রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা আধুনিকায়ন প্রকল্প
নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে
দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা আধুনিকায়ন প্রকল্পটি দফায় দফায় সময় বাড়ানো হয়েছে। ফলে প্রকল্পের ২৮ শতাংশ ব্যয় বাড়িয়েও এখনও শেষ হয়নি। তিনবার মেয়াদ বাড়ানোর পরও প্রকল্পটির সময়সীমা বাড়ানোর জন্য আবারো রেলপথ মন্ত্রনালয় থেকে এ সংক্রান্ত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে ১২২ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির সময়সীমা ছিল ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পটির মেয়াদ ২০১৫ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ সময় মেয়াদের পাশাপাশি প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৫৭ কোটি টাকা। বাড়তি ব্যয়েও বর্ধিত সময়সীমায় কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ আবার বাড়ানো হয়। প্রকল্পটির আওতায় ইতিমধ্যেই প্রায় ১৫৩ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। চলতি বছরের গত এপ্রিল পর্যন্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে আর্থিক অগ্রগতি ৯৭ শতাংশ বলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এর প্রতিবেদনে জানা গেছে। সম্প্রতি প্রকল্পটির কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শন করে আইএমইডি। প্রতিবেদনে যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বনের মাধ্যমে দ্রুত প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ভবনের ছাদে ছিদ্র রয়েছে বলে পরিদর্শনে উঠে এসেছে। দ্রুত এ ছিদ্র মেরামতের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। স্থনীয় রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যেই প্রায় শেষের পথে। সামান্য কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তা ছাড়া নির্মাণাধীন স্থাপনা হস্তান্তরেও কিছু সময় লাগবে। তাই সব কিছু বিবেচনায় প্রকল্পটির মেয়াদ ছয় মাস বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। সূত্র মতে, রেলওয়ের সব ধরনের কোচ, ওয়াগন, ক্রেন এবং বয়লারের গুণগত মানসম্পন্ন মেরামত কাজ যথাসময়ে সম্পাদনের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রকল্পটি প্রনয়ণ করা হয়েছিল। প্রকল্পটির আওতায় মেশিনারি সংগৃহ, ইলেক্ট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল প্ল্যান্ট স্থাপন ছাড়াও বেশ কিছু অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করার কথা রয়েছে। ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে এ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১শ’ ২২ কোটি ২২ লাখ টাকা। আর ২০১২ সালের জুন মাসে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কাজ শেষ না হওয়ায় প্রথমবার ব্যয় না বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। পরের বার ১৫৭ কোটি টাকা ব্যয় ধরে প্রকল্পের প্রথম সংশোধনীতে মেয়াদকাল ধরা হয় ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের পাঁচটি প্যাকেজের মধ্যে চারটির কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। অপর প্যাকেজের ৪৩টি আইটেম প্ল্যান্টস এর মধ্যে ১১টির কাজ চলমান আছে। প্রথম ১১ আইটেম প্ল্যান্টস স্থাপনে বাড়তি সময় লেগেছে। প্রশিক্ষণ প্রদান ছাড়াও আরও কিছু কাজ বাকি আছে। ফলে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হস্তান্তরের কথা থাকলেও এতে কিছু বাড়তি সময় লাগবে।
রেলওয়ে কারখানায় কর্মরত বিভিন্ন শপের কর্মচারিরা জানান, আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় যেসব মেশিনপত্র চীন থেকে আমদানি করা হয়েছে তা অতি নি¤œমানের। ফলে এসবের স্থায়ীত্ব নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। রেলওয়ে শ্রমিক লীগ কারখানা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোখছেদুল মোমিন বলেন, আধুনিকক যন্ত্রপাতির অভাব ও জনবল সঙ্কটে পড়েছে রেলওয়ে কারখানা। অপরদিকে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ না থাকায় গাড়ির খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) নূর আহাম্মদ হোসেন জানান, যৌক্তিক কারণে প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বাড়ানো হয়েছে। কারখানায় জনবল সঙ্কট রয়েছে। সে কারণে বেসরকারি উদ্যোগে কোচ নির্মাণের কাজ চলছে। তিনি বলেন, কারখানায় নতুন নতুন মেশিনপত্র বসানো হচ্ছে। কাজে গতি আনার জন্য প্রায় প্রতিদিনই শপ আমি নিজেই তদারকি করছি। এছাড়া কারখানার নিরাপত্তার জন্য ইতোমধ্যে প্রবেশপথে ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।