাকায় মালিকদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে তারা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসায় পুঁজি খাটিয়েও তারা ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে দীর্ঘদিনের বকেয়া পাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা। এতে তারা পুঁজি সংকটে পড়েছে। আবার ব্যবসার জন্য দোকান পাওয়াও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে তাদের। ভাড়া নেয়া ঘরও ভাঙাচোরা। বৃষ্টি হলে পানি চুইয়ে কাঁচা চামড়া পচে যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদুল আজহার এক মাস পরে ব্যবসায়ী মো. আমান উল্লাহ, মোস্তফা, মনোদাস ও শহিদুল ইসলামকে ঘর ছেড়ে দিতে বাড়িওয়ালারা নোটিশ দিয়েছে। ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা অগ্রিম এবং মাসিক ৪ থকে ৬ হাজার টাকা ভাড়ায়ও ঘর পাওয়া যায় না। সিটি করপোরেশনের কাছে প্রতিবছর ব্যবসায়ীরা জায়গা বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করলেও কাজ হচ্ছে না। নগর সংস্থা জোড়াগেট, গল্লামারী অথবা অন্য কোথাও জায়গা খুঁজতে বললেও কার্যকর কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। অথচ দীর্ঘদিন ধরে জোড়াগেট পাইকারি কাঁচাবাজার খালি পড়ে আছে।
খুলনা কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ আমান উল্লাহ জানান, বিপদে আছি। স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাথে দেখা করেছি। তিনি আমাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। জোড়াগেট বাজারটি জমাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এখানে শুধু বছরে একবার কোরবানির হাট বসে। আর সারা বছর জায়গাটি খালি পড়ে থাকে। এখানে কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করলে সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। ব্যবসায়ীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে বাঁচতে পারবে বলে অভিমত তার।
ব্যবসায়ীরা বলছে, কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের ব্যাংকঋণ দেয়া হয় চলতি হিসাবের বিপরীতে। তার পরও ব্যাংকে সম্পত্তির দলিল জমা দিতে হয়। এ ছাড়া চামড়া সংরক্ষণের জন্য দরকারি লবণের দামও বেশি। চামড়া বিক্রির টাকা ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া পড়ে আছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। ব্যবসা ভালো নয় বলে তারাও টাকা দিচ্ছে না। দুই মাস পর আবার চামড়া কেনার মৌসুম শুরু হবে।
ইয়াসিন লেদারের মালিক মোঃ আবু জাফর জানান, খুলনার কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা পথে বসতে চলেছে। তারা দেনায় জর্জরিত। সুদে টাকা এনে ব্যবসা করতে হচ্ছে। সরকার একটু নজর দিলে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে বাঁচতে পারতাম।
মামুন লেদার কমপ্লেক্সের মালিক মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, আসন্ন কোরবানির ঈদের পর ঘর ছেড়ে দিতে হবে। ব্যবসা হারিয়ে অনেকে পথে বসবে আমাকে!

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদের দেড় মাস পূর্বেও প্রস্তুতি নিতে পারছেন না খুলনার চামড়া ব্যবসায়ীরা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ