পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শাজাহান মিয়া (৪০)। এক নিকট আত্মীয় হাসান আলীর মৃত্যুর সংবাদে ভালুকা থেকে গতকাল ভোর রাতে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বারমারি বাজার এলাকার উদ্দেশ্যে মাইক্রোসবাস যোগে যাত্রা করেছিলেন। সাথে ছিল স্ত্রী, কন্যা, শাশুড়ী ও নিকট আত্মীয়সহ মোট ১৪ জন। যেতে হবে বহুদূর। তাই হয়ত তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি ছুটছিল বেশ দ্রুত গতিতে। কিন্তু কে জানত চালকের চোখে ছিল ঘুম। এই ঘুমই কাল হল। পথে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বাশাটি নামক স্থানে হঠাৎ মাইক্রোসবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে পড়ে ডুবে যায় পাশের পুকুরে। ঘটনাটি ঘটে ভোর ৭টার দিকে।
বিষয়টি টের পেয়েই মাত্র ৬ বছর বয়সী আদরের শিশু কন্যা বুলবুলি আক্তারকে বুকে জড়িয়ে ধরেন পিতা শাজাহান মিয়া। হয়ত ভেবে ছিলেন নিজের জীবন দিয়ে হলেও আদরের কন্যাকে বাঁচাবেন। কিন্তু তা আর হয়নি। অবশেষে পিতার কোল জড়িয়েই মারা গেল শিশু কন্যা বুলবুলি। নিজের কন্যা শিশুকে হারিয়ে তাইতো বাকরুদ্ধ শাজাহান।কোনো সান্ত¡নাই তার আর্তনাদ থামাতে পারছে না এ যেন মৃত্যুর কাছে হেরে গেল অসহায় পিতৃত্বের অকৃত্রিম ভালোবাসা।
শাহজাহানের শিশু কন্যা বুলবুলি (৫) ছাড়াও অন্য নিহতরা হলেন গফরগাঁও উপজেলার আঠারোদানা গ্রামের এলাহি বক্সের স্ত্রী রেজিয়া খাতুন (৭০), একই গ্রামের রতন মিয়ার মেয়ে রিপা আক্তার (২৫), মশাখালি গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের স্ত্রী পারুল বেগম (৪৫) ও মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে শামসুল হক (৫৫), ভালুকা উপজেলার বিরুনিয়া গ্রামের শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী বেগম (৩০), তারাকান্দা উপজেলার দাদরা গ্রামের নবী হোসেন (৩০), ও সামমুন শেখের স্ত্রী মিলন (৬০)।
আহতরা হলেন- গফরগাঁও উপজেলার আঠারোদানা গ্রামের এলাহি বক্সের ছেলে রতন মিয়া (৫৩), মশাখালী গ্রামের মৃত উসমানের ছেলে হাবি (৫৫), ভালুকা উপজেলার কাইচান গ্রামের মিলনের ছেলে মিজান (২৮) ও রাজৈ গ্রামের আবুল কালামের ছেলে সোহরাব (২৮) ও ভালুকার শাজাহান(৪০)।
নিহত সবাই ভালুকা, গফরগাঁও ও তারাকান্দা উপজেলার বাসিন্দা। হতাহতরা মঙ্গলবার ভোরে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় এক স্বজনের মৃত্যুর খবর শুনে ওই স্বজনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনায় বেচে যাওয়া শাহজাহান মিয়া জানান, মাইক্রোবাসটি খুব দ্রুত গতিতে চলছিল। রাস্তায় কোন গাড়ি ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করে গাড়িটি পুকুরে পড়ে যায়। আমাদের মনে হয় চালক ঘুমিয়ে পড়েছিল। তিনি আরো জানান, মাইক্রোবাসটি ১৪ জন যাত্রী
ফুলপুর থানার ওসি ইমারত হোসেন গাজী জানান, ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে যাত্রীবোঝাই একটি মাইক্রোবাস শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার বারোমারি যাবার পথে সকাল পৌণে ৮টার দিকে ময়মনসিংহ-শেরপুর সড়কের ফুলপুর উপজেলার বাসাটি নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফুলপুর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন স্থানীয়দের সহযোগিতায় হতাহতদের উদ্ধার করে। মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে পুকুরে পড়ে ডুবে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই আটজন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে এক শিশু, পাঁচজন নারী ও দুইজন পুরুষ রয়েছে। মাইক্রোবাসটিতে চালকসহ ১৪ জন যাত্রী ছিলো। একই সাথে ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তিনি আরো জানান, মাইক্রোবাস চালক নজরুল ইসলাম পালিয়ে গেছেন এবং গাড়িটি উদ্ধার করে থানায় রাখা হয়েছে বলে জানান ওসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।