Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মীরসরাইয়ে সরকারি বন উজাড়!

করেরহাট রেঞ্জ

মীরসরাই (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০২০, ৩:৩৬ পিএম

. করেরহাট রেঞ্জের আওতায় ১২ হাজার ৮৯ একর ভূমি রয়েছে
. গত ৮ মাসে ৫শত ঘন ফুট কাঠ উদ্ধার
. ৮ মাসে ১০টি মামলা দায়ের
মীরসরাইয়ে সরকারী আইন আদালতকে উপেক্ষা করে একশ্রেণীর বনখেকো মানুষের রাক্ষুসী থাবায় সাবাড় হচ্ছে সরকারী বনাঞ্চল। অথচ করেরহাটে রয়েছে একটি বিট অফিস।
উপজেলার ১নং করেরহাট ইউনিয়নের সবুজ বনায়ন নিধন যেন থেমে নেই। রাতের আঁধারে কেটে নেয়া হচ্ছে সবুজ বনাঞ্চল এর মূল্যবান গাছ। বিট কর্মকর্তাদের চোখে ফাঁকি দিয়ে কেটে নেয়া গাছগুলো নিয়ে আসা হচ্ছে বিভিন্ন স’মিল ও কাঠের দোকানে। তবে স্থানীয় বাসিন্ধাদের অভিযোগ বনদস্যুদের সাথে বন কর্মকর্তাদের যোগসাজোশ রয়েছে। গত ৩১ জুলাই রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কমফোট হাসপাতালের সামনে থেকে ৮ পিস সেগুন কাঠসহ একটি পিক-আপ (ফেনী ন-১১-০৬-২৪) আটক করে স্থানীয়রা। এই সময় ঐ পিক-আপের চালক কাঠগুলো করেরহাটের জামাল উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির বলে জানান।
করেরহাট রেঞ্জ অফিস সূত্রে জানা গেছে, করেরহাট রেঞ্জের আওতায় ১২ হাজার ৮৯ একর বন ভূমি রয়েছে। এই বনে সেগুন, আকাশমনি, মেহগনি, গামারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে আগষ্ট পর্যন্ত প্রায় ৫শত ঘন ফুট অবৈধ কাঠ উদ্ধার করেছেন বন কর্মকর্তারা। এগুলোর মধ্যে ৩৫৭.৯৫ ঘন ফুট সেগুন, ৯৯ ঘন ফুট জ্বালানি কাঠ ও ৬ গোল্লা আকাশমনি। এছাড়া সরকারি বনের গাছ কাটা সংক্রান্ত মামলা হয়েছে ১০টি। সর্বশেষ চলতি মাসের ১ তারিখে জামাল উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে প্রধান আসামী করে মামলা দায়ের করে মামলা করে বন বিভাগ।

স্থানীয় বাসিন্ধাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জামাল উদ্দিনকে সাথে নিয়েই বনে অভিযান চালায় বন কর্মকর্তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ জামাল উদ্দিন বনকর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সরকারি বন উজাড় করছে। দিন দুপুরে সরকারি মূল্যবান কাঠ কেটে রাতের আঁধারে পাচার করা হয়ে থাকে।
জানা গেছে, করেরহাট ইউনিয়নের কালাপানি, সাইবেনিখিল, নয়টিলা মাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় সরকারি বন রয়েছে। এসকল বনে সেগুন, মেহগনি, আকাশিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান গাছ রয়েছে। কিন্তু বনদস্যুদের একটি সিন্ডিকেট রাতের আঁধারে মূল্যবান এই গাছগুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ নয়টিলা মাজারের সাইবেনিখিল এলাকা থেকে আসার পথেই রয়েছে করেরহাট বন বিভাগের চেক পোষ্ট। বন বিভাগের চেকপোষ্ট চোখ ফাঁকি দিয়ে কিভাবে এই অবৈধ কাঠবাহী ট্রাকগুলো এক স্থান থেকে অন্যস্থানে আসে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেক সময় ট্রাকের ভেতরে অন্য প্রজাতির কাঠ দিয়ে ঢেকে সরকানি বাগানে কাঠ পাচার করা হয়ে থাকে।
এই বিষয়ে জামাল উদ্দিন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নতুন বাড়ি দরজার জন্য কাঠ ক্রয় করেছিলাম। অবৈধ কাঠ ব্যবসা সাথে আমি জড়িত নই। আমার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে এক শ্রেণীর মানুষ আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।

করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, মীরসরাইয়ের অভিবাবক ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি ও ওনার সুযোগ্য পুত্র মাহবুবুর রহমান রুহেলের নিদের্শ পরিবেশ বিপর্যয় হয় এমন কাজ যারা করবে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। তাই বন বিভাগের উচিত আরো বেশি তদারকি বাড়ানো।

এই বিষয়ে করেরহাট বীট-কাম চেক ষ্টেশনের বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নইমুল ইসলাম বলেন, বনদস্যূদের সাথে বন কর্মকর্তাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। করেরহাট চেক ষ্টেশনের মাধ্যমে সড়কে যাতায়াতকারী সকল কাঠের গাড়ি চেক করা হয়ে থাকে এবং অবৈধ কাঠ পেলে আমরা জব্দ করে থাকি।
করেরহাট রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এজেএম হাসানূর রহমান জানান, তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাই এবিষয়ে কিছু জানাতে পারছেন না।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ